চ্যুতির ফলে সৃষ্ট ভূমিরূপগুলির বিবরণ | Landforms Caused by Faulting in Bengali

চ্যুতির ফলে সৃষ্ট ভূমিরূপগুলির বিবরণ | Landforms Caused by Faulting in Bengali

■ প্রশ্ন:- চ্যুতির ফলে সৃষ্ট ভূমিরূপগুলির সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও। Landforms Caused by Faulting

■ উত্তর:- শিলাস্তরে চ্যুতির ফলে নিম্নলিখিত ভূমিরূপগুলির সৃষ্টি হয়:

❏ (ক) চ্যুতি ভৃগুতট (Fault Scarp):- চ্যুতির ফলে শিলাস্তরের ঊর্ধ্বস্তূপ ও অধোস্তূপের মধ্যে সৃষ্ট খাড়াই ঢালকে চ্যুতি ভৃগুতট বলে। যেমন— গন্ডোয়ানা যুগে সৃষ্ট দামোদর নদ বরাবর গ্রস্ত উপত্যকা।

❏ (খ) চ্যুতিরেখা ভৃগুতট (Faultline scarp):- চ্যুতিরেখার দুপাশের শিলাস্তরে বৈষম্যমূলক ক্ষয়কাজের (differential erosion) ফলে চ্যুতিরেখা ভৃগুতটের সৃষ্টি হয়। উৎপত্তি ও গঠন অনুসারে চ্যুতিরেখা ভৃগুতট নানা ধরনের হয়। যেমন –

● (১) পুনর্ভব চ্যুতিরেখা ভৃগুতট:- চ্যুতিরেখার যেদিকে প্রথম চ্যুতি ভৃগুতট গঠিত হয়েছিল, সেদিকেই বৈষম্যমূলক ক্ষয়কাজের ফলে পুনর্ভব চ্যুতিরেখা ভৃগুতটের সৃষ্টি হয়।

● (২) বিপরা চ্যুতিরেখা ভৃগুতটঃ চ্যুতিরেখার যেদিকে প্রথম চ্যুতি ভৃগুতট গঠিত হয়েছিল তার বিপরীত দিকে কঠিন শিলা অবস্থান করলে বৈষম্যমূলক ক্ষয়কাজের ফলে বিপরা চ্যুতিরেখা ভৃগুতটের সৃষ্টি হয়।

● (৩) মিশ্র চ্যুতিরেখা ভৃগুডট:- চ্যুতি ভৃগুতটের কোনো অংশ ভূ-আলোড়নের ফলে সৃষ্ট হলে, আবার কোনো অংশ শিলাস্তরের বৈষম্যমূলক ক্ষয়কাজের ফলে সৃষ্টি হলে মিশ্র চ্যুতিরেখা ভৃগুতটের সৃষ্টি হয়।

❏ (গ) স্তূপ পর্বত (Block mountain):- ভূ-আলোড়নের দরুন দুটি সমান্তরাল চ্যুতির মধ্যবর্তী অংশ পার্শ্ববর্তী অংশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে ওপরে উঠে গিয়ে যে উঁচু ভূমিরূপ বা পর্বত গঠন করে, সেই ভূমিরূপ বা পর্বতকে স্তূপ পর্বত বলে। ভারতের নর্মদা ও তাপ্তী নদীর মাঝে সাতপুরা পর্বত ও জার্মানির রাইন ও ফ্রান্সের রোন নদীর মাঝে ভোজ পর্বত স্তূপ পর্বতের উদাহরণ। জার্মান ভূবিজ্ঞানীগণ স্তূপ পর্বতকে হোস্ট (Horst) নামে অভিহিত করেছেন।

❏ (ঙ) এ উপত্যকা (Rift valley):- ভূ-আলোড়নের দরুন দুটি সমান্তরাল চ্যুতির মধ্যবর্তী অংশ পার্শ্ববর্তী অংশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে নীচের দিকে বসে গিয়ে যে অবনমিত ভূভাগের সৃষ্টি করে, সেই ভূভাগকে গ্রন্থ উপত্যকা বলে। যেমন— নর্মদা নদীর উপত্যকা ও রাইন নদীর উপত্যকা গ্রস্ত উপত্যকার উদাহরণ।

❏ (চ) ৱ্যাম্প উপত্যকা (Ramp valley):- দুটি স্বাভাবিক চ্যুতির মধ্যবর্তী অবনমিত ভূভাগকে গ্রস্ত উপত্যকা বলে। কিন্তু র‍্যাম্প উপত্যকা বলতে দুটি বিপরীত চ্যুতির মধ্যবর্তী অবনত ভূভাগকে বোঝায়। গ্রস্ত উপত্যকার ক্ষেত্রে প্রসারিত ভূমিভাগের সৃষ্টি হয় ও র‍্যাম্প উপত্যকার ক্ষেত্রে ভূপৃষ্ঠ সংকুচিত হয়।