Indian Rebellion of 1857: Greatest Indian Rebellion of 1857 The spontaneous mass revolts against the monarchy – the Sannyasi Rebellion, the Chuar Rebellion, the Koch Rebellion, the French and Wahhabi Movement, the Cole Rebellion, the Santal Rebellion, etc. Indian rebellion of 1857 was the final manifestation of these protests.
মহাবিদ্রোহ ১৮৫৭ খ্রিষ্টাব্দ (Indian rebellion of 1857):
অষ্টাদশ ও ঊনবিংশ শতকে সংঘটিত সন্ন্যাসী-বিদ্রোহ, চুয়াড়-বিদ্রোহ, কোচ-বিদ্রোহ, ফরাসি ও ওয়াহাবী আন্দোলন, কোল-বিদ্রোহ, সাঁওতাল বিদ্রোহ প্রভৃতি স্বতঃস্ফূর্ত গণবিদ্রোহগুলি ছিল ইংরেজ শাসন এবং রাজকর্মচারীদের ও জমিদারদের শােষণের বিরুদ্ধে বিক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ।১৮৫৭ সালের মহাবিদ্রোহ হল এইসব বিক্ষোভের চূড়ান্ত অভিব্যক্তি।
মহাবিদ্রোহের কারণ (Cause of Indian rebellion of 1857):
ঐ ভারতে কোম্পানি শাসন প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পরবর্তী সময়ে মাঝেমধ্যেই বিভিন্ন অসন্তোষকে কেন্দ্র করে ইতস্তত বিক্ষিপ্ত বিদ্রোহ দেখা দিলেও তা ব্রিটিশ শাসনের অস্তিত্বকে বিপন্ন করেনি । কিন্তু ১৮৫৭ সালের মহাবিদ্রোহ (Indian rebellion of 1857) সামগ্রিক ভাবে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের ভিত কাঁপি য়ে দেয়। যদিও এই মহাবিদ্রোহ কোনাে আকস্মিক ঘটনা ছিল না। এই বিদ্রোহের কারণ অনুসন্ধান কালে ঐতিহাসিকরা সমকালীন আর্থসামাজি ক তথা রাজনৈতিক, ধর্মীয় এবং সামরিক বিষয়ের ওপর গুরুত্ব আরােপ করেছেন।
[১] রাজনৈতিক কারণ (Political cause of Political Indian rebellion of 1857):
রাজনৈতিক কারণে দেশের অভ্যন্তরে ব্রিটিশ বিরােধী বিক্ষোভ পুঞ্জীভূত হয়েছিল। ডালহৌসীর ‘স্বত্ববিলােপ নীতি’ প্রয়ােগের ফলে ঝাসী, নাগপুর, সাতারা প্রভৃতি রাজ্যগুলি গ্রাস করা হয়। তাঞ্জোর ও কর্ণাটকের রাজ পরিবার এবং পেশােয়া পুত্র নানা সাহেবের ভাতা বন্ধ করে দেওয়া হয়। একই ভাবে ১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দে কুশাসনের অজুহাতে অযােধ্যা রাজ্যকে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যভুক্ত করা হয়। এইভাবে যে সমস্ত দেশীয় রাজ্যকে ইংরেজ রা অধিকার করে নিয়েছিল সেইসব রাজ্যের কর্মচারীরা কর্মচ্যুত হয়ে যায় এবং জীবিকাহীন হয়ে পড়ে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই তারা ব্রিটিশের প্রতি বিক্ষুদ্ধ হয়ে ওঠে এবং ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের (Indian rebellion of 1857) বিদ্রোহে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে।
[২] অর্থনৈতিক কারণ (Economic cause of Indian rebellion of 1857):
(ক) ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের আগের একশ বছর ধরে ইংরেজরা যে বিপুল পরিমাণ অর্থ ইংল্যাণ্ডে নিয়ে গিয়েছিল তার ফলে ভারতের অর্থনৈতিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে।
(খ) শিল্প বিপ্লবের প্রয়ােজনে ইংরেজরা এই দেশকে কাঁচামাল সরবরাহ কারীতে পরিণত করলে এই দেশের শিল্পব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে এবং দেশীয় বণিক, কারিগর ও শ্রমিকরা ক্রমশই দরিদ্র হতে থাকে ।
(গ) ইংরেজি ভাষার প্রাধান্যের ফলে দেশীয় ভাষায় শিক্ষিত মানুষের জীবি কা অর্জনের পথ প্রায় বন্ধ হয়ে যায়।
(ঘ) নতুন ভূমিরাজস্ব ব্যবস্থা প্রবর্তিত হওয়ার ফলে জনসাধারণের ওপর বিরাট কর চাপানাে হয়, এর ফলে তাদের অবস্থা শােচনীয় হয়ে উঠেছিল।
[৩] সামাজিক কারণ (Social cause of Indian rebellion of 1857):
বিভিন্ন সামাজিক কারণে ভারতবাসী অসন্তুষ্ট হয়ে উঠেছিল। ইংরেজদের ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ শাসক ও শাসিতের মধ্যে বিরাট ব্যবধান সৃষ্টি করেছিল। ফলত ভারতীয়রা তাদের কোনাে দিনই শাসক বলে মেনে নেয় নি।
এছাড়া রেলপথ বিস্তার, টেলিগ্রাফের প্রচলন এইসব পদক্ষেপকে তারা ইংরেজদের ষড়যন্ত বলে ধরে নেয়। এর ফলে ইংরেজদের সঙ্গে ভারতবাসী র ব্যবধান ক্রমশ বাড়তে থাকে।
[4] ধর্মীয় কারণ (Religious cause of Indian rebellion of 1857):
ইংরেজরা ভারতে ক্ষমতা দখল করার সঙ্গে সঙ্গে এই দেশে খ্রিস্টান মিশনারীরা এসেছিলেন। এই মিশনারীরা হিন্দু ও মুসলমানদের ধর্মান্তরিত করার চেষ্টা চালান। স্বভাবতই ভারতীয় জনসাধারণের একটি বড়াে অংশ ব্রিটিশের প্রতি সন্দিহান হয়ে ওঠে। তারা সতীদাহ নিবারণ, বিধবা বিবাহের প্রচলন এইসব সামাজিক সংস্কারমূলক পদক্ষেপকে খ্রিস্টান ধর্মে ধর্মা ন্তরিত করার অভিসন্ধি বলে মনে করতে থাকে। যুদ্ধের প্রয়ােজনে সমুদ্র যাত্রার আদেশ দেশীয় সিপাহীদের ধর্মভাবকে আঘাত করায় ক্রমশ তারা অসন্তুষ্ট হয়ে ওঠে।
[৫] সামরিক কারণ (Military cause of Indian rebellion of 1857):
সামরিক ক্ষেত্রে বৈষম্যমূলক আচরণ করার ফলে ভারতীয় সিপাহিরা ক্রমশই অসন্তুষ্ট হয়ে উঠেছিল। ইংরেজ সিপাহিদের তুলনায় ভারতীয় সিপাহিরা বেতন কম পেত। অভিজ্ঞ ভারতীয় সামরিক কর্মচারীর বদলে অনভিজ্ঞ ইংরেজ কর্মচারীরা পদোন্নতি লাভ করত। এছাড়া ইংরেজ অফিসাররা ভারতীয় সিপাহিদের সঙ্গে ঔদ্ধত ও অপমানজনক ব্যবহার করতেন। ফলে, দেশীয় সিপাহিরা ক্রমশই ইংরেজদের প্রতি শ্রদ্ধা হারাতে থাকে এবং ব্রিটিশ শাসনের ওপর তাদের ঘৃণা ক্রমশ তীব্র আকার ধারণ করে।
মহাবিদ্রোহের অবসানে, ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশ পার্লামেন্ট ভারত শাসন আইন দ্বারা ভারতে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসনের অবসান ঘটায় এবং ভারতের শাসনভার সরাসরি ব্রিটিশ রাজতন্ত্রের ওপর অর্পন করা হয়। এরপর থেকে এই জন্য ভারতের গর্ভনরজেনারেল ভাইসরয়’ অর্থাৎ রাজপ্রতিনিধি রূপে অভিহিত হয়। লর্ড ক্যানিং ছিলেন ব্রিটিশ ভারতের শেষ গভর্নর জেনারেল এবং প্রথম ভাইসরয়।
আরও পড়ুন : ইংরেজ রাজত্বের ভূমি রাজস্ব নীতি