হিমালয় পর্বত সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য | Big Himalayan

উত্তর ভারতের পর্বতমালার মধ্যে প্রধান হল হিমালয় পবর্তশ্রেণী এবং এই শ্রেণীর পূর্বদিকের ও পশ্চিমদিকের বিস্তার এই গিরিশ্রণী পূর্বদিকে নামচাবারওয়া শৃঙ্গ থেকে দক্ষিণে বাঁক নিয়ে পাটকই – মিজো পাহাড় হয়ে মিয়ানমারের আরাকানইয়ােমা পর্যন্ত বিস্তৃত। পশ্চিমে হিমালয় পর্বতমালা। পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্য দিয়ে বিস্তৃত হয়েছে। কতকগুলি পর্বতমালার মধ্য দিয়ে।




হিমালয় পর্বত সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য | Big Himalayan

হিমালয় পর্বত ( Himalayan mountains):

উত্তর ভারতের পর্বতমালার মধ্যে প্রধান হল হিমালয় পবর্তশ্রেণী এবং এই শ্রেণীর পূর্বদিকের ও পশ্চিমদিকের বিস্তার এই গিরিশ্রণী পূর্বদিকে নামচাবারওয়া শৃঙ্গ থেকে দক্ষিণে বাঁক নিয়ে পাটকই – মিজো পাহাড় হয়ে মিয়ানমারের আরাকানইয়ােমা পর্যন্ত বিস্তৃত। পশ্চিমে হিমালয় পর্বতমালা। পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্য দিয়ে বিস্তৃত হয়েছে। কতকগুলি পর্বতমালার মধ্য দিয়ে।

প্রথমে পশ্চিম হিন্দুকুশ তারপরে দক্ষিণে সফেদ খাে , সুলেইমান , কিরথর, মাকরণ পর্বতমালা হয়ে বালুচিস্তান পর্যন্ত । হিমালয় পর্বতশ্রেণী পৃথিবীর সর্বোচ্চ পর্বতশ্রেণী এবং পৃথিবীর উচ্চতম শৃঙ্গগুলির অবস্থান হিমালয় পর্বতশ্রেণীতে। হিমালয় পর্বতশ্রেণীতে ৮ , ০০০ মিটারের উচ্চ শৃঙ্গ রয়েছে ২১টি , ৭ , ৫০০ মিটারের চেয়ে বেশি উঁচু আছে ৪০টি এবং ৬, ০০০ মিটার থেকে ৭ , ০০০ মিটার উচ্চতার মধ্যে শৃঙ্গের সংখ্যা শতাধিক।


হিমালয় পর্বতের বিস্তার –
২ , ৫০০ কিলােমিটার দীর্ঘ এই পর্বতমালা পূর্বে মিশমিপাহাড় থেকে পশ্চিমে পামির পর্যন্ত বিস্তৃত পর্বতমালা। ১৫০ – ৪০০ কিলােমিটার চওড়া। প্রধান শ্রেণীগুলি ভারত, নেপাল ও ভুটানের অন্তর্গত কিন্তু উত্তরের কিছু অংশ তিব্বতে রয়েছে। হিমালয়ের সবচেয়ে উত্তরে রয়েছে। কারাকোরাম শ্রেণী গিলগিট নদী হিন্দুকুশ থেকে কারাকোরামকে পৃথক করেছে। কারাকোরামের দক্ষিণে সমান্তরালে বিস্তৃত রয়েছে লাদাখ, পিরপঞ্জাল, জাঁসকর, ধৌলাধার প্রভৃতি। তিব্বতের কৈলাস পাহাড় লাদাখ পর্বতশ্রেণীর অংশ। নাগটিব্বা এবং মুসৌরি পাহাড় আর নেপালের মহাভারত লেখ একই শ্রেণী, তবে কালি নদী। মহাভারত লেখকে পৃথক করেছে। হিমালয় পর্বতশ্রেণীকে উচ্চতা অনুসারে উত্তর থেকে দক্ষিণে তিনটি স্তরে ভাগ করা। যায় – হিমাদ্রি, হিমাচল, শিবালিক। শিবালিক পর্বতশ্রেণী হল হিমালয়ের দক্ষিণতম গিরিশ্রেণী।




প্রস্থ বরাবর হিমালয়ে ভূ – প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য –
টেথিস হিমালয় : হিমাদ্রির উত্তরে টেথিস হিমালয় বা তিব্বতীয় হিমালয়। এর উচ্চতা ৩ , ০০০ থেকে ৪ , ৩০০ ।মিটার এবং বিস্তার ৪০ কিলােমিটার। এই অংশটি প্রাক প্যালিওজোয়িক সময় থেকে টার্সিয়ারি সময়ের মধ্যে গঠিত। টেথিস হিমালয় এবং ইউরেশিয়ান প্লেটের মধ্যে রয়েছে সিন্ধু – সাংপাে নদী প্রণালী।


হিমাদ্রি হিমালয় : এই অংশের উচ্চতা ৬ , ০০০ মিটারের বেশি। এই পর্বতশ্রেণীতেই রয়েছে পৃথিবীর বৃহত্তম পর্বতচূড়াগুলি। তুষারধবল এই শ্রেণীর প্রস্থ ৫০ কিলােমিটার। এই অংশে রয়েছে পৃথিবীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট, কাঞ্চনজঙ্ঘা, ধবলগিরি, মাকালু, মানাসলু, অন্নপূর্ণা প্রভৃতি।

হিমাচল হিমালয় : হিমাদ্রির দক্ষিণে রয়েছে হিমাচল হিমালয়। এটি প্রস্থে ৬০ – ৮০ কিলােমিটার এবং এর উচ্চতা ৩ , ৬০০ মিটার থেকে ৪ , ২০০ মিটার। এই অংশটি প্রিক্যাম্ব্রিয়ান, প্যালিওজোয়িক ও মেসােজোয়িক সময়ে গঠিত।

ক্ষয়কার্যের ফলে হিমাচল হিমালয় বিভিন্ন অংশে বিভক্ত। প্রধান পবর্তশ্রেণীগুলি — যেমন পিরপঞ্জাল, ধৌলাধার, নাগটিব্বা, মহাভারত লেখ পূর্ব – পশ্চিমে বিস্তৃত। শিবালিক ও হিমাচল হিমালয়ের মধ্যবর্তী সমান্তরাল প্রশস্ত উপত্যকাগুলিকে ‘ দুন ’ বলা হয়।
শিবালিক হিমালয় : এই অংশটি টার্সিয়ারি যুগের পাললিক শিলায় গঠিত। গড় উচ্চতা ৬০০ – ১, ৫০০ মিটার এবং ১০ থেকে ৫০ কিলােমিটার চওড়া। এটি একটি অবিচ্ছিন্ন পর্বতমালা যা সিন্ধু গিরিখাত থেকে ব্রহ্মপুত্র পর্যন্ত বিস্তৃত। এইপর্বতশ্রেণী উত্তর ভারতের সমভূমি অঞ্চলের উত্তর সীমা নির্ধারণ করে।


দৈর্ঘ্য বরাবর হিমালয় পর্বতের ভূ – প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্যঃ

পশ্চিম হিমালয় : পূর্বে নেপালের সীমান্ত থেকে পশ্চিমে নাঙ্গা পর্বত পর্যন্ত বিস্তৃত এই অংশটি তিন ভাগে বিভক্ত কাশ্মীর হিমালয়, হিমাচল হিমালয় এবং কুমায়ুন হিমালয়।
কাশ্মীর হিমালয় : এই অংশটি জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যে প্রায় ৩ , ৫০ , ০০০ বর্গকিলােমিটার জায়গায় বিস্তৃত। এখানে শিবালিক পর্বতশ্রেণী পাঞ্জাব সমভূমি থেকে উত্থিত হয়ে পিরপঞ্জাল পর্যন্ত বিস্তৃত। পিরপঞ্জাল পর্বতশ্রেণী কাশ্মীর উপত্যকাকে ভারতের অন্যান্য অংশ থেকে বিচ্ছিন্ন করেছে। বানিহাল বা জওহর গিরিপথ দিয়ে জম্মু থেকে কাশ্মীর উপত্যকায় যাওয়া যায়। শ্রীনগরের উত্তরের হিমাদ্রি ও জাঁসকর পর্বতশ্রেণী। জোজিলা গিরিপথ দিয়ে লাদাখের রাজধানী লে – তে যাওয়া যায়। লে থেকে সাসার গিরিপথ দিয়ে চিনে প্রবেশ করা যায়।


হিমাচল হিমালয় : এই অংশটি পাঞ্জাবের পূর্বাংশ এবং হিমাচল প্রদেশ নিয়ে বিস্তৃত। এখানে দক্ষিণ থেকে উত্তরে বিস্তৃত শ্রেণীগুলি হল শিবালিক, ধৌলাধার, নাগটিব্বা, জাঁসকর প্রভৃতি। পিরপঞ্জাল ও ধৌলাধারের মধ্যে কুলু, হিমাদ্রি ও জাসকরের মধ্যে স্পিতি এবং পিরপঞ্জাল ও হিমাদ্রির মধ্যে লাহুল উপত্যকার প্রাকৃতিক দৃশ্যঅতি মনােরম।


কুমায়ুন হিমালয় : এটি উত্তরাঞ্চলের অন্তর্গত। এই অংশে হিমাদ্রি হিমালয়, হিমাচল হিমালয় ও শিবালিক হিমালয়উত্তর থেকে দক্ষিণে বিস্তৃত। এখানকার দুন উপত্যকার মধ্যে দেরাদুন সবচেয়ে বড়। এখানে বেশ কিছু হিমবাহসৃষ্ট হদ দেখা যায় যেগুলিকে তাল বলে, যেমন — ভীমতাল নৈনিতাল প্রভৃতি। এই অংশের শৃঙ্গগুলি হল নন্দাদেবী কামেট, ত্রিশূল, চৌখাম্বা, কেদারনাথ প্রভৃতি। এখানকার গঙ্গোত্রী ও যমুনােত্রী হিমবাহ থেকে যথাক্রমে গঙ্গা ও যমুনার সৃষ্টি হয়েছে।


মধ্য হিমালয় : মধ্য হিমালয়ের অংশটি নেপালের অন্তর্গত। পূর্বে সিঙ্গালিলা পর্বতশ্রেণী থেকে পশ্চিমে কালী নদী পর্যন্ত বিস্তৃত। এই অংশেই রয়েছে পৃথিবীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট এবং অনেকগুলি উচ্চ শৃঙ্গ, যেমন — মাকাল, ধবলগিরি, অন্নপূর্ণা, গৌরীশঙ্কর।

পূর্ব হিমালয় : পশ্চিমে সিঙ্গালিলা পর্বতশ্রেণী থেকে পূর্বে অরুণাচল পর্যন্ত বিস্তৃত এই অংশকে তিনটি ভাগে ভাগ করা হয় — দার্জিলিং হিমালয়, ভূটান হিমালয় এবং অরুণাচল হিমালয়।





দার্জিলিং হিমালয় : পূর্ব হিমালয়ের এই অংশটি সিকিম এবং পশ্চিমবঙ্গের পার্বত্য অংশে বিস্তৃত। সিঙ্গালিলা পর্বতশ্রেণী নেপাল ও পশ্চিমবঙ্গ সীমায় অবস্থিত, দার্জিলিং হিমালয়ের উচ্চতম শৃঙ্গগুলি হল — সান্দাকফু, ফালুট, সবরগ্রাম, কাঞ্চনজঙ্ঘা প্রভৃতি। এদের মধ্যে সান্দাকফু পশ্চিমবঙ্গের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ। নাথু লা এবং জেলেপ লা গিরিপথ দিয়ে তিব্বতের চুম্বি উপত্যকায় যাওয়া যায়। কাঞ্চনজঙ্ঘা পৃথিবীর তৃতীয় এবং ভারতের দ্বিতীয় উচ্চতম শৃঙ্গ।


ভূটান হিমলায় : এই অংশে উল্লেখযােগ্য পর্বতশ্রেণী হল। মাসাংকিড়ে এবং সর্বোচ্চ শৃঙ্গ চুমলহরি। এই অংশের লিংসি লা ও ইউলি লা গিরিপথ দিয়ে তিব্বতেযাওয়া যায়।

অরুণাচল হিমালয় : এই অংশে ব্রহ্মপুত্র অববাহিকার উত্তরে হিমাচল হিমালয় এবং হিমাদ্রি হিমালয় এই অংশে হিমাদ্রি হিমালয়ের নামচাবারওয়া একটি উচ্চ শৃঙ্গ