হরপ্পা সভ্যতার বিস্তার ও পতনের কারণ | Spread of Harappan Civilization

Hello Students,


Wellcome to edu.bengaliportal.com চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতির সেরা ঠিকানা,  edu.bengaliportal.com আজ এসেছি Spread of Harappan Civilization. প্রতিবছর বিভিন্ন পরীক্ষার যেমন  CTET | WBTET | WBCS । MPTET | ATET| UPTET | Rajasthan PTET | TNTET | Karnataka TET | RTET | HTET| PSTET। BANK EXAM। ইত্যাদি পরীক্ষার বিভিন্ন প্রস্তুতি পত্র আপনাদের বিনামূল্যে দিয়ে এসেছি। তাই Ajjkal.com আজ আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছে হরপ্পা সভ্যতার বিস্তার ও পতনের কারণ | Spread of Harappan Civilization

Ajjkal

হরপ্পা সভ্যতার বিস্তার ও পতনের কারণ | Spread of Harappan Civilization

হরপ্পা সভ্যতা : ভারত তথা বিশ্ব সভ্যতার ইতিহাসে হরপ্পা সভ্যতার আবিষ্কার এক যুগান্তকারী ঘটনা বলে মনে করা হয়। হরপ্পা সভ্যতার এই আবিষ্কারের সঙ্গে বাঙালি প্রত্নতত্ত্ববিধ রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়, ননীগোপাল মজুমদার ও দয়ারাম সাহানী, কাশীরাম দীক্ষিত, জন মার্শাল, স্যার মার্টিমার হুইলার প্রমুখের নাম জড়িয়ে আছে।

হরপ্পা সভ্যতার বিস্তার : সিন্ধুনদের তীরে প্রথম এই সভ্যতা আবিষ্কৃত হয় বলে আগে মনে করা হত যে শুধুমাত্র সিন্ধু উপত্যকায় এই সভ্যতা গড়ে উঠেছিল। তাই প্রথমে এই সভ্যতাকে সিন্ধুসভ্যতা বলা হলেও পরে সিন্ধু প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কার ও গবেষণার ফলে এই ধারনার পরিবর্তন ঘটেছে। এই সভ্যতার প্রধান দুটি কেন্দ্রের একটি হল হরপ্পা (পাকিস্তানের পাঞ্জাব রাজ্যের মন্টোগোমারী জেলার অন্তর্গত), অপরটি হল মহেঞ্জোদাড়ো (পাকিস্তানের সিন্ধুরাজ্যের লারকানা রাজ্যের অন্তর্গত)। সাম্প্রতিককালের আবিষ্কার এই সভ্যতার পরিধিকে সিন্ধুতট অতিক্রম করে পাকিস্তানের অন্যান্য স্থান (যেমন চানহৃদরো, কালিবঙ্গান, বালুচিস্তান, আমারি, বালাকোট) ভারতের নানান স্থান (যেমন : নর্মদা নদীর উপত্যকা, লোথাল, সৌরাষ্ট্র, কাথিয়াবাড়, রাজস্থান, রোপার, আলমগীরপুর প্রভৃতি) এবং ভারতের বাইরে ইরান পর্যন্ত বিস্তৃত করেছে। আধুনিক মত অনুসারে, হরপ্পা সভ্যতা উত্তরে হিমালয়ের পাদদেশ, পশ্চিমে ইরান ও পাকিস্তানের মধ্যবর্তী সীমান্ত এবং দক্ষিণে খাম্বাত উপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল, অর্থাৎ পূর্ব-পশ্চিমে ভারতীয় সভ্যতার বিবর্তন ১৯ ১,১০০ কিলোমিটারের বেশি এবং উত্তর-দক্ষিণে ১,৬০০ কিলোমিটারেরও বেশি অঞ্চল জুড়ে ছিল এই সভ্যতার বিস্তার।

হরপ্পা অঞ্চলে তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন পাওয়া যাওয়ায় এবং এই সব নিদর্শনের প্রত্নতাত্ত্বিক গুরুত্ব অনেক বেশি হওয়ায় বর্তমানে এই সভ্যতাকে হরপ্পা সভ্যতা বলা হয়। ১৯২২ খ্রিস্টাব্দে হরপ্পা তথা সিন্ধু সভ্যতার আবিষ্কার হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অন্তত পাঁচ হাজার বছরের ভারতীয় সভ্যতা প্রাচীনত্বের দিক থেকে মিশর-ব্যাবিলন-অ্যাসিরিয়ার সমকক্ষতা লাভ করেছে। সর্বশেষ বিচারে, হরপ্পা সভ্যতার কালসীমা হিসেবে খ্রিস্টপূর্ব ৩,০০০ অব্দ থেকে খ্রিস্টপূর্ব ১,৫০০ অব্দকেই মেনে নেওয়া হয়েছে। সুপ্রাচীন এই সভ্যতার আর্থসামাজিক জীবনের মতো নগর জীবনও যে উন্নত ছিল, তা নীচের আলোচনায় স্পষ্ট হয়ে ওঠে।

হরপ্পা সভ্যতার পতনের কারণ :

হরপ্পা সভ্যতার পতনের কারণ : প্রামাণ্য তথ্যের অভাবে সিন্ধু সভ্যতার উত্থানের মতো পতনের কারণ সম্বন্ধেও সঠিক কিছু জানা যায় না। তবে ঐতিহাসিকরা তাদের মতামতের ভিত্তিতে প্রাকৃতিক ও আর্থসামাজিক — বিশেষত বৈদেশিক আক্রমণকেই পতনের সম্ভাব্য কারণ বলে মনে করেছেন, যেমন :

(১) প্রাকৃতিক কারণ : হরপ্পা সভ্যতার পতনের সম্ভাব্য কারণ হিসাবে এম.আর.সাহানি, রাইকেস, ডেইলস প্রমুখ ঐতিহাসিকরা প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রকোপকে চিহ্নিত করেছেন। এই প্রসঙ্গে মতপ্রকাশ কালে রাইকেস বন্যার কথা উল্লেখ করেছেন। বস্তুত সিন্ধু নদীতে ক্রমাগত বন্যা দেখা দেওয়ায় এই সভ্যতা বিলুপ্তি ঘটে।

● প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রসঙ্গে অনেকে অনুমান করেন যে, মহেঞ্জোদাড়োর কাছে এক ভয়াবহ ভূমিকম্প ঘটে এর ফলেই সভ্যতা শেষ পর্যন্ত ধ্বংস হয়।

● সভ্যতার পতনের সবচেয়ে প্রচলিত মতটি হল প্রাকৃতিক পরিবেশের আকস্মিক পরিবর্তন। কার্যত বৃষ্টিপাতের পরিমাণের মাত্রা হ্রাস পাওয়ায় উর্বর কৃষি অঞ্চল মরুভূমিতে পরিণত হয়।

(২) আর্থসামাজিক কারণ : এম ট্যাডি, হুইলার প্রমুখ ঐতিহাসিকরা বিভিন্ন বিদেশি জাতির ফলে এই সভ্যতার বিনাশ ঘটেছিল বলে মনে করেন। এই আক্রমণকারীদের অনেকেই ‘বৈদিক আর্য’ বলে অভিহিত করেছেন।

● অনেক ঐতিহাসিক হরপ্পা সভ্যতার পতনের জন্য নগর কর্তৃপক্ষের অপদার্থতা ও নাগরিকদের চারিত্রিক অবনতিকে দায়ী করেছেন। হরপ্পা সভ্যতার শেষের দিকে পৌরপ্রশাসনের দুর্বলতা এবং নাগরিকদের স্বৈরাচার এই সভ্যতার পতনকে অবশ্যম্ভাবী করে তোলে।

● পরিশেষে বলা যায় সভ্যতার পতনের মূলে বিভিন্ন কারণের সমাবেশ ঘটেছিল। তবে, সিন্ধু লিপির পাঠোদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত সিন্ধু সভ্যতার বিলুপ্তির রহস্য সঠিকভাবে উদ্ঘাটন করা সম্ভব নয়।

Note: পোস্ট টি অবশ্যই আপনার বন্ধুদের সাথে ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ এ শেয়ার করুন।