Naval rebellion : On February 18, 1948, MS in the Indian Navy in Bombay. The massive revolt started by 1500 sailors under the leadership of Khan is known in the history of India as naval rebellion. Gradually the revolt spread throughout the country. This revolt has a significant place in the history of India’s independence movement. The Indian people, along with the sailors, took equal part in the revolt. So Naval rebellion is a greatest rebellion.
নৌবিদ্রোহের কারণ ও গুরুত্ব (The causes and importance of naval rebellion) :
১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দের ১৮ ই ফেব্রুয়ারি বােম্বাইয়ের ভারতীয় নৌবাহিনীতে এম এস . খানের নেতৃত্বে ১৫০০ জন নাবিক যে ব্যাপক বিদ্রোহের সূচনা করেছিল ভারতের ইতিহাসে তা নৌবিদ্রোহ নামে পরিচিত । ক্রমে এই বিদ্রোহ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে । ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাসে এই বিদ্রোহ এক উল্লেখযােগ্য স্থান অধিকার করে আছে । নাবিকদের সঙ্গে ভারতীয় জনগণও এই বিদ্রোহে সমানভাবে অংশ নিয়েছিল ।
নৌবিদ্রোহের কারণ (Cause of Naval rebellion) :
এই বিদ্রোহের পিছনে যে কারণগুলি ছিল তার মধ্যে উল্লেখযােগ্য ছিল-
( ১ ) ব্রিটিশ সরকারের নীতি ও ব্রিটিশ সরকার বৈষম্যমূলক নীতি প্রয়ােগ করে ভারতীয় নৌ – সেনাদের বিভিন্নভাবে বঞ্চিত করত ।
( ক ) ভারতীয় নাবিকরা ইংরেজ নাবিকদের তুলনায় অনেক কম বেতন পেত ।
( খ ) ইংরেজ শ্বেতাঙ্গ নাবিক ও নৌ – অফিসাররা কৃয়াঙ্গ নাবিক ও নৌ – অফিসারদের ঘৃণার চোখে দেখত এবং তাদের সঙ্গে অপমানজনক ব্যবহার করত ।
( গ ) ভারতীয় নৌবাহিনীর সেনাদের একই কাজে নিযুক্ত ইংরেজ সেনাদের থেকে নিকৃষ্টমানের খাদ্য দেওয়া হত ।
( ঘ ) ভারতীয় নাবিকদের দক্ষতা ও যােগ্যতা থাকা সত্ত্বেও তাদের উচ্চপদে নিয়ােগ করা হত না ।
( ঙ ) এছাড়া ভারতীয় নাবিকদের যুদ্ধক্ষেত্রে অনুন্নত অস্ত্র নিয়ে যুদ্ধ করতে হত । ফলে তাদের প্রাণহানির আশঙ্কা বহুগুণ বেশি ছিল ।
( চ ) ভারতীয় নাবিকদের যে সকল স্থানে ঝুঁকি থাকত বেশি থাকত সেখানে পাঠানাে হত।
( ২ ) দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রভাব ঃ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ভারতীয় নৌবাহিনীর সেনাদের দক্ষিণ – পূর্ব ও দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে যুদ্ধের জন্য পাঠানাে হয়েছিল । এই সময় তারা বিভিন্ন দেশের জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের দ্বারা ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হয়েছিল । ফলে তাদের মনে বিদ্রোহের মানসিকতা জন্মায় । বিশ্বযুদ্ধ শেষে দেশে ফিরে তারাও স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষায় উগ্রীব হয়ে ওঠে।
( ৩ ) আজাদ হিন্দ বাহিনীর প্রভাব ঃ আজাদ হিন্দ বাহিনীর বীরত্বপূর্ণ লড়াই ও আত্মত্যাগের কাহিনী ভারতবাসীর সঙ্গে সঙ্গে নৌবাহিনীকেও উদ্বুদ্ধ করেছিল । এরপর আজাদ হিন্দ বাহিনীর সেনাদের বিচার শুরু হয় এবং ক্যাপ্টেন রশিদ আলির সাত বছরের কারাদণ্ড হলে সারা দেশ উত্তাল হয়ে ওঠে । ভারতীয় নাবিকরাও আজাদ হিন্দ বাহিনীর সেনাদের মুক্তির দাবিতে সােচ্চার হয়ে ওঠে।
( ৪ ) এছাড়া ইন্দোনেশিয়ার স্বাধীনতার সংগ্রাম দমনে যে সকল ভারতীয় নৌসেনা পাঠানাে হয়েছিল । তাদের দেশে ফিরিয়ে আনার দাবিও তারা জানায় । তারা ইন্দোনেশিয়ার স্বাধীনতা সংগ্রামীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে অস্বীকার করে ।
নৌবিদ্রোহের গুরুত্ব (Important of Naval rebellion) :
ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে নৌবিদ্রোহের গুরুত্ব অপরিসীম ।
( ১ ) ব্রিটিশ সরকার বুঝতে পারে শুধু সাধারণ ভারতীয়রাই নয় , সৈন্যরাও ইংরেজদের বিরােধী হয়ে উঠেছেন । এর ফলে ব্রিটিশ সরকার উপলব্ধি করে যে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ওপর আর নির্ভর করে যাবে না ।
( ২ ) এই বিদ্রোহ হিন্দু – মুসলিম ঐক্যের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত রেখেছিল।
( ৩ ) ১৮৫৭ – এর মহাবিদ্রোহের পর আবার ব্রিটিশের বেতনভুক ভারতীয় সেনারা ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিল।
( ৪ ) স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষায় জনগণ ও সেনার রক্ত একই সঙ্গে ঝরে পড়ল।
( ৫ ) ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ক্লিমেন্ট এটলি পার্লামেন্টের এক জরুরি বৈঠকে স্বীকার করেন যে ভারতে ব্রিটিশ শাসন টিকিয়ে রাখা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। বাধ্য হয়ে তিনি ক্ষমতা হস্তান্তরের জন্য ভারতে এক মন্ত্রীমিশন ’ পাঠান ।
মূল্যায়নঃ ঐতিহাসিক রজনীপাম দত্ত – এর মতে , নৌবিদ্রোহ ভারতের ইতিহাসের এক নবযুগের সূচনা করেছিল । ড . সুমিত সরকার এই বিদ্রোহকে বীরােচিত সংগ্রাম ’ বলে অভিহিত করেছেন । অধ্যাপক গৌতম চট্টোপাধ্যায় এই বিদ্রোহকে ‘ Almost Revolution ‘ বলে বর্ণনা করেছেন । এতদসত্ত্বেও নৌবিদ্রোহের গুরুত্ব অস্বীকার করার কোনাে উপায় নেই ।
আরও পড়ুনঃ গান্ধীজির ডান্ডি অভিযান