হলদিয়া শিল্পাঞ্চল (Haldia Industrial Area)

Haldia Industrial Area: Exploiting industrialists are trying to set up new industries here. Haldia Industrial Area including Japan About 90 km south of Kolkata and 300 km inland from Mehna of Hughli River. Haldia Industrial Area has been developed under the supervision of Haldia Development Authority centered on this port. The area of ​​this industrial area is about 327 square kilometers.

This industrial area is east, southeast and northeast of the Hooghly River; Rupnarayan river to the north and northwest; It is bounded on the west by the Hijli Canal and on the south-west and south by the Yellow River. Reasons for the development of Haldia Industrial Area The favorable reasons for the development of Haldia Industrial Area are: (a) Location of Haldia Port: No. Haldia Industrial Area has been developed centering on Haldia Port.

হলদিয়া শিল্পাঞ্চল(Haldia Industrial Area)

কাজে লাগিয়ে রত শিল্পপতি এখানে নতুন নতুন শিল্প স্থাপনের উদ্যোগী হচ্ছেন । জাপান সহ হলদিয়া শিল্পাঞ্চল কলকাতা থেকে প্রায় 90 km দক্ষিণে এবং হুগলি নদীর মােহনা হতে 300 km অভ্যন্তরে পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় হুগলি ও হলদি নদীর সঙ্গমস্থলে কলকাতার সহযােগী বন্দর হলদিয়া গড়ে উঠেছে । এই বন্দরকে কেন্দ্র করে হলদিয়া উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে হলদিয়া শিল্পাঞ্চল গড়ে উঠেছে । এই শিল্পাঞ্চলের আয়তন প্রায় 327 বর্গ কিলােমিটার ।

এই শিল্পাঞ্চলটি পূর্ব , দক্ষিণ – পূর্ব ও উত্তর – পূর্বে হুগলি নদী; উত্তর ও উত্তর পশ্চিমে রূপনারায়ণ নদী ; পশ্চিমে হিজলী খাল এবং দক্ষিণ – পশ্চিম ও দক্ষিণে হলদি নদী দ্বারা বেষ্টিত ।হলদিয়া শিল্পাঞ্চল গড়ে ওঠার কারণ হলদিয়া শিল্পাঞ্চল গড়ে ওঠার অনুকুল কারণগুলি হল—

( ক ) হলদিয়া বন্দরের অবস্থান : ন হলদিয়া বন্দরকে কেন্দ্র করেই হলদিয়া শিল্পাঞ্চল গড়ে উঠেছে । কলকাতার সহযােগী বন্দর তা হিসাবে স্থাপিত হওয়ার ফলে কলকাতা বন্দরের আমদানিজাত বহুপণ্য এখানে খালাস করা হয়। আমদানিজাত খনিজতেল , ফসফেট , লবণ , বিভিন্ন রাসায়নিক দ্রব্য প্রভৃতিকে ভিত্তি ত করেই হলদিয়া শিল্পাঞ্চল গড়ে উঠেছে ।

( খ ) বিস্তৃত জমি : 327 sq.km এলাকা ব্যাপী ৮ শিল্পাঞ্চল গড়ে ওঠায় বিভিন্ন শিল্প স্থাপনে প্রয়ােজনীয় জমির অভাব হয় না । জমির স্বল্প র মূল্যের জন্য শিল্পবিকাশ ত্বরান্বিত হয়েছে ।

( গ ) উন্নত পরিবহণ ব্যবস্থা : দক্ষিণ – পূর্ব রেলপথের ৪ পাঁশকুড়া হতে বিস্তৃত একটি শাখা রেলপথ , জাতীয় সড়ক 41 – এর মাধ্যমে মুম্বাই – কলকাতা , জাতীয় সড়কের [ 6 নং ] সঙ্গে সংযুক্তি ও বিভিন্ন রাজ্যসড়কের বিস্তার প্রভৃতির ফলে পার্শ্ববর্তী ও খনিজ ও কৃষিজ সম্পদে সমৃদ্ধ পশ্চাদভূমি ও কলকাতার সঙ্গে হলদিয়ার সরাসরি যােগাযােগ থাপিত হয়েছে । হুগলি নদী জলপথের মাধ্যমেও কলকাতার সঙ্গে সহজ যােগাযােগ স্থাপন করা হয় ।

( ঘ ) সুলভ শক্তি সম্পদ : পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ পর্ষদ হলদিয়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করে । কোলাঘাট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিদ্যুৎ , হলদিয়ার ( বাসুদেবপুর ) গ্যাস টারবাইন তাপবিদ্যুৎ এই শিল্পাঞ্চলে ব্যবহৃত হয় ।

( ঙ ) সুলভ শ্রমজীবী : পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ঘন লােকবসতির জন্য এখানে শিল্পের প্রয়ােজনীয় শ্রমজীবীর অভাব হয় না । এছাড়া পশ্চিমবঙ্গের অন্যান্য জেলা এবং বিহার – ঝাড়খণ্ড হতে প্রয়ােজনীয় সুলভ শ্রমজীবী পাওয়া যায় ।

( চ ) শিল্প বিকাশের পরিকাঠামাে : এই অঞ্চলের শিল্প বিকাশের জন্য উপযুক্ত পরিকাঠামাে গড়ে তােলা হচ্ছে । প্রাচীন তাম্রলিপ্ত বন্দরের ঐতিহ্য যেমন এই শিল্পাঞ্চলের উন্নতিতে সাহায্য করছে , তেমনই ব্যাঙ্ক , বীমা , গুদামঘর , টেলিফোন , টেলিগ্রাফ প্রভৃতি নানান ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে ।

(ছ ) কাঁচামালের সহজলভ্যতা : হলদিয়া বন্দরের পশ্চাদভূমি পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর , দক্ষিণ 24 পরগনা , হাওড়া , হুগলি প্রভৃতি জেলা কৃষিসম্পদে অত্যন্ত সমৃদ্ধ । পান , মাছ প্রভৃতিকে কেন্দ্র করে এই শিল্পাঞ্চলে তাই বহু ক্ষুদ্রায়তন ভােগ্যপণ্য শিল্প গড়ে উঠেছে । ছােটোনাগপুর মালভূমির বিভিন্ন খনিজসম্পদও এখানে সহজে আনা যায় । খনিজ তেল সংক্রান্ত বিভিন্ন শিল্পের কাঁচামাল স্থানীয় তেল শােধনাগার হতে পাওয়া যায় ।

( জ ) অনুকুল প্রাকৃতিক পরিবেশ : পলিগঠিত সমতলভূমি ও প্রায় সমভাবাপন্ন জলবায়ু শিল্প গঠনের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করেছে ।

( ঝ ) মূলধন বিনিয়ােগ : হলদিয়া শিল্পাঞ্চলের উন্নতির জন্য রাজ্য শিল্পোন্নয়ন নিগম , হলদিয়া উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ নানাভাবে মূলধন বিনিয়ােগ করছে । নতুন শিল্পগঠনের সুবিধাগুলিকে :উল্লেখযােগ্য শিল্প ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা হলদিয়া শিল্পাঞ্চল অপেক্ষাকৃত নতুন । এই শিল্পাঞ্চলে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে কিছু কিছু শিল্প গড়ে উঠেছে । শিল্প গঠনের পরিকাঠামাের উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে বহু নতুন শিল্পস্থাপনের সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে ।

বর্তমান শিল্প : ( ক ) খনিজ তেল শােধনাগার হলদিয়া শিল্পাঞ্চলের প্রধান শিল্প খনিজ তেল শােধন । ! 968 সালে ফ্রান্স ও রুমানিয়া সরকারের কারিগরী সহায়তায় ইন্ডিয়ান অয়েল করপােরেশন এর অধীনে এই শােধনাগার গড়ে ওঠে।ইরাক ও মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশ হতে আমদানিকৃত অপরিশােধিত খনিজ তেল এখানে শােধন করা হয় । এই শােধনাগার পাইপলাইন দ্বারা হাওড়ার মৌরিগ্রাম পাম্পিং স্টেশনের সঙ্গে যুক্ত । খনিজতেল শােধনের পর রান্নার গ্যাস, ডিজেল , পেট্রোল , লুব্রিকেটিং অয়েল , তারপিন , মােটর স্পিরিট প্রভৃতি তেলজাত দ্রব্য এবং ন্যাপথা , বুটাডিন , প্রােপেন প্রভৃতি উপজাতদ্রব্য উৎপাদন করা হয় ।

( খ ) পেট্রো রাসায়নিক শিল্প : তেল শােধনাগারকে কেন্দ্র করে এখানে একটি বৃহদায়তন পেট্রোরাসায়নিক শিল্প পশ্চিমবঙ্গ সরকার ও টাটা শিল্পপরিবারের যৌথ মালিকানায় গড়ে উঠেছে । বর্তমানে ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশন এর অন্যতম অংশীদার । তেল শােধনাগারের বিভিন্ন উপজাত দ্রব্য , যেমন — বেনজল , ন্যাপথা , বুটাডিন, প্রােপেন , ইথেন , ইথাইনল , প্রােপাইলিন প্রভৃতির ওপর ভিত্তি করে এই পেট্রোরাসায়নিক শিল্পকেন্দ্র স্থাপিত হয়েছে। ন্যাপথ্যা ক্র্যাকার ইউনিট , বুটাডিন এক্সট্রাকশান , বেনজিন এক্সট্রাকশান , পলিমার প্ল্যান্ট , নাইট্রোজেন প্ল্যান্ট প্রভৃতি কারখানায় প্লাস্টিক দ্রব্য , রং , আঠা , কৃত্রিমতত্ত্ব , কৃত্রিম রবার , পলিথিন প্রভৃতি তৈরি হয় । এই সমস্ত শিল্পজাত দ্রব্যকে কেন্দ্র করে আরও নানাবিধ অনুসারী শিল্পের বিকাশ ঘটছে ।

( গ ) রাসায়নিক সার : ‘ হিন্দুস্তান ফার্টিলাইজার কর্পোরেশন ‘ – এর অধীনে এই শিল্পাঞ্চলে । একটি সার কারখানা স্থাপন করা হয়েছে । তেল শোধনাগারে উৎপন্ন ন্যাপথা , তামিলনাড়ুর তুতিকোরিন থেকে লবণ , রানিগঞ্জ – ঝরিয়া থেকে কয়লা , মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলি থেকে রক ফসফেট এবং আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা থেকে আমদানিকৃত গন্ধক ও পটাশের সাহায্যে এখানে বিভিন্ন প্রকার সার উৎপাদিত হয় , যেমন — অ্যামােনিয়া , ইউরিয়া অ্যামােনিয়াম সালফেট , ফসফোরিক অ্যাসিড , সুফলা মিশ্রসার , মিথানল প্রভৃতি ।

( ঘ ) ফসফেট কারখানা : 1979 সালে ‘ হিন্দুস্তান লিভার ‘ এর উদ্যোগে এখানে ডিটারজেন্টের কাঁচামাল ফসফেট তৈরির একটি কারখানা স্থাপিত হয়েছে ।

( ঙ ) কীটনাশক ওষুধের কারখানা : শ ওয়ালেস ‘ কোম্পানির উদ্যোগে এখানে চার ধরনের কীটনাশক ওষুধ তৈরি কারখানা স্থাপিত হয়েছে ।

( চ ) ব্যাটারি কারখানা : ‘ ক্লোরাইড ইন্ডিয়া লিঃ এর অধীনে এখানে একটি ব্যাটারি তৈরির কারখানা স্থাপিত হয়েছে ।

( ছ ) অন্যান্য শিল্প : [ i ] ‘ হিন্দুস্তান লিভার ’ – এর অধীনে সাবান কারখানা , [ ii ] কলকাতা পাের্ট ট্রাস্টের অধীনে জাহাজ মেরামতের কারখানা , [ iii ] ‘ দি বার্ন স্ট্যান্ডার্ড কোম্পানীর অধীনে অফশাের প্রজেক্ট , [ iv ] সালফিউরিক অ্যাসিড ও সােডা অ্যাশ উৎপাদনের কারখানা , [ v ] কার্বন ব্ল্যাক তৈরির জন্য পেট্রোকার্বন কারখানা , [ vi ] সিমেন্ট তৈরির কারখানা , [ vii ] ক্ষুদ্রায়তন ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্প , [ vi ] বিস্কুটের কারখানা প্রভৃতি এখানে গড়ে উঠেছে ।

প্রস্তাবিত শিল্প : ভবিষ্যতে হলদিয়া শিল্পাঞ্চলে নানাবিধ শিল্প গড়ে ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে । এদের মধ্যে উল্লেখযােগ্য হল

( ক ) ভারী রাসায়নিক শিল্প : আমদানিকৃত অ্যামােনিয়াম সালফেট এবং নিকটবর্তী চুনাপাথর , লবণ প্রভৃতির সাহায্যে এখানে সােড়া অ্যাশ , কস্টিক সােড়া ও সালফিউরিক অ্যাসিড নির্মাণের কারখানা স্থাপন করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে ।

( খ ) জাহাজ নির্মাণ কারখানা : হলদিয়া ডককে কেন্দ্র করে এখানে একটি জাহাজ নির্মাণ ও মেরামতির কারখানা স্থাপনের পরিকল্পনা করা হয়েছে ।

( গ ) অন্যান্য শিল্প : এই শিল্পাঞ্চলে স্কুটার নির্মাণ , হালকা ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্প , ইলেকট্রনিক্স শিল্প , পেট্রোরাসায়নিক শিল্পকে কেন্দ্র করে বহু অনুসারী শিল্প গড়ে ওঠার পরিকল্পনা রয়েছে । ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা : হলদিয়া শিল্পাঞ্চলের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা খুব উজ্জ্বল । পেট্রোরাসায়নিক শিল্প গড়ে ওঠায় যে অজস্র অনুসারী শিল্প গড়ে উঠবে তাতে কেবলমাত্র হলদিয়া শিল্পাঞ্চল নয় , সমগ্র পশ্চিমবঙ্গের অর্থনৈতিক অবস্থার ব্যাপক উন্নতি হবে । কোলাঘাট তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পের সম্প্রসারণ , হলদিয়া ও ফলতা মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চল , কুলপী বন্দর এবং কুকরাহাটি রায়চকের মধ্য দিয়ে কলকাতার সঙ্গে সহজ যােগযােগের কাজ শেষ হলে এই শিল্পাঞ্চল ভারতের অন্যতম শ্রেষ্ঠ শিল্পাঞ্চলে পরিণত হবে আশা করা যায়।

আরও পডুনঃ পশ্চিমবঙ্গের ভূপ্রকৃতি

Leave a comment