Mahatma Gandhi : Many people have dedicated their lives to India’s independence movement, many leaders have made the national movement a success due to their extraordinary leadership. But the most spontaneous leader of all was Mahindas Karamchand Gandhi. He is the Mahatma of Rabindranath, he is the father of the nation according to Subhash. He jumped into the Indian independence movement with a non-violent weapon called “A fresh air like a current”.
ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে মহাত্মা গান্ধীর অবদান (Mahatma Gandhi’s contribution to India’s independence movement) :
ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে বহু ব্যক্তি তাদের জীবন উৎসর্গ করেছেন, বহু নেতা তাদের অসাধারণ নেতৃত্বগুণে জাতীয় আন্দোলনকে সাফল্যমণ্ডিত করেছেন। তবে সকলের মধ্যে যিনি সর্বাপেক্ষা স্বতস্ফূর্তভাবে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তিনি হলেন মােহনদাস করমচাঁদ গান্ধি। রবীন্দ্রনাথের তিনি মহাত্মা, সুভাষের বর্ণনায় তিনি জাতির জনক। অহিংসা নামক এক অমােঘ অস্ত্র তিনি নিয়ে ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে ঝাপিয়ে পড়েন যা “A fresh air like a current “.
মহাত্মা গান্ধীর রাজনৈতিক জীবনের সূচনা (The beginning of the political life of Mahatma Gandhi) :
১৮৬৮ খ্রিস্টাব্দের ২ রা অক্টোবর গান্ধিজি জন্মগ্রহণ করেন। ব্যারিস্টারি পাশ করে তিনি দক্ষিণ আফ্রিকায় তার কর্মজীবন শুরু করেন। সেখানে তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার শ্বেতাঙ্গ সরকারের বর্ণবৈষম্য নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করেন এবং শেষ পর্যন্ত জয়যুক্ত হন।
মহাত্মা গান্ধীর সত্যাগ্রহ আন্দোলন (Mahatma Gandhi’s Satyagraha movement) :
দক্ষিণ আফ্রিকায় তিনি যে শান্তিপূর্ণ প্রতিরােধ আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন তা সত্যাগ্রহ আন্দোলন নামে পরিচিত। বিখ্যাত রুশ লেখক লিও টলস্টয় – এর ‘Kingdom of God’ এবং ইংরেজ লেখক রাসকিন – এর ‘Unto the Last’ গ্রন্থ দুটি গান্ধিজিকে এই পথের সন্ধান দিয়েছিল।
মহাত্মা গান্ধীর স্বদেশে প্রত্যাবর্তন (Mahatma Gandhi’s return to his homeland) :
১৯১৫ খ্রিস্টাব্দে গান্ধিজি ভারতে ফিরে আসেন এবং ভারতে এসে তিনি কিছু আঞ্চলিক আন্দোলন পরিচালনা করেন। এর মধ্যে উল্লেখযােগ্য হল-
(১) ১৯১৭ খ্রিস্টাব্দে বিহারের চম্পারণে নীলচাষীদের হয়ে আন্দোলন করে জয়ী হন।
(২) ১৯১৮ খ্রিস্টাব্দে আমেদাবাদে মিল শ্রমিকদের হয়ে আন্দোলন করে শ্রমিকদের দাবি পূরণে সক্ষম হন।
(৩) ১৯১৮ খ্রিস্টাব্দে কৈরা জেলার কৃষকদের হয়ে সত্যাগ্রহ করলে সরকার কৃষকদের সঙ্গে সন্তোষজনক মীমাংসা করে নেয়।
মহাত্মা গান্ধীর সর্বভারতীয় রাজনীতিতে প্রবেশ (Mahatma Gandhi’s entry into all-India politics) :
১৯১৯ খ্রিস্টাব্দে গান্ধিজি সর্বভারতীয় রাজনীতির বৃহত্তর আঙিনায় প্রবেশ করেন। সেই থেকে ভারতের স্বাধীনতা লাভের সময় পর্যন্ত তিনি ছিলেন ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন তথা রাজনীতির শেষ কথা। এই কারণে এই সময়কে ‘গান্ধিযুগ’ বলা হয়।
(১) রাওলাট আইন-বিরােধী আন্দোলনঃ
তিনি এ সময়ে কংগ্রেসে যােগ দেন এবং রাওলাট আইনের বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন শুরু করেন। এরপর তিনি জালিয়ানওয়ালাবাগের হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে জনমত সংগঠিত করেন।
(২) খিলাফৎ আন্দোলনঃ
খিলাফৎ আন্দোলনকে কেন্দ্র করে মুসলিমদের ব্রিটিশবিরােধী ক্ষোভকে তিনি হিন্দু – মুসলিম ঐক্যের উদ্দেশ্যে ব্যবহার করেন। এ সময়ে গান্ধিজি (Mahatma Gandhi) ব্রিটিশদের দেওয়া ‘কাইজার – ই – হিন্দ’ উপাধি ত্যাগ করেন। তিনি খিলাফৎ আন্দোলনকে অসহযােগ আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত করেন।
(৩) অসহযােগ আন্দোলনঃ
রাওলাট আইন ও জালিয়ানওয়ালাবাগের হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে, খিলাফৎ আন্দোলনের সমর্থনে ও স্বরাজ আদায়ে ১৯২০ খ্রিস্টাব্দে গান্ধিজি(Mahatma Gandhi) অসহযােগ আন্দোলন শুরু করেন। সম্পূর্ণ অহিংস পদ্ধতিতে এই আন্দোলন পরিচালিত হলেও চৌরিচৌরা গ্রামে এক পুলিশচৌকিতে জনতা আগুন ধরিয়ে দিলে ২২ জন পুলিশ নিহত হন। এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে গান্ধিজি অসহযােগ আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেন (১৯২২ খ্রিস্টাব্দ)।
(৪) আইন অমান্য আন্দোলনঃ
১৯৩০ খ্রিস্টাব্দ পূর্ণ স্বাধীনতার দাবিতে গান্ধিজি আইন অমান্য আন্দোলন শুরু করেন ডান্ডি অভিযানের মাধ্যমে (১২ ই মার্চ )। ৬ ই এপ্রিল তিনি লবণ আইন ভঙ্গ করেন। সারা দেশে প্রবল উৎসাহে আইন অমান্য আন্দোলন চলতে থাকে। ৫ ই মে সরকার গন্ধিজিকে গ্রেপ্তার করেন।
(৫) গান্ধি-চুক্তিঃ
বড়ােলাট লর্ড আরউইন আন্দোলনের তীব্রতায় ও গােলটেবিল। বৈঠকে কংগ্রেসের যােগদান নিশ্চিত করতে গান্ধিজির সঙ্গে ১৯৩১ খ্রিস্টাব্দের ৫ ই মার্চ এক চুক্তি স্বাক্ষর করেন যা গান্ধি-আরউইন চুক্তি নামে পরিচিত। এই চুক্তি অনুযায়ী ভারতীয়রা লবণ তৈরি করার অধিকার। পেল কংগ্রেস আইন অমান্য আন্দোলন সাময়িকভাবে প্রত্যাহার করে নেয়।
(৬) আইন অমান্য আন্দোলনের দ্বিতীয় পর্ব ও পুনা চুক্তিঃ
গােলটেবিল বৈঠক থেকে গান্ধিজি। শূন্য হাতে ফিরে এসে পুনরায় আইন অমান্য আন্দোলন শুরু করেন। এ সময়ে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ম্যাকডােনাল্ড সাম্প্রদায়িক বাঁটোয়ারা নীতি ঘােষণা করলে যারবেদা জেলে গান্ধিজি আমরণ অনশন শুরু করেন। বাধ্য হয়ে তপশিলি নেতা বি . আর . আম্বেদকর গান্ধিজির সঙ্গে পুনা চুক্তি ( ১৯৩২ খ্রিস্টাব্দের সেপ্টেম্বর মাসে ) করেন। পরবর্তীতে আন্দোলনের তীব্রতা কমলে ও বিহারে ভূমিকম্প হলে কংগ্রেস আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেয়।
(৭) ভারত ছাড়াে আন্দোলনঃ
গান্ধিজি পরিচালিত সর্বশেষ আন্দোলন ছিল ভারত ছাড়াে আন্দোলন। ক্রিপস মিশনের ব্যর্থতা ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ কালীন পরিস্থিতিতে গান্ধিজির নেতৃত্বে কংগ্রেস ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দের ৮ ই আগস্ট ভারত ছাড়াে আন্দোলনের প্রস্তাব গ্রহণ করে। পরদিনই সমস্ত কংগ্রেস নেতাকে গ্রেপ্তার করা হলে জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে আন্দোলনে ঝাপিয়ে পড়ে। গান্ধিজির ‘Do or Die’ এর আহ্বানে ব্রিটিশ শাসনের ভিত কেঁপে ওঠে।
(৮) স্বাধীনতা আন্দোলনের শেষ পর্বঃ
১৯৪৪ খ্রিস্টাব্দের মাঝামাঝি জেল থেকে মুক্তি পেয়ে গান্ধিজি দেখেন দেশ ক্রমশ বিভাজনের পথে এগােচ্ছে। তিনি মহম্মদ আলি জিন্নার সঙ্গে বারংবার আলােচনায় বসেন। কিন্তু পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তিনি না চাইলেও দেশভাগ অনিবার্য হয়ে পড়ে। কংগ্রেস দেশভাগ মেনে নিলেও গান্ধিজি নিজেকে গৃহবন্দি করে রাখেন।
অবশেষে, বলা যায় ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে গান্ধিজির অবদান চিরস্মরণীয়। ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দের ৩০ শে জানুয়ারি নাথুরাম গডসে নামে এক ধর্মান্ধ আততায়ীর গুলিতে তিনি প্রাণ বিসর্জন দেন।
গান্ধিজির সম্বন্ধে বিখ্যাত বৈজ্ঞানিক আইনস্টাইন বলেছেন, Generations to come will scarcely believe that such a man as this over walked earth in flesh and blood .
আরও পড়ুনঃ গান্ধীজির ডান্ডি অভিযান