Mahabharata War মহাভারতের যুদ্ধ বিস্তারিত জানুন

Mahabharata is the second national epic. Its author is Maharshi Krishna Dvaipayana Bedavasya. The Mahabharata war has 18 mountains and about 1 lakh verses. It is very difficult to determine the date of composition of this Mahabharata war. The chronology of the Mahabharata is not as easy as the chronology of the ancient texts of Sanskrit literature.

The main reason is that it is necessary to judge whether so many verses have been written by one person at a time. Writing by one person in general does not seem possible. The Western scholar Winternitz said that this entire Mahabharata could never have been written by one person and not even in one’s lifetime. There is a lot of evidence in this regard from the books.

Mahabharata রচনাকাল

মহর্ষি বেদব্যাস কথিত মহাভারতের কাহিনি রচনা করতে সম্ভবত ৩ বৎসর কাল অতিবাহিত হয়েছিল, এর দ্বারা অনুমান করা যেতে পারে, ঐ সময় লিখন পদ্ধতি তেমন আধুনিক ছিল না, সে কালে প্রচলিত নানা বৈদিক সাহিত্যগুলোকে মুনিঋষিরা গুরু-শিষ্য  পরম্পরা অনুসারে নিজেরা মৌখিক রূপে স্মরণ করে রাখতেন। সে সময়  আর্য  ভাষা  সংস্কৃত  ঋষিদের মান্য ভাষার মর্যাদা পেয়েছিল। এই রূপে সমগ্র  বৈদিক সাহিত্য  তথাকথিত গুরু-শিষ্য পরম্পরায় মৌখিক রূপে সংরক্ষিত থাকত।

৩১০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ

ক. সর্বপ্রথমে  বেদব্যাস ১০০ পর্ব ও এক লাখ শ্লোক সমন্বিত ‘জয়’ গ্রন্থ রচনা করেন, যা পরবর্তী কালে মহাভারত নামে প্রসিদ্ধ লাভ করে

খ. পরে ব্যাস প্রচারিত ঐ কাহিনিটিকে তার শিষ্য বৈশম্পায়ন  জনমেজয়ের  মহা যজ্ঞে জনমেজয় সহ সৌতি অন্যান্য মুনিদের শোনান। এই সম য় গ্রন্থটির নাম হয় ‘ভারত’।

২০০০খ্রিষ্টপূর্বাব্দ

তৃতীয় বার বৈশম্পায়ন কথিত ভারত কাহিনিটিকে সৌতি১৮টি খণ্ডে বিভক্ত করেন ও নৈমিষারণ্যে স্থিত  শৌণক  ও অন্যান্য মুনিদের গল্পের আকারে শোনান। সৌতির এই গল্পটিই ‘মহাভারত’ নামে সমগ্র বিশ্বে প্রচারিত হয়।

১২০০-৬০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ

পরে লিখন পদ্ধতির উন্নতি হলে সৌতি প্রচারিত এই প্রসিদ্ধ মহাভারতের কাহিনি  পান্ডুলিপি  বা পুঁথিতে ব্রাহ্মী কিংবা  সংস্কৃতে  লিখিত হয়। এর পরও নানা মুনি ও পণ্ডিতরা নিজস্ব শৈলীতে মহাভারতের মূল কাহিনির সাথে আরও অনেক সমসাময়িক কাহিনির সংযোজিত করেন।

১০০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ

মহাভারতে  গুপ্ত  কিংবা  মৌর্য  সাম্রাজ্য (১০০০-৭০০ খ্রি.পূ.) অথবা  জৈন  বা  বৌদ্ধ  ধর্মের (৭০০-২০০ খ্রি.পূ.) কোনো উল্লেখ নেই। তাছাড়া(১১০০ খ্রি.পূ.) ও ছান্দোগ্য  উপনিষদের  (১০০০ খ্রি.পূ.) মহাভারতের কিছু প্রসঙ্গ পাওয়া যায়। অর্থাৎ মহাভারত ১০০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দের অনেক আগেই লেখা হয়েছিল।

৬০০-৪০০খ্রিষ্টপূর্বাব্দ

মহাময়ী পাণিনি  রচিত  অষ্টাধ্যায়ীতে  (৬০০-৪০০ খ্রি.পূ.) মহাভারতের কাহিনি ও কৃষ্ণার্জুনের কিছু প্রসঙ্গ রয়েছে। অতএব মহাভারত যে পাণিনির যুগের অনেক আগে থেকেই প্রচলিত ছিল, তা নিশ্চিতভাবে বলা যায়।
১ম শতাব্দী
প্রথম শতাব্দীতে  গ্রিসের  রাজদূত ডিও ক্রাইজ়োস্টমের (Dio Chrysostom) বর্ণনায় জানা যায়, তৎকালীন  দক্ষিণ এশিয়া  লোকেদের কাছে এক লক্ষ শ্লোক যুক্ত একটি মহাগ্রন্থ ছিল, অর্থাৎ সেই সময়ও মহাভারতে এক লক্ষ শ্লোকই ছিল।

সংস্কৃতের  সর্বাপেক্ষা প্রাচীন একটি  পাণ্ডুলিপিতে  (১ম শতাব্দী) মহাভারতের ১৮টি পর্বের একটি অনুক্রমণিকা পাওয়া গিয়েছে, অর্থাৎ সেই কালে ১৮ পর্ব যুক্ত মহাভারতের কাহিনিই প্রচলিত ছিল, যদিও ব্যাসদেব ১০০টি পর্ব যুক্ত আদি মহাভারত রচনা করেন, যা পরে ১৮টি পর্বে বিবর্তিত হয়।

ক. সর্বপ্রথমে  বেদব্যাস ১০০ পর্ব ও এক লাখ শ্লোক সমন্বিত ‘জয়’ গ্রন্থ রচনা করেন, যা পরবর্তী কালে মহাভারত নামে প্রসিদ্ধ লাভ করে

খ. পরে ব্যাস প্রচারিত ঐ কাহিনিটিকে তার শিষ্য বৈশম্পায়ন  জনমেজয়ের  মহা যজ্ঞে জনমেজয় সহ সৌতি অন্যান্য মুনিদের শোনান। এই সম য় গ্রন্থটির নাম হয় ‘ভারত’।

২০০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ

তৃতীয় বার বৈশম্পায়ন কথিত ভারত কাহিনিটিকে সৌতি১৮টি খণ্ডে বিভক্ত করেন ও নৈমিষারণ্যে স্থিত  শৌণক  ও অন্যান্য মুনিদের গল্পের আকারে শোনান। সৌতির এই গল্পটিই ‘মহাভারত’ নামে সমগ্র বিশ্বে প্রচারিত হয়।

মহাভারত হল দ্বিতীয় জাতীয় মহাকাব্য । এর রচয়িতা হলেন মহর্ষি কৃষ্ণ দ্বৈপায়ন বেদব্যাস । মহাভারতে আছে ১৮ টি পর্বত এবং প্রায় ১ লক্ষ শ্লোক । এই মহাভারতের রচনাকাল নির্ণয় করা বড়ই দুরূহ ব্যাপার । সংস্কৃত সাহিত্যের প্রাচীন গ্রন্থগুলির কাল নির্ণয়ের মতই মহাভারতেরও রচনাকাল নির্ণয় করা খুব সহজসাধ্য ব্যাপার নয় । তার প্রধান কারণ হল এই এতগুলি শ্লোক একসঙ্গে একজনের দ্বারা লিখিত হয়েছে কিনা বিচার করা দরকার । সাধারণভাবে একজনের দ্বারা লেখা সম্ভব নয় বলে মনে হয় । পাশ্চাত্ত্য পণ্ডিত ভিন্টারনিৎস বলেন যে , এই সমগ্র মহাভারত একজনের লেখা কখনই হতে পারে না এবং একজনের জীবদ্দশাতেও সম্ভব নয় । এ বিষয়ে গ্রন্থের মধ্য থেকে বহু প্রমাণ পাওয়া যায় ।

সমস্ত পর্বের ভাষা , রচনাশৈলী এবং বক্তব্য বিষয় এক নয় । মহাভারতের ঘটনার অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে কৃষ্ণের দেবত্বে পরিণতি ঘটেছে । কৃষ্ণ তখন আর অর্জুন সখা নন, তিনি হয়ে উঠেছেন পরম দেবতা । এই মহাভারতের আদি পর্বেই তিন রকম শ্লোক পাওয়া যায়।

( ক ) “ ইদং শতসহস্রং তু লােকানাং পুণ্যকর্মণাম্ ” বা “ একশতসহস্রেষু মানুষেযু প্রতিষ্ঠিত ” ।

( খ ) “চতুর্বিংশতিসাহস্ৰীং চক্রে ভারতসংহিতা”।

( গ ) “ অষ্টৌ শ্লোকসহস্রাণি অষ্টৌ শ্লোকশনি চ ”। তাহলে দেখা গেল যে , প্রথম শ্লোকে মহাভারতের শ্লোকসংখ্যা বলা হচ্ছে ১ লক্ষ । দ্বিতীয় শ্লোকে শ্লোকসংখ্যা বলা হয়েছে ২৪ হাজার এবং তৃতীয় শ্লোকে শ্লোকসংখ্যা ৮৮০০। এর থেকে বােঝা যায় যে , মহাভারত রচনার তিনটি স্তর ছিল । বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন কবিদের সংযােজন ও পরিমার্জনের ফলে মহাভারত এই বিশাল রূপ লাভ করেছে , এ বিষয়ে পণ্ডিতদের মধ্যে কোন মতভেদ নেই ।

মহাভারতের এই তিনটি স্তরের নাম যথাক্রমে জয় , ভারত এবং মহাভারত।স্থ এখন প্রশ্ন হবে যে , মহাভারতের আদিস্তর কখন রচিত হয়েছিল ? আমরা জানি বৈদিক সাহিত্যের মধ্যে বহু কাহিনী , বীরত্বগাথা , প্রাচীন রাজাদের উপাখ্যান বর্ণিত আছে । এগুলির প্রভাব পড়েছিল ব্যাসদেবের উপর । ধর্মীয় আচার – অনুষ্ঠান এবং পুণ্যলাভের বিষয়টি সর্বজনীন করে তােলবার জন্য ব্যাসদেব রচনা করেছিলেন মহাভারতের মূল অংশ । এই সময়টিকে আমরা ধরে নিতে পারি খ্রীঃ পূঃ ষষ্ঠ শতক । কারণ সেই সময় থেকেই শ্লোককারে কাব্য রচিত হতে থাকে।

মহাভারতের সংক্ষিপ্ত কাহিনী বর্ণনা (Mahabharata war Descriptio)

কুরুরাষ্ট্রে সামন্তপঞ্চকে কুরুক্ষেত্র নামে এক পুণ্যক্ষেত্রে মহাযুদ্ধের প্রস্তুতি পর্ব শুরু হয়। পাণ্ডব ও কৌরবদের উদ্যোগে সমস্ত আর্যাবর্তের রাজ্যসমূহ দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে। কৃষ্ণ তথা দ্বারকার সাহায্য প্রার্থনায় অর্জুন ও দুর্যোধন উভয়েই একই সময়ে দ্বারকায় যান। কিন্তু কৃষ্ণের ভ্রাতা বলরাম যুদ্ধে অংশ না নিয়ে তীর্থযাত্রার সিদ্ধান্ত নেন। আর কৃষ্ণ উভয় দলের আবেদন রক্ষাহেতু অস্ত্রধারণ না করার প্রতিজ্ঞা করে পাণ্ডবদের পরামর্শদাতা রূপে নিজে পাণ্ডবপক্ষে যোগ দেন এবং কৌরবপক্ষে দ্বারকার দুর্জয় নারায়ণী সেনা দান করেন। আপাতদৃষ্টিতে এতে কৌরবপক্ষই লাভবান হলেও স্বয়ং ধর্মরক্ষক ভগবান বিষ্ণুর অবতার কৃষ্ণ নিজে পাণ্ডবপক্ষে থাকায় তারাই লাভবান হয়।

এদিকে কৃষ্ণ যুদ্ধ না করলেও যুদ্ধে অর্জুনের রথের সারথির ভূমিকা গ্রহণ করেন। তিনি পাণ্ডবদের শান্তিদূত রূপে কৌরবদের কাছে পাণ্ডবদের জন্য পাঁচটি গ্রাম ভিক্ষা করেন।

অতঃপর যুদ্ধ শুরু হয়। কিন্তু যুদ্ধের প্রাক্কালে নিজের আত্মীয়-স্বজনদের সাথেই সংঘর্ষে লিপ্ত হতে হবে দেখে মহাবীর অর্জুন জাগতিক মোহের বশে পড়ে যুদ্ধ হতে বিরত হবার সিদ্ধান্ত নিয়ে অস্ত্রত্যাগ করেন। এমতাবস্থায় পরমেশ্বর শ্রীকৃষ্ণ তাঁর প্রিয়সখা অর্জুনকে পুনরুজ্জীবিত করবার জন্য কিছু মহান উপদেশ প্রদান করেন ও অর্জুন পুনরায় অস্ত্রধারণ করেন। ভগবান শ্রীকৃষ্ণের এই উপদেশগুলিই হিন্দুদের প্রধান ধর্মগ্রন্থ ‘ভগবদ্গীতা’ হিসেবে গণ্য হয়। শ্রীকৃষ্ণ জানান, মহাযুদ্ধে অধর্মের বিনাশহেতু ভগবান নিজেই রয়েছেন, অর্জুন তার উপলক্ষ মাত্র। এরপর তিনি অর্জুনকে তাঁর দিব্য ‘বিশ্বরূপ’ প্রদর্শন করান।

প্রথমে যুদ্ধ পাণ্ডব ও কৌরবপক্ষে যথাক্রমে ধৃষ্টদ্যুম্ন ও ভীষ্মকে সেনাপতি পদে বরণ করা হয়। উভয়পক্ষই এইসময় যুদ্ধে জয়লাভ করার জন্য নীতিভঙ্গ করতে থাকে –

ভীষ্ম প্রবল পরাক্রান্ত হয়ে উঠলে স্বয়ং কৃষ্ণ তাকে প্রতিরোধ করতে গিয়ে ‘যুদ্ধে যোগদান না করার’ প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ করেন। যুদ্ধের ১০ম দিনে অর্জুন শিখণ্ডীকে (পূর্বজন্মে অম্বা) সাথে রেখে নিরস্ত্র ভীষ্মের ওপর ক্রমাগত বাণবর্ষণ করতে থাকেন ও এই বাণ দ্বারা ভীষ্ম শরশয্যায় শায়িত হয় ও তার পতন ঘটে। কৌরব পক্ষের সেনাপতি হন অস্ত্রগুরু দ্রোন। অর্জুনের পুত্র অভিমন্যু কৌরবদের চক্রব্যুহে প্রবেশ করলেও বের হবার উপায় না জানায় একা ‘সপ্তরথী’র সাথে যুদ্ধ করে নিহত হয়।

এরপর কৃষ্ণের মন্ত্রণায় ভীম অশ্বত্থামা নামে একটি হাতিকে মারে ও সত্যবাদী যুধিষ্ঠির দ্রোণকে তাঁর পুত্রের মৃত্যুর মিথ্যা সংবাদ জানায় (“অশ্বত্থামা হত, ইতি গজ।”)। শোকে দ্রোণ অস্ত্রত্যাগ করলে দ্রৌপদীর ভ্রাতা ধৃষ্টদ্যুম্ন তাঁকে বধ করেন। ভীম দুঃশাসনের বুক চিরে রক্তপান করেন। সেনাপতি কর্ণ সারথি হিসেবে পান মহাবীর শল্যকে। কর্ণ ও অর্জুনের প্রবল দ্বৈরথ হয়। কর্ণ-অর্জুনের যুদ্ধে কর্ণের রথের চাকা মাটিতে বসে যায় ও কর্ণ চাকা তুলতে গেলে অর্জুন তাঁকে বধ করেন।

যুধিষ্ঠির শল্যকে ও সহদেব শকুনিকে বধ করেন। একে একে সবার মৃত্যু হয়। শেষে ভীম কৃষ্ণের ইঙ্গিতে অন্যায়ভাবে গদা দ্বারা দুর্যোধনের ঊরুভঙ্গ করে তাঁকে বধ করেন। কিন্তু গভীর রাতে অশ্বত্থামা পাণ্ডব শিবিরে প্রবেশ করে দ্রৌপদীর পঞ্চপুত্র, ধৃষ্টদ্যুম্ন প্রভৃতিদের হত্যা করেন। ক্রুদ্ধ পাণ্ডবেরা অশ্বত্থামার মস্তকের মণি হরণ করেন ও জরাগ্রস্ত অমর অশ্বত্থামা নিরুদ্দিষ্ট হন।

এই রূপে ১৮ দিনের মহাযুদ্ধে পাণ্ডবেরা জয়ী ঘোষিত হন।

 

Leave a comment