মৌর্য ও মৌর্যোত্তর যুগের সামাজিক জীবন | Social Life of the Maurya and Post-Maurya Periods

Hello Students,


Wellcome to edu.bengaliportal.com চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতির সেরা ঠিকানা,  edu.bengaliportal.com আজ আমরা নিয়ে এসেছি Social Life of the Maurya and Post-Maurya Periods. প্রতিবছর বিভিন্ন পরীক্ষার যেমন  CTET | WBTET | WBCS । MPTET | ATET| UPTET | Rajasthan PTET | TNTET | Karnataka TET | RTET | HTET| PSTET। BANK EXAM। ইত্যাদি পরীক্ষার বিভিন্ন প্রস্তুতি পত্র আপনাদের বিনামূল্যে দিয়ে এসেছি। তাই Ajjkal.com আজ আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছে মৌর্য ও মৌর্যোত্তর যুগের সামাজিক জীবন | Social Life of the Maurya and Post-Maurya Periods

Ajjkal

মৌর্য ও মৌর্যোত্তর যুগের সামাজিক জীবন | Social Life of the Maurya and Post-Maurya Periods

মৌর্য শাসনকালে ভারতবর্ষে শান্তি ও রাষ্ট্রীয় ঐক্য বিরাজিত থাকায় একদিকে যেমন ভারতবর্ষের সামাজিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে ক্রমোন্নতি ঘটে, অন্যদিকে ভারতীয় সমাজব্যবস্থায় বেশ কিছু পরিবর্তন দেখা যায়।

[১] সামাজিক পরিবর্তন : মৌর্যযুগের সমাজে বর্ণাশ্রম প্রথা ও চতুরাশ্রম প্রথা সুষ্পষ্ট আকার ধারণ করে। এই যুগে লিচ্ছবি, মল্লপ্রভৃতি অনার্য জাতিগুলি হিন্দুধর্ম গ্রহণ করে হিন্দু সমাজে ক্ষত্রিয়ের মর্যাদা লাভ করে। মনুসংহিতায় এদের ‘ব্রাত্য ক্ষত্রিয়’ বলা হয়েছে। আর্য সমাজে এইসব প্রাচীন জাতি ও উপজাতির প্রবেশের ফলে ভারতের সমাজ জীবনে গুরুতর পরিবর্তনের সূচনা হয়।

বৃত্তি অনুযায়ী মেগাস্থিনিস ৭ -টি জাতির উল্লেখ করেছেন। মৌর্য যুগের সমাজে বৃত্তিমূলক কঠোরতা থাকা স্বত্ত্বেও জাতিভেদ প্রথা পূর্ববর্তী যুগের মতো ততটা কঠোর ছিল না। কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্রে কৃষি, পশুপালন ও বাণিজ্য বৈশ্য ও শূদ্র সমাজের সাধারণ বৃত্তি বলে বর্ণনা করা হয়েছে। মেগাস্থিনিস বলেছেন যে, সে যুগের সমাজে বৈদ্য, দার্শনিক ও ব্রাহ্মণরা বিশেষ সম্মানের অধিকারী ছিলেন। মনে হয় যে, মৌর্যযুগের সমাজে জাতি বা বর্ণভেদ প্রথা সামান্য শিথিল হয়ে আসে। এছাড়া মৌর্যযুগে দাস প্রথা প্রচলিত ছিল, তবে দাসদের কোনো বর্ণ ছিল না।

[২] সামাজিক সংঘাতের সূচনা : মৌর্যযুগে শূদ্র ও বৈশ্যদের মধ্যে বৃত্তিমূলক পার্থক্যের অবসান ঘটতে থাকে এবং বৈশ্যরা এই যুগে ব্যাবসাবাণিজ্যের ফলে ধনশালী হয়ে উঠলেও তাঁদের কোনো সামাজিক মর্যাদা ছিল না। সামাজিক মর্যাদার প্রশ্নেই ব্রাক্ষ্মণ ও ক্ষত্রিয়দের সঙ্গে বৈশ্যদের সংঘাত ঘটতে থাকে এবং সামাজিক মর্যাদা লাভের উদ্দেশ্যে বৈশ্য সমাজ বৌদ্ধ ও জৈনধর্মের প্রতি আকৃষ্ট হয়। বিভিন্ন বর্ণের মিশ্রণের ফলে মৌর্যযুগেই কিছু উপ – বর্ণের সৃষ্টি হয়েছিল।

[৩] বিদেশি জাতিবর্গের ভারতীয়করণ : মৌর্যোত্তর যুগে বহ্ণিক, গ্রীক, শক, কুষাণ, হূণপ্রভৃতি বিদেশি জাতি ও উপজাতিরা ভারতে প্রবেশ করে এখানে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করে। কালক্রমে এইসব বিদেশি জাতি ভারতীয় সমাজ ও সাংস্কৃতিক জীবনের সঙ্গে ধীরে ধীরে মিশে যায়। ভারতে আসা বিদেশিদের মধ্যে, মধ্য এশিয়ার শক, হূণ, কুষাণ প্রভৃতি জাতি প্রধানত যাযাবর শ্রেণির হওয়ায় তাদের নিজস্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য বলেও কিছু ছিল না। তাই তাদের পক্ষে ভারতীয় সমাজের মূল স্রোতে মিশে যাওয়া অনেকটা সহজ হয়েছিল। বৌদ্ধধর্মের উদারতা ও বর্ণবৈষম্য থেকে আংশিকভাবে মুক্ত ভাগবত-ধর্ম এই ব্যাপারে সহায়ক হয়েছিল। পশ্চিমভারতের শক ও গ্রীক রাজাদের অনেকেই বিদেশি ধর্ম ও ভাষা ত্যাগ করে ভাগবত ধর্ম ও সংস্কৃতভাষা গ্রহণ করেন। প্রথম দিকে তাঁদের নাম ছিল ঘমোটিয়া, নহপান, চট্টন — কিন্তু পরবর্তীকালে তাঁরা বিশ্বসেন, রুদ্রসিংহ, বিজয় সিংহ প্রভৃতি ভারতীয় নাম গ্রহণ করে ভারতীয় সমাজে মিশে যান।

[৪] সমাজে নারীর অবস্থান : পরবর্তী বৈদিক যুগের পর থেকেই সমাজে নারীর মর্যাদা কমতে থাকার যে প্রবণতা দেখা দেয় মৌর্যযুগেও তার কোনো পরিবর্তন ঘটে নি। সেই যুগে নারীর মর্যাদা স্বীকার করা হলেও নারীদের বিশেষ কোনো স্বাধীনতা ছিল না এবং তাদের নানান বিধিনিষেধের বেড়াজালে বন্দি থাকতে হত। এই যুগে একদিকে নারীদের ওপর অবরোধ প্রথা, বহুবিবাহ প্রথা প্রভৃতি কুপ্রথা চালু হয়, অন্যদিকে বিধবা-বিবাহ চরম নিন্দনীয় হয় এবং সতীদাহ প্রথা একরকম বাধ্যতামূলকহয়ে পড়ে। ভারতে বিদেশি আক্রমণের যুগে নারীদের স্বাধীনতা আরও সংকুচিত হয়ে পড়ে। অবশ্য এই যুগে বৌদ্ধ ও জৈন ভিক্ষুনীদের চলাফেরায় অবাধ স্বাধীনতা ছিল এবং রাজার দেহরক্ষী ও গুপ্তচরের কাজে নারীদের নিয়োগ করা হত। এছাড়া এই যুগে নাবালক পুত্রদের অভিভাবিকা হিসেবে রাজমহিষীদের রাজ্যশাসনের অনেক দৃষ্টান্ত পাওয়া যায়।

Note: পোস্ট টি অবশ্যই আপনার বন্ধুদের সাথে ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ এ শেয়ার করুন।