ভারতীয় সংবিধানের মূল বৈশিষ্ট্য | Main Features of Indian Constitution




Hello Students,


Wellcome to edu.bengaliportal.com চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতির সেরা ঠিকানা,  edu.bengaliportal.com আজ আমরা নিয়ে এসেছি Main Features of Indian Constitution. প্রতিবছর বিভিন্ন পরীক্ষার যেমন  CTET | WBTET | WBCS । MPTET | ATET| UPTET | Rajasthan PTET | TNTET | Karnataka TET | RTET | HTET| PSTET। BANK EXAM। ইত্যাদি পরীক্ষার বিভিন্ন প্রস্তুতি পত্র আপনাদের বিনামূল্যে দিয়ে এসেছি। তাই Ajjkal.com আজ আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছে ভারতীয় সংবিধানের মূল বৈশিষ্ট্য | Main Features of Indian Constitution

Ajjkal



ভারতীয় সংবিধানের মূল বৈশিষ্ট্য | Main Features of Indian Constitution

[১] সংবিধানের বিশালতা : ভারতের সংবিধান হল বিশ্বের সবচেয়ে বড়ো, লিখিত ও জটিল সংবিধান। এই সংবিধানে মোট ৪০৫ টি ধারা, বহু উপধারা এবং ১০ টি তালিকা আছে। এছাড়াও কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্ক, মৌলিক অধিকার, রাষ্ট্রপরিচালনার নির্দেশমূলক নীতি প্রভৃতি নানান বিষয় যুক্ত করার ফলে ভারতীয় সংবিধানের কলেবর বৃদ্ধি পেয়েছে।



[২] যুক্তরাষ্টীয় কাঠামো : ভারতীয় সংবিধান একটি যুক্তরাষ্ট্রীয় (Federal) সংবিধান। ২৮ টি অঙ্গরাজ্য এবং ৭ টি কেন্দ্র শাসিত অঞ্চল নিয়ে ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্র গঠিত হয়েছে। শাসনতন্ত্রের বৈশিষ্ট্য অনুসারে কেন্দ্রীয় সরকার ও রাজ্য সরকারগুলির মধ্যে ক্ষমতা বন্টিত হয়েছে। এই ক্ষমতা বন্টনের ক্ষেত্রে শাসন সংক্রান্ত বিষয়গুলিকে কেন্দ্রীয় (Union), রাজ্য ও যুগ্ম তালিকা — এই তিনটি শ্রেণিতে ভাগ করা হয়েছে।




[৩] এককেন্দ্রীয় শাসনব্যবস্থার প্রবণতা : ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্রকে পূর্ণ-যুক্তরাষ্ট্র বলা যায় না। ভারতীয় সংবিধানে এককেন্দ্রীয় শাসনব্যবস্থার প্রবণতা দেখা যায়, কারণ : (১) ভারতের সংবিধান একটি পূর্ণাঙ্গ লিখিত সংবিধান। কেন্দ্রীয় সরকার ছাড়াও রাজ্য সরকারগুলিও একই সংবিধান দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়েছে। রাজ্য সরকারগুলির জন্য ভারতে কোনও আলাদা সংবিধান নেই। (২) ভারতের যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতা বণ্টন নীতি যেভাবে প্রযুক্ত হয়েছে, তাতে কেন্দ্রীয় সরকারের একাধিপত্য সুপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে। (৩) দেশে জরুরি অবস্থার উদ্ভব হলে ভারতীয় সংসদ বা কেন্দ্রীয় আইন পরিষদ যে কোনো রাজ্য তালিকাভুক্ত বিষয় সম্বন্ধে আইন প্রণয়ন করতে পারে। (৪) সারা ভারতের জন্য এক নাগরিকতা, একটিমাত্র আপীল আদালত ও একটিমাত্র নির্বাচন সংস্থা গঠনের দ্বারা ভারতীয় সংবিধানে এককেন্দ্রীয় শাসনব্যবস্থার প্রবণতা দেখা যায়। সুতরাং ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্র প্রকৃতপক্ষে এককেন্দ্রীয় শাসনব্যবস্থার আদর্শে গঠিত হয়েছে।

[৪] নমনীয়তা ও কঠোরতার সমন্বয় : ভারতীয় সংবিধানে নমনীয়তা ও কঠোরতার (Partly rigid and Party flexible) এক অপূর্ব সমন্বয় দেখা যায়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের মতো এই সংবিধান অতিরিক্ত কঠোর বা অনমনীয় (rigid) নয়, অর্থাৎ এই সংবিধানে কোনো কিছুই চূড়ান্ত নয়। কারণ এতে সংশোধনমূলক প্রস্তাব আনবার সুযোগ রয়েছে। আবার এই সংবিধান আংশিকভাবে কঠোর বা অনমনীয় এই কারণে যে, সাধারণ আইন প্রণয়নের রীতি অনুসারে শাসনতন্ত্রের পরিবর্তন করা যায় না। ভারতীয় সংবিধানকে সংশোধন করতে হলে সংশোধনী প্রস্তাবটি পার্লামেন্টের দুই কক্ষের প্রতিটিরই অন্তত দুই-তৃতীয়াংশের ভোটাধিক্যে অনুমোদিত হওয়া চাই।

[৫] সংসদীয় শাসনব্যবস্থা : ব্রিটেনের শাসন – প্রণালীর অনুকরণে ভারতীয় সংবিধানে সংসদীয় বা পার্লামেন্টারী বা মন্ত্রী-পরিষদীয় শাসনব্যবস্থার প্রবর্তন করা হয়েছে। রাষ্ট্রপতি ভারতের প্রধান শাসক হলেও প্রকৃতপক্ষে রাষ্ট্রের সব ক্ষমতা প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি মন্ত্রীপরিষদ কর্তৃক পরিচালিত হয়। অঙ্গ রাজ্যগুলিতেও একই প্রথা প্রচলিত।

[৬] বিচার বিভাগের স্বাধীনতা : সংবিধান অনুসারে ভারতের বিচার বিভাগকে সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ ও স্বাধীনভাবে গড়ে তোলা হয়েছে। সংবিধানে বিচারকদের নিয়োগ ও কার্যকাল সম্পর্কে বিচার বিভাগকে বিশেষ মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। ভারতীয় বিচার ব্যবস্থার স্তরে সর্বোচ্চ আছে সুপ্রীম কোর্ট। কেন্দ্র-রাজ্য বিরোধ, মৌলিক অধিকার এবং সংবিধানের ব্যাখ্যা সংক্রান্ত বিরোধ ও প্রশ্ন মীমাংসার দায়িত্ব সুপ্রীম কোর্টের ওপর ন্যস্ত আছে।




[৭] ধর্মনিরপেক্ষতা : সংবিধানে ভারতকে ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র (Secular State) হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে, অর্থাৎ কোনো বিশেষ ধর্মকে ভারতীয় রাষ্ট্রীয় ধর্ম (State Religion) হিসাবে স্বীকার করা হয় নি । ভারতের সংবিধানে জাতিধর্ম ও বর্ণনির্বিশেষে সব নাগরিকের ধর্মের ক্ষেত্রে সমান অধিকার স্বীকার করা রয়েছে । ভারতে ধর্মের ভিত্তিতে কোনো নাগরিকের প্রতি পক্ষপাতিত্ব করা হয় না।

[৮] রাষ্ট্রপরিচালনার নির্দেশাত্মক নীতি : আয়ারল্যান্ডের সংবিধানের অনুকরণে ভারতীয় সংবিধানে কতকগুলি নির্দেশাত্মক নীতি উল্লিখিত আছে। দেশের শাসনসংক্রান্ত ব্যাপারে আইন বিভাগ ও শাসন বিভাগকে পরিচালনা করাই হল এই নীতিগুলির উদ্দেশ্য। সংবিধানে বলা হয়েছে যে, এই নীতিগুলির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই শাসন কর্তৃপক্ষ তাঁদের ক্ষমতা পরিচালনা করবেন l। সংবিধানের নির্দেশাত্মক নীতি অনুযায়ী ভারতীয় নাগরিকদের জন্য সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ন্যায়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

[৯] মৌলিক অধিকার : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের অনুকরণে ভারতীয় সংবিধানে নাগরিকদের কতকগুলি মৌলিক অধিকার স্বীকার করা হয়েছে। এই অধিকারগুলি হল : সাম্যের অধিকার, স্বাধীনতার অধিকার, শোষণের বিরুদ্ধে অধিকার, ধর্মীয় স্বাধীনতার অধিকার, শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ে অধিকার এবং শাসনতান্ত্রিক প্রতিবিধানের অধিকার। সরকারের কোনও আইন নাগরিকদের মৌলিক অধিকারগুলি ক্ষুণ্ন করতে পারে না। এই বৈশিষ্ট্য খুব কম সংবিধানেই লক্ষ করা যায়।

[১০] এক-নাগরিকতা : ভারতীয় সংবিধানের আর একটি বৈশিষ্ট্য হল ভারতীয়দের এক নাগরিকতার (Single Citizenship) বিধান। সংবিধান অনুযায়ী জাতিধর্মনির্বিশেষে সব ভারতীয়কে একমাত্র ভারতীয় নাগরিকতার মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। ভারতীয়রা সকলেই ভারতের নাগরিক। ভারতীয় সংবিধান অনুসারে এই দেশের কোনো রাজ্যের নাগরিকদের পৃথক নাগরিকত্ব থাকতে পারে না।




Note: পোস্ট টি অবশ্যই আপনার বন্ধুদের সাথে ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ এ শেয়ার করুন।