The third battle of the Panipath: Panipath is an ancient city. It is mentioned in the Mahabharata. Panipath is a census town in Panipat district in the northwestern Indian state of Haryana. Here three very important battles in the history of the Indian subcontinent, known as the Battle of the panipath, took place. Panipat district is bounded by Karnal, Sonipat, Jind, and Kaithal and Uttar Pradesh states.
পানিপথের তৃতীয় যুদ্ধ (The third battle of the panipath):
পানিপথ একটি প্রাচীন শহর। মহাভারতে এর উল্লেখ আছে। পানিপথ উত্তরপশ্চিম ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের পানিপাত জেলার একটি শহর। এখানে ভারত উপমহাদেশের ইতিহাসে পানিপথের যুদ্ধ হিসেবে খ্যাত তিনটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যুদ্ধ সংঘটিত হয়। পানিপাত জেলার সীমানা চারপাশে কার্নাল, সোনিপাত, জিন্দ, এবং কাইথাল এবং উত্তর প্রদেশ রাজ্য দিয়ে ঘেরা। বর্তমানে এটি একটি শিল্প নগরী এবং তাঁত শিল্পের জন্য বিখ্যাত। এখানে পশম বোনা ও তুলার জিনিং-এর বড় কারখানা আছে। এখানে দিল্লীর লোদী বংশীয় সর্বশেষ সুলতান ইবরাহিম লোদীর কবর আছে। এখানে একটি রেলওয়ে জংশন অবস্থিত। শহরটি পশম, খাদ্যশস্য ও তুলার একটি বাণিজ্যিক কেন্দ্র। সেখানে পানিপাতে সংঘটিত যেসব ঘটনার বিবরণ দেওয়া আছে, ধারণা করা হয় সেগুলি খ্রিস্টপূর্ব ১০ম শতকে ঘটেছিল। পরবর্তীকালে পানিপাত তিনটি ঐতিহাসিক যুদ্ধের ক্ষেত্র হিসেবে উল্লেখযোগ্যতা অর্জন করে। প্রথম যুদ্ধে মুঘল নেতা বাবর ১৫২৬ সালে দিল্লীর আফগান সুলতান ইব্রাহিম লোদির সৈন্যদের পরাজিত করে ভারতে মুঘল সাম্রাজ্যের ভিত্তি স্থাপন করেন। পানিপাতের দ্বিতীয় যুদ্ধে ১৫৫৬ সালে বাবরের পৌত্র আকবর বাবরের উত্তরাধিকারীকে সিংহাসনচ্যুতকারী আফগান রাজবংশের সেনাবাহিনীকে পরাজিত করেন এবং মুঘল সাম্রাজ্য পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেন। তৃতীয় যুদ্ধে ১৭৬১ সালে কান্দাহারের আফগান রাজা আহমদ শাহ মারাঠা ও শিখদের পরাজিত করেন এবং ভারতে মারাঠা-শাসিত রাজ্যের পতন ঘটান।
প্রথম ইঙ্গ – মারাঠা যুদ্ধ : পাণিপথের তৃতীয় যুদ্ধে ( ১৭৬১ খ্রিঃ) আহম্মদ শাহ আবদালীর কাছে মারাঠাদের বিপর্যয় ঘটলেও পেশােয়া মাধব রাও – এর আমলে আবার মারাঠারা শক্তিশালী হয়ে ওঠে । মাধব রাও – এর অকাল মৃত্যুর পর তাঁর নাবালক ভাতা নারায়ণ রাও পেশােয়া হন। কিন্তু তার পিতৃব্য রঘুনাথ রাও ষড়যন্ত্র করে নারায়ণ রাওকে হত্যা করে পেশােয়া – পদ দখল করেন। নানা ফড়নবীশ প্রমুখ মারাঠা নেতারা রঘুনাথ রাও – কে গদিচ্যুত করলে রঘুনাথ রাও ইংরেজদের সাহায্যপ্রার্থী হন। মারাঠাদের এই গৃহ বিবাদের ফলে পশ্চিম ভারতে ইংরেজদের শক্তি বিস্তারের এক অপূর্ব সুযােগ আসে। ইংরেজরা রঘুনাথ রাওকে সঙ্গে নিয়ে পুণার দিকে এগিয়ে যায় । নানা ফড়নবীশও দাক্ষিণাত্যের অন্যান্য রাজাদের নানা ফড়নবীশ সঙ্গে মিলিত হয়ে ইংরেজদের বিরুদ্ধে এগিয়ে যান। এইভাবে প্রথম ইঙ্গ – মারাঠা যুদ্ধের সূত্রপাত হয় ( ১৭৭৫-৮১ খ্রিঃ )। পুণার কাছে ইংরেজ বাহিনী পরাস্ত হয়। এরপর ইংরেজরা রঘুনাথ রাও – এর পক্ষ ত্যাগ করে। ইংরেজ ও মারাঠাদের মধ্যে সম্পাদিত সবাই – এর সন্ধির (১৭৮২ খ্রিঃ ) মাধ্যমে প্রথম ঈঙ্গ মারাঠা যুদ্ধের অবসান হয়।
দ্বিতীয় ইঙ্গ – মারাঠা যুদ্ধ : নানা ফড়নবীশ যতদিন জীবিত ছিলেন, ততদিন মারাঠা রাজ্যের শক্তি ও প্রতিপত্তি বজায় ছিল। ১৮০০ খ্রিস্টাব্দে তার মৃত্যু হলে মারাঠা রাজ্যে আবার বিশৃঙ্খলার উদ্ভব হয়। পেশােয়া দ্বিতীয় বাজীরাও ছিলেন ভীরু ও অপদার্থ। সিন্ধিয়া, হােলকার প্রভৃতি মারাঠা নায়কদের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা শুরু হলে দ্বিতীয় বাজীরাও অসহায় হয়ে পড়েন। ১৮০২ খ্রিস্টাব্দে হােলকার, পেশােয়া দ্বিতীয় বাজীরাওকে পূণা থেকে তাড়িয়ে দিলে, তিনি ইংরেজদের শরণাপন্ন হন এবং রাজ্য পুনরুদ্ধারের আশায় বেসিনের সন্ধি ( ১৮০২ খ্রিঃ ) অনুসারে ইংরেজদের অধীনতামূলক মিত্রতা নীতি মেনে নেন। কিন্তু রাজ্য পুনরুদ্ধার করার পর দ্বিতীয় বাজীরাও অনুতপ্ত হন এবং ইংরেজদের কবল থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য উদগ্রীব হয়ে ওঠেন। এই সময় দুই মারাঠা নায়ক সিন্ধিয়া ও ভোঁসলে ইংরেজদের প্রতিপত্তিতে উদ্বিগ্ন হয়ে কোম্পানির রাজ্য আক্রমণ করেন, ফলে দ্বিতীয় ইঙ্গ – মারাঠা যুদ্ধের সূত্রপাত হয় (১৮০৩ খ্রিঃ )। কিন্তু তারা পরাস্ত হন। এরপর সিন্ধিয়া ইংরেজদের সঙ্গে অধীনতামূলক মিত্রতায় আবদ্ধ হন।
তৃতীয় ইঙ্গ – মারাঠা যুদ্ধ ও মারাঠা শক্তির পতন : দ্বিতীয় ইঙ্গমারাঠা যুদ্ধের পরেও মারাঠা শক্তি ইংরেজদের অস্বস্তির কারণ ছিল। এরপর পেশােয়া দ্বিতীয় বাজীরাও – কে ইংরেজরা এক নতুন অপমানজনক সন্ধি স্বাক্ষর করার জন্য বাধ্য করলে তিনি বিদ্রোহী হন । সেই সুযােগে হােলকার ও ভোঁসলে ইংরেজদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধারণ করেন। ফলে তৃতীয় ইঙ্গ – মারাঠা যুদ্ধের সূত্রপাত হয় ( ১৮১৭-১৯ খ্রিঃ )। কিন্তু কিড়কির যুদ্ধে পরাস্ত হয়ে পেশােয়া আত্মসমর্পণ করেন। হােলকার ও ভোসলেও পৃথক পৃথক ভাবে পরাস্ত হন। এই যুদ্ধের ফলে পেশােয়ার রাজ্য ব্রিটিশ সাম্রাজ্যভুক্ত করা হয় এবং হােলকার ও ভোসলে ইংরেজদের অধীন – মিত্র হিসাবে সন্ধি করতে বাধ্য হন। তৃতীয় ইঙ্গ – মারাঠা যুদ্ধে পরাজিত হােলকার রাজ্য ইংরেজদের সঙ্গে সন্ধির মাধ্যমে নর্মদা নদীর দক্ষিণে খাদেশ এবং সাতপুরা অল কোম্পানিকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয় । এমনকি রাজপুতানার রাজ্যগুলির উপরও হােলকার রাজ্যের দাবি ত্যাগ করা হয়। এর ফলে রাজপুত রাজ্যগুলি ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির অধীনে চলে আসে। মারাঠা শক্তির পতনের গুরুত্ব : মারাঠা শক্তির পতনের ফলে পূর্বভারতের কলকাতা থেকে পশ্চিমভারতের মুম্বই পর্যন্ত বিস্তীর্ণ অঞ্চলে ব্রিটিশ আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হয়।
১৪ই জানুয়ারি ১৭৬১ সালে দিল্লির ৯৭ কিলোমিটার উত্তরে পানিপথ নামক স্থানে মারাঠাদের সাথে দোয়াবের আফগান রোহিলা ও আয়ুব এর সম্রাট সুজা-উদ-দৌল্লার যৌথ সমর্থনে আফগানিস্থানের সম্রাট আহমেদ শাহ আবদালির মধ্যে সংঘটিত হয়।মারাঠা সাম্রাজ্য হল একটি ঐতিহাসিক সাম্রাজ্য, যা খ্রিষ্টীয় সপ্তদশ শতাব্দী হতে ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রথমভাগ পর্যন্ত (১৬৭৪ – ১৮১৮) ভারতবর্ষের প্রায় সমগ্র অংশ জুড়ে বিদ্যমান ছিল। এর প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন ছত্রপতি শিবাজী। মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেবের মৃত্যুর পর মারাঠা সাম্রাজ্য পেশওয়ার অধীনে বহুগুণ বিস্তৃত হয়।বিস্তারের সর্বোচ্চ সময়ে এটি উত্তরে পেশোয়ার থেকে দক্ষিণ ভারতে তামিলনাড়ু পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল।মুঘল সাম্রাজ্য ধ্বংস হলে ভারতে শেষ হিন্দু সাম্রাজ্য হিসেবে মারাঠা সাম্রাজ্যকেই বিবেচনা করা হয়। ১৭৬১ সালে মারাঠারা পানিপথের তৃতীয় যুদ্ধে পরাজিত হয় যা উত্তর দিকে তাদের সাম্রাজ্যের বিস্তার রোধ করে।এর ফলে উত্তরভারত কার্যত কিছুদিন মারাঠা সাম্রাজ্য থেকে বেরিয়ে যায়। যদিও ১৭৭০ সালে উত্তরভারত আবার মারাঠাসাম্রাজ্যের অধীনে আসে। পরবর্তীতে মারাঠা সাম্রাজ্য সম্রাটের অধীনে কেন্দ্রীয় ভাবে শাসিত হওয়ার পরিবর্তে পেশোয়াদের অধীনে বিভক্ত হয়ে যায় ও কনফেডারেসি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।১৮১৮ সালের মধ্যে ইঙ্গ-মারাঠা যুদ্ধে ব্রিটিশদের কাছে মারাঠা সাম্রাজ্য চূড়ান্ত পরাজয় স্বীকার করে।এর ফলেই কার্যত ভারতের উপর ইংরেজদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হয়।
আহমদ শাহ যুবক বয়সে আফসারিদ রাজ্যের সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন এবং অতিশীঘ্রই তিনি ৪ হাজার আব্দালি পশতুন সৈন্যের কমান্ডার হিসেবে দ্বায়িত্ব পালনের সুযোগ পান। ১৭৪৭ সালের জুনে পারস্যের নাদের শাহ আফসার মৃত্যুবরণ করলে, আব্দালি কুরাশান-এর আমীর হন। তার পশতুন উপজাতি ও তাদের জোটদের নিয়ে তিনি পূর্ব দিকের মুঘল ও মারাঠা সাম্রাজ্য, পশ্চিম দিকে পারস্যের আফসারিবাদ সাম্রাজ্য ও উত্তর দিকে বুখারার খানাত পর্যন্ত তার সীমানা নির্ধারণ করেন। কয়েক বছরের মধ্যেই তিনি কুরাশানদের কাছ থেকে পশ্চিম থেকে পূর্বে কাশ্মির ও উত্তর ভারত এবং আমু দারায়ার কাছ থেকে উত্তর থেকে দক্ষিণে আরব সাগর পর্যন্ত আফগানদের কর্তৃত্ব বৃদ্ধি করেন। আহমদ শাহ আব্দালির সমাধিস্তম্ভ আফগানিস্তানের কান্দাহারে অবস্থিত, শহরের কেন্দ্রস্থলের শ্রাইন অফ দ্য ক্লুয়াক নামে একটি মসজিদের পাশে। মনে করা হয় মুসলমানদের শেষ নবী মুহাম্মদ এর একটি আলখাল্লা এখানে রাখা আছে। আফগানিস্তানের লোকেরা দুররানিকে প্রায়ই আহমদ শাহ বাবা বলে উল্লেখ করে থাকন।
আহমদ শাহ দররানি ১৬ আক্টোবর, ১৭৭২ সালে কান্দাহার প্রদেশে মৃত্যুবরণ করেন। তাকে কান্দাহার শহরের কেন্দ্রস্থলে শ্রাইন অফ দ্য ক্লোয়াকে দাফন করা হয়, যেখানে পরবর্তীতে একটি বড় সমাধিস্তম্ভ প্রতিষ্ঠা করা হয়।
দুররানি শিখ গণহত্যায় কুখ্যাত হয়ে আছেন, অমৃতসরে শিখদের পবিত্র স্বর্ণ মন্দিরে হামলা করে তিনি সেঠি ধংস্ব করে দেন। এছাড়াও তিনি ১৭৪৬ ও ১৭৬২ সালে হাজার হাজার শিখকে হত্যা করেছেন
যুদ্ধটি মারাঠা অশ্বারোহী ও গোলন্দাজ বাহিনীর সাথে আবদালি এবং নাজিব-উদ-দৌলাহের নেতৃত্বে আফগান ও রোহিলাদের (যারা উভয় জাতিগত আফগান) অশ্বারোহী ও পর্বতারোহী গোলন্দাজ বাহিনীর মধ্যে ভয়ঙ্কর রুপে সংঘটিত হয়। যুদ্ধটি ১৮ শতকের সবচেয়ে বড় এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা বলে বিবেচিত হয়। এবং মৃত্যুর সংখ্যা ধরলে সম্ভবত দুটি বাহিনী মধ্যে ভয়ঙ্কর যুদ্ধে একটি একক দিনে মৃত্যুর বৃহত্তম সংখ্যা। যুদ্ধটির প্রকৃত স্থান নিয়ে ঐতিহাসিকদের মধ্যে বিতর্ক আছে, কিন্তু অধিকাংশ ঐতিহাসিক এর সংঘটনের স্থান হিসাবে বর্তমানে কালা আম্ব এবং সানাউলির রোডের কাছাকাছি স্থানকেই বিবেচনা করেছেন। যুদ্ধ কয়েক দিনের জন্য স্থায়ী হয় এবং ১২৫,০০০ সৈন্য এতে অংশগ্রহণ করেন। উভয় পক্ষের লাভ এবং ক্ষতির পরে শত্রু মারাঠা সেনাবাহিনীর উপর বেশ কিছু দুর্দান্ত আক্রমন দ্বারা ধ্বংস করার পর আহমদ শাহ দুরানি পরিচালিত আফগান বাহিনী বিজয় লাভ করে।উভয় পক্ষের ক্ষতির পরিমাণ ঐতিহাসিকদের দ্বারা ব্যাপকভাবে বিতর্কিত, তবে এটি বিশ্বাস করা হয় যে ৬০,০০০-৭০,০০০ এর কাছাকাছি সেনা যুদ্ধে নিহত হয়, কিন্তু আহত ও বন্দীদের সংখ্যা বিভিন্ন ঐতিহাসিক দ্বারা বিতর্কিত।
কিছু প্রত্যক্ষদর্শীর বিবরণ অনুযায়ী সুজা-উদ-দৌল্লার দিওয়ান কাশি রাজ বখর-যুদ্ধের পর প্রায় ৮০,০০০ মারাঠা কয়েদীকে ঠাণ্ডা মাথায় হত্যা করেছিলেন। গ্রান্ট ডাফ তার ইতিহাসে এই গণহত্যা থেকে বেঁচে ফেরা এক মারাঠা সৈনিকের একটি সাক্ষাতকার দ্বারা এই সংখ্যাকে সমর্থন করেছেন। সেজওয়ালকর যার “১৭৬১, পানিপথ প্রকরণ গ্রন্থ” যেটি এই যুদ্ধের একক সেরা মাধ্যমিক উৎস হিসেবে গণ্য হয়, তাতে তিনি বলেন, “যুদ্ধের সমযে এবং পরে ১০০,০০০ এরও বেশি মারাঠা (সৈন্য ও অযোদ্ধা) ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল।”
আরও পডুনঃ ভূমি রাজস্ব নীতি চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত