ছাত্রজীবনে খেলাধুলার ভূমিকা | Role of Sports in Student Life Essay Writing in Bengali
[প্রবন্ধ-সংকেত:: ভূমিকা | ছাত্রজীবন ভবিষ্যৎ জীবনের ভিত্তি | শরীর গঠনে ভূমিকা | বিকাশের সহায়ক | নিয়মানুবর্তিতা, শৃঙ্খলাবোধ, দায়িত্ববোদের জন্ম দেয় | উপসংহার।]
■ ভূমিকা:- জীবন সংগ্রামে জয়ী হতে গেলে চাই সুস্থ শরীর সুস্থ মন। মানুষ জীবন সংগ্রামের সৈনিক। এই সৈনিককে ছাত্রাবস্থা থেকে তৈরী থাকতে হবে সংগ্রামে লড়ার জন্য। তার জন্য সবচেয়ে আগে প্রয়োজন শরীরচর্চা ও খেলাধূলা। দেহ গঠনের উপযুক্ত উপায় হিসাবে খেলাধূলার ভূমিকাকে অস্বীকার করার কোন প্রশ্নই ওঠে না।
■ জীবনের ভিত্তি:- কিশোর বয়সই শরীর গঠনের উপযুক্ত সময়। ভবিষ্যত জীবনে সুস্থ সবল সুঠাম দেহ গড়ে তোলার জন্য ছাত্রীজীবনেই নিয়মিত যত্ন, ব্যায়াম চর্চা আর অনুশীলন মাধ্যমে শরীরে,র সুস্থতা আনা দরকার। বলা বাহুল্য ছাত্রজীবন ভবিষ্যত জীবনের ভিত্তি। এই সময় নিয়মিত যোগব্যায়াম ও খেলাধূলা প্রয়োজন। এর ফলে শরীরের পেশী মজবুত হয়, হাড় মজবুত হয় এবং দেহে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক থাকে।
■ শরীর গঠনে ভূমিকা:- মানবসম্পদ দেশের প্রধান সম্পদ। মানবসম্পদের ভিত্তি গঠন হয় ছাত্রাবস্থায় অধ্যয়ন চলাকালীন। সুস্থ, সবল, বলিষ্ঠ দেহের অধিকারী মানুষ সমাজ ও রাষ্ট্রের গৌরব। সমাজ ও রাষ্ট্রের উন্নতি ও অগ্রগতির বিশেষ সহায়ক। খেলাধূলার মাধ্যমে দেহ সুগঠিত হয়, মাংসপেশী লৌহ দৃঢ় হয়। স্নায়ুমণ্ডলী সতেজ ও সক্রিয় হয়, দেহ নীরোগ থাকে। সুপ্রাচীন গ্রিস, রোম, স্পার্টা প্রভৃতি রাজ্যে জাতীয় জীবনে ক্রীড়াকে অপরিসীম গুরুত্ব দেওয়া হত। কারণ বলশালী ও নির্ভীক যুবক দেশরক্ষার কাজে অপরিহার্য গণ্য হত। শুধু দেশ রক্ষার কাজে নয়, জাতীয় জীবনকে সমৃদ্ধ ও সমুন্নত করতে হলে সুস্থ ও স্বাস্থ্যবান নাগরিকের বিশেষ প্রয়োজন।
■ শারীরিক ও মানসিক বিকাশের সহায়ক:- খেলাধূলা শুধু শরীরচর্চার মাধ্যম নয়, আনন্দের মাধ্যম, মানসিক বিকাশের সহায়ক। খেলাধূলার মাধ্যমে কর্মক্ষমতার সঙ্গে চটপটে ভাব আয়ত্ত হয়। খেলার মাধ্যমে শরীর ও মন সতেজ হয়, শারীরিক ও মানসিক বিকাশ হয়। খেলাধূলার মাধ্যমে ছাত্রেরা সামাজিক হয়ে ওঠে, এই সামাজিক চেতনা এবং সঙ্ঘশক্তির কারণেই জাতীয় জীবনে শক্তির সঞ্চার ঘটে।
■ নিয়মানুবর্তিতা, শৃঙ্খলাবোধ, দায়িত্ববোধের জন্ম দেয়:- খেলায় অংশগ্রহণ এবং খেলা দেখা বা বিবরণী শোনা এসবই ছাত্রদের চিত্তবিনোদনের কার্যকর উপায় হলেও খেলার মাঠে, ক্রীড়া অনুশীলন বা প্রতিযোগীতার সময় কতকগুলি নিয়ম নীতির ও সময়সূচী মেনে চলতে হয়। ফলে শৃঙ্খলা ও চরিত্র গঠনে এগুলির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে। ছাত্রদের মধ্যে একটা দায়িত্ববোধেরও জন্ম নেয়।
■ উপসংহার:- জীবন গঠনে খেলাধূলার অপরিহার্য তা এখন সবাই বুঝতে পেরেছে। পৃথিবীর নানাদেশে খেলাধূলার জন্য প্রচুর অর্থ ও শ্রম ব্যয় হয়। শিক্ষার পরিপূর্ণতা লাভের ক্ষেত্রে খেলাধুলার ভূমিকা পৃথিবীর সর্বত্র এখন স্বীকৃত। অধুনা খেলাধূলাকে আবার আন্তর্জাতিক ভ্রাতৃত্ববোধের উন্মেষ ঘটানোর কাজে লাগানো হচ্ছে। বিভিন্ন দেশের মধ্যে ক্রীড়া প্রতিযোগীতায় সেই সব দেশের সঙ্গে একটা সখ্য একটা সখ্য ও সহযোগীতার বাতাবরণ সৃষ্টি হচ্ছে। এতে আন্তর্জাতিক বোঝাপড়ার উন্নতি সাধিত হয়ে বিশ্বশান্তির পথ উন্মুক্ত হচ্ছে।