Hooghly Industrial Area: The Hooghly Industrial Area or Hooghly Industrial Zone or Greater Calcutta Industrial Area is the largest industrial complex in West Bengal and one of the best in India. On the left bank of the Hooghly River, from Halishahar in the north to Bajwaj in the south and from Bansberia in the north to Uluberia in the south on the right bank, the industrial zone covers an area of about 425 sq km. It extends about 72 km from north to south and about 4-8 km from east to west. Reasons for Development of Hooghly Industrial Zone The favorable reasons for the development of Hooghly Industrial Zone.
হুগলি শিল্পাঞ্চল(Hooghly Industrial Area):
এর অবস্থান হুগলি নদীর তীরবর্তী শিল্পাঞ্চল বা হুগলি শিল্প বলয় বা বৃহত্তর কলকাতা শিল্পাঞ্চল পশ্চিমবঙ্গের বৃহত্তম ও ভারতের অন্যতম শ্রেষ্ঠ শিল্পাসূল । হুগলি নদীর বামতীরে উত্তরে হালিশহর হতে দক্ষিণে বজবজ এবং ডানতীরে উত্তরে বাঁশবেড়িয়া হতে দক্ষিণে উলুবেড়িয়া পর্যন্ত বিস্তৃত অঞ্চলে প্রায় 425 বর্গ কিলােমিটার এলাকাব্যাপী এই শিল্পবলয় বিস্তৃত । উত্তর – দক্ষিণে এর বিস্তার প্রায় 72 km এবং পূর্ব – পশ্চিমে বিস্তার প্রায় 4-8 km । হুগলি শিল্প বলয় গড়ে ওঠার কারণ হুগলি শিল্প বলয় গড়ে ওঠার অনুকূল কারণগুলি হল-
( ক ) কলকাতা বন্দরের সুবিধা । কলকাতা বন্দর এই শিল্প বলয়ের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত হওয়ায় প্রয়ােজনীয় যন্ত্রপাতি ও কাচামাল এই বন্দরের মাধ্যমে আমদানি এবং উৎপাদিত পণ্য সহজেই রপ্তানি করা যায় ।
( খ ) কাচামালের সহজলভ্যতা : বিভিন্ন শিল্পের প্রয়ােজনীয় বিভিন্ন কাঁচামাল , যেমন — কঁচাপাট , বাঁশ , কাচা চামড়া , লােহা ও ইস্পাত , বিভিন্ন খনিজ আকরিক , হুগলি নদীর জল প্রভৃতি স্বল্প ব্যয়ে পাওয়া যায় ।
( গ ) শক্তি সম্পদ : রানিগঞ্জ ও বারিয়ার কয়লা এই শিল্প বলয়ের প্রধান জ্বালানি হিসাবে ব্যবহৃত হয় । ব্যান্ডেল , দুর্গাপুর , সাঁওতালদি , টিটাগড় , কোলাঘাট , বজবজ প্রভৃতির তাপবিদ্যুৎ এবং D.V.C- এর জলবিদ্যুৎ এই শিল্প বলয়ে ব্যবহৃত হয় ।
( ঘ ) উন্নত পরিবহণ ব্যবস্থা : পূর্ব ও দক্ষিণ – পূর্ব রেলপথ , জাতীয় সড়ক নং 2 , 6 , 34 , 35 ও 41 এবং সংশ্লিষ্ট রাজ্য সড়ক , হুগলি নদীর সুনাব্য জলপথ প্রভৃতি পরিবহণ ব্যবস্থার জন্য শিল্পের প্রয়ােজনীয় কাঁচামাল ও উৎপাদিত পণ্য সহজেই পরিবহণ করা যায় ।
( ঙ ) সুলভ শ্রমজীবী : নিম্ন গঙ্গা সমভূমি ঘনবসতিপূর্ণ বলে এই অঞ্চলে সুলভে প্রচুর শ্রমজীবী পাওয়া যায় ।
( চ ) মূলধনের জোগান : ব্রিটিশ মূলধনে এই অঞ্চলে শিল্পবিকাশ শুরু হয়েছিল । স্বাধীনতালাভের পর হতে টাটা , বিড়লা , গােয়েঙ্কা , মফতলাল , আম্বানি , জিন্দাল , রিলায়েন্স প্রভৃতি বিভিন্ন শিল্পগােষ্ঠী , রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকার , অনাবাসী ভারতীয় প্রভৃতি এই শিল্পাঞ্চলে মূলধন বিনিয়ােগ করছেন । কলকাতা শেয়ার বাজার , বিভিন্ন ব্যাঙ্ক ও বীমা প্রতিষ্ঠান , পশ্চিমবঙ্গ শিল্প উন্নয়ন কর্পোরেশন প্রভৃতির উদ্যোগে এই শিল্পাঞ্চলে বর্তমানে বহু পুঁজি বিনিয়ােগ করা হচ্ছে ।
( ছ ) কারিগরী দক্ষতা ; ব্রিটিশ আমলে এই শিল্প বলয়ে পশ্চিমী কারিগরী বিদ্যার প্রভাব পড়েছিল । বর্তমানে দেশীয় কারিগরী জ্ঞান ও বৈদেশিক প্রযুক্তির সমন্বয়ে এই শিল্পাঞলে উন্নত কারিগরী দক্ষতার সমাবেশ দেখা যায় ।
(জ ) বাজারের চাহিদা : হুগলি শিল্প বলয় ঘনবসতিপূর্ণ বলে এবং সমগ্র পূর্বভারতের বৃহত্তম শিল্প বলয়রূপে গড়ে ওঠায় এখনকার শিল্পজাতদ্রব্যের চাহিদা খুব বেশি । উন্নত পরিবহণ ব্যবস্থার জন্য এখানকার শিল্পজাতদ্রব্যের সর্বভারতীয় চাহিদাও আছে ।
( ঝ ) শিল্পের পরিকাঠামাে : ব্রিটিশ আমল থেকেই এই অঞ্চলে শিল্প গঠনের সুন্দর পরিকাঠামাে গড়ে উঠেছিল । প্রাক্তন ভারতের রাজধানী ও বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতায় উন্নত পরিবহণ , ব্যাঙ্ক ও বীমা ব্যবস্থার প্রসার , ডাক ও টেলিফোন , টেলেক্স , ফ্যাক্স , উপগ্রহ মারফৎ যােগাযােগ প্রভৃতি ব্যবস্থা উন্নত পরিকাঠামাে সৃষ্টি করেছে ।
( ঞ ) ঐতিহাসিক কারণ : ব্রিটিশ শাসকগণ কলকাতা বন্দরের সুবিধা নিয়ে এই অঞ্চলে প্রথমে কার্পাস ও পাট শিল্পের পত্তন করেছিল । এই লাভজনক শিল্পগুলিকে কেন্দ্র করে অন্যান্য শিল্পের কেন্দ্রীভবন ঘটেছিল । মূলধন সংগ্রহ , সরকারি অনুমােদন ইত্যাদির ব্যাপারে কোনাে অসুবিধা না থাকায় ব্রিটিশ আমলেই এই অঞ্চল ভারতের সর্বশ্রেষ্ঠ শিল্পাঞ্চলে পরিণত হয়েছিল ।
উল্লেখযােগ্য শিল্প ও শিল্পকেন্দ্র হুগলি শিল্প বলয়ের উল্লেখযােগ্য শিল্পগুলি হল—
পাট শিল্প : ভারতের প্রথম পাটকল এই অঞ্চলের রিষড়ায় 1855 সালে স্থাপিত হয়েছিল । [ i ] স্থানীয় কাঁচাপাট , [ i ] কলকাতা বন্দরের মাধ্যমে পাটজাত দ্রব্যাদি রপ্তানির ও যন্ত্রপাতি আমদানির সুবিধা , [ iii ] থানীয় সুলভ ও সুদক্ষ শ্রমজীবী , [ iv ] রানিগঞ্জের কয়লা , [ v ] তাপবিদ্যুৎ ও জলবিদ্যুতের সুবিধা , [ vi ] রেলপথ – সড়কপথ – জলপথে পণ্য পরিবহণের সুবিধা প্রভৃতি নানা কারণে এই শিল্পাঞ্চলের পাট শিল্প ভারতের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ও পশ্চিমবঙ্গের সর্বশ্রেষ্ঠ শিল্পে পরিণত হয়েছে । হুগলি নদীর উভয় তীরে নৈহাটি , কাঁকিনাড়া , শ্যামনগর , ভাটপাড়া , জগদ্দল , টিটাগড় , ব্যারাকপুর , খড়দহ , ভদ্রেশ্বর , বৈদ্যবাটি , শ্রীরামপুর , বালি , উলুবেড়িয়া , বজবজ , বিড়লাপুর প্রভৃতি স্থানে পাটকলগুলি অধিক কেন্দ্রীভূত হয়েছে ।
কার্পাস বয়নশিল্প : ভারতের প্রথম কার্পাস সুতা ও বয়নকল 1818 সালে ঘুসুড়িতে স্থাপিত হয়েছিল । মহারাষ্ট্র ও গুজরাট হতে তুলা আমদানি করে এই শিল্পাঞ্চলে প্রায় 41 টি কার্পাস বয়ন শিল্পকেন্দ্র গড়ে উঠেছে । [ i ] রানিগঞ্জের কয়লা , [ ii ] সুলভ শ্রমজীবী , [ iii ] উন্নত পরিবহণ ব্যবস্থা , [ iv ] কলকাতা বন্দরের সুবিধা , [ v ] কলকাতা তথা পূর্বাঞ্চলের বিরাট বাজার এবং [ vi ] উন্নত শিল্প পরিকাঠামােরজন্য হুগলি শিল্প বলয়ে কার্পাস বয়নশিল্পের বিকাশ হয়েছে । উল্লেখযােগ্য কার্পাস বয়ন শিল্পকেন্দ্রগুলি হল শ্রীরামপুর , রিষড়া , কোন্নগর , সালকিয়া , পানিহাটি , হাওড়া , বেলঘরিয়া , সােদপুর , শ্যামনগর , ফুলেশ্বর প্রভৃতি ।
ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্প : হুগলি শিল্প বলয়ে পাট শিল্পের পরেই ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্পের স্থান । বিভিন্ন ধরনের ভারী ও হালকা ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্প , মূলধনী ইঞ্জিনিয়ারিং দ্রব্য নির্মাণের শিল্প , গৃহস্থালির কাজের ব্যবহারযােগ্য ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্প , পরিবহণ সংক্রান্ত ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্প প্রভৃতি এই অঞ্চলে গড়ে উঠেছে । [ i ] রানিগঞ্জের কয়লা , [ i ] দুর্গাপুর , বার্ণপুর এবং স্থানীয় আয়রন ফাউড়ি হতে লােহাপিণ্ড ও ইস্পাত পাওয়ার সুবিধা , [ ii ] উন্নত পরিবহণ ব্যবস্থা , [ iv ] কলকাতা বন্দরের সুবিধা , [ v ] দক্ষ ও সুলভ শ্রমজীবী , [vi] কলকাতার বিরাট বাজারের চাহিদা , ( vii ) শিল্প গঠনের উপযােগী পরিকাঠামাে প্রভৃতি কারণে এই অঞ্চলে ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্পের বিকাশ ঘটেছে ।
এই অঞ্চলের উল্লেখযােগ্য ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্পগুলি হল — বৈজ্ঞানিক সূক্ষ্ম যন্ত্রপাতি নির্মাণ ( যাদবপুর ) , মােটর গাড়ি নির্মাণ ( হিন্দমােটর ) , কার্পাস বয়নশিল্পের যন্ত্রপাতি (বেলঘরিয়া ) , কাগজকলের যন্ত্রপাতি ( টিটাগড় ) , বৈদ্যুতিক পাখা ( টালিগঞ্জ ও নিকটবর্তী অঞ্চল ) , বৈদ্যুতিক বাল্ব ( সল্টলেক ) , হালকা যন্ত্রপাতি নির্মাণ ( বেহালা ) , জরিপ ও অঙ্কন যন্ত্রপাতি ও ক্যামেরা নির্মাণ ( যাদবপুর ) , জাহাজ নির্মাণ ও মেরামতি ( খিদিরপুর )
আরও পডুনঃ হলদিয়া শিল্পাঞ্চল সম্পর্কে