লর্ড কার্জনের শিক্ষানীতি ও শিক্ষাসংস্কার | Lord Curzons Educational Policy and Educational Reforms
■ প্রশ্ন:- লর্ড কার্জনের শিক্ষানীতি ও শিক্ষাসংস্কার সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করো। ব্রিটিশ শিক্ষানীতির ফলাফল সংক্ষেপে লেখো।
■ উত্তর:- লর্ড কার্জনের শিক্ষাসংস্কার নীতি :
❏ ভূমিকা:- ভারতে শিক্ষাবিস্তারের ইতিহাসে বড়োলাট লর্ড কার্জনের শাসনকাল বিশেষভাবে উল্লেখ্য। তিনি শিক্ষাক্ষেত্রে সরকারি নিয়ন্ত্রণ বৃদ্ধির মাধ্যমে ভারতে উচ্চশিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধির চেষ্টা করেন।
■ র্যালে কমিশন:- এই উদ্দেশ্যে তিনি ১৯০২ খ্রিস্টাব্দে স্যার টমাস র্যালের সভাপতিত্বে একটি বিশ্ববিদ্যালয় কমিশন গঠন করেন যা ‘র্যালে কমিশন’ নামে পরিচিত। সৈয়দ হুসেন বিলগ্রামী ও স্যার গুরুদাস বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন এই কমিশনের দুজন ভারতীয় সদস্য।
■ ভারতীয় বিশ্ববিদ্যালয় আইন:- এই কমিশনের সুপারিশের ভিত্তিতে ১৯০৪ খ্রিস্টাব্দে ভারতীয় বিশ্ববিদ্যালয় আইন প্রণয়ন করা হয়। এই আইন অনুযায়ী—
● (১) শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির কার্যাবলির পরিধি বৃদ্ধি করা হল।
● (২) সিনেটের সদস্য সংখ্যার সীমা নির্দিষ্ট করা হল।
● (৩) সিন্ডিকেটের স্বীকৃতি দেওয়া হল। স্কুল শিক্ষার ক্ষেত্রেও কার্জন সরকারি কর্তৃত্ব স্থাপনে সচেষ্ট হয়েছিলেন।
■ উপসংহার:- এই আইনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির ওপর সরকারি নিয়ন্ত্রণ আরও কঠোর করা হয় ফলে ভারতীয়রা এর প্রতিবাদ করে গড়ে তুলেছিলেন জাতীয় শিক্ষা পরিষদের।
■ ব্রিটিশ শিক্ষানীতির ফলাফল :
❏ ভূমিকা:- উডের ডেসপ্যাচ থেকে শুরু করে ব্রিটিশ শাসকরা ভারতে শিক্ষাবিস্তারের জন্য চেষ্টা করলেও গুণগত দিক দিয়ে শিক্ষার সম্প্রসারণ হয়নি।
■ ত্রুটি:- এই শিক্ষাব্যবস্থাগুলির ত্রুটিগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল—
● (১) সর্বসাধারণের পক্ষে এই শিক্ষা গ্রহণ সম্ভব হয়নি কেননা শিক্ষার মাধ্যম ছিল ইংরেজি।
● (২) বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা না থাকায় গ্রামে শিক্ষার আলো সেভাবে পৌঁছায়নি।
● (৩) বৃত্তিমূলক শিক্ষায় জোর না দেওয়ায় শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়।
■ উপসংহার:- এছাড়া ব্রিটিশ শাসকরা তাদের শোষণ ও শাসন বজায় রাখার স্বার্থে তাদের শিক্ষানীতির মাধ্যমে যথাসম্ভব চেষ্টা করেছে জনগণকে শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করতে যাতে জনগণের মান সচেতনতা বৃদ্ধি না ঘটে।