খাদ্যের উপাদান সমূহ ও উপকারিতা | Food Ingredients and Benefits

খাদ্যের উপাদান সমূহ ও উপকারিতা | Food Ingredients and Benefits

■ ১) প্রোটিন উপাদান (আমিষজাতীয় খাদ্য)

ডিম, মাছ, মাংস, মেটে (লিভার), গুর্দা (কিডনি), চিজ, সোয়াবিন, চিনাবাদাম, ডাল, দুধজাতীয় খাদ্য ছানা প্রভৃতি খাদ্যের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন জাতীয় উপাদান থাকে।

উপকারিতা : শরীরের তাপ উৎপাদন, দেহের হজমক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ, দেহতন্তুর ক্ষতিপূরণ ও শরীরস্থ উপাদানসমূহ নির্মাণ প্রোটিন জাতীয় খাদ্যের প্রধান কাজ। শরীরের সঠিক গঠনের জন্য প্রোটিন অপরিহার্য একটি উপাদান।

■ ২) কার্বোহাইড্রেট উপাদান:- (শর্করাজাতীয় খাদ্য):

চাল, চিনি, আটা, ময়দা, মিষ্টি, মধু, আম, আলু, মিছরি, গুড়, চিড়া, মুড়কি, সাগু, বার্লি ইত্যাদিতে কার্বোহাইড্রেট জাতীয় উপাদান বর্তমান থাকে।

উপকারিতা : দৈনিক শক্তি, কর্মে উদ্যম, শরীরে তাপ উৎপাদন ও চর্বি গঠন কার্বোহাইড্রেটের প্রধান কাজ। এই জাতীয় খাদ্য দেহ গঠন ও সংরক্ষণের প্রধান উপাদান।

■ ৩) ফ্যাট বা চর্বি উপাদান (স্নেহজাতীয় খাদ্য) :

মাংসের চর্বি, মাখন, হোল মিল্ক, আইসক্রিম, বাদাম, তেল, ঘি, বনস্পতি, নারকেল তেল প্রভৃতি থেকে ফ্যাট বা চর্বি জাতীয় উপাদান থাকে।

উপকারিতা : কাজে উৎসাহ ও তৎপরতার জন্য ফ্যাট জাতীয় খাদ্য উৎপাদন অপরিহার্য। শরীরের তাপ উৎপাদন এবং চর্বি প্রস্তুতকরণ এই ফ্যাট জাতীয় খাদ্যের প্রধান কাজ।

■ ৪) মিনারেলস উপাদান (লবণজাতীয় খাদ্য) :

মাছ, শুকনো খাবার, মোওয়া, শুকনো ফল, সরষে, সবজি, সবুজ শাক, মোচা, কাঁচকলা, ডুমুর, খাদ্যলবণ প্রভৃতির মধ্যে মিনারেলস জাতীয় খাদ্য উৎপাদন বর্তমান থাকে।

উপকারিতা : লবণঘটিত উপাদান গুলি খাদ্যের মাধ্যমে আমাদের রক্তে সঞ্চিত হয় এছাড়া এটি রক্তবর্ধক রূপেও কাজ করে।

■ ৫) ভিটামিন উপাদান (খাদ্যপ্রাণ)

আমাদের শরীরের ভিটামিনের প্রয়োজন অত্যন্ত আবশ্যক। উৎস অনুসারে ভিটামিনকে কয়েকটি শ্রেণিতে ভাগ করা হয়েছে। এগুলি হল —

■ ভিটামিন ‘A’

উৎস:- গাজর, টমেটো, পেঁপে, পাকা আম, মাখন, তোল, পালংশাক, ইলিশ মাছ।

উপকারিতা : রাতকানা, মুখের ব্রণ, শরীরের বাড়বৃদ্ধি, পেটের অসুখের পক্ষে উপকারী।

■ ভিটামিন ‘B’

উৎস:- মুগডাল, ভেজানো ও অঙ্কুরিত ছোলা, ভুট্টা, কড়াইশুঁটি, সিম, ডিমের কুসুম, পালংশাক।

উপকারিতা : নার্ভ ও মস্তিষ্কের দুর্বলতা, নার্ভের ব্যথা, একটুতে রেগে যাওয়া, অলসতা, দৈহিক ও মানসিক পরিশ্রম, অজীর্ণ ও কোষ্ঠকাঠিন্য প্রভৃতিতে উপকারী।

■ ভিটামিন ‘C’ ­

উৎস:- টকজাতীয় ফল, কমলালেবু, মুসাম্বিলেবু, বাতাবি লেবু, তেঁতুল, পেয়ারা, আমলকি, আনারস, আখের রস।

উপকারিতা : সর্দিকাশি, দাঁতের রক্তপড়া, রক্ত চলাচলের পথকে সুগম করা, শরীরের ব্যথা ও ব্লাডপ্রেসার নিয়ন্ত্রণ করে।

■ ভিটামিন ‘D’

উৎস:- ঘি, মাখন, দুধ, ডিমের কুসুম, সূর্যের আলো, কড লিভার অয়েল।

উপকারিতা : হাড় বৃদ্ধিতে ভিটামিন ‘D’-এর প্রয়োজনীয়। যাদের দাঁতে পোকা হয়, রিকেট রোগ, মাংসপেশির খিঁচ ধরে তাদের এই ভিটামিন খুবই উপকারী।

■ ভিটামিন ‘E’ ­

উৎস:- অঙ্কুরিত ছোলা, বিন, বুটজাতীয় (মটরশুঁটি), কড়াইশুঁটি, সিমের বিচ।

উপকারিতা : প্রজনন গ্রন্থির বৃদ্ধি ও রক্তসঞ্চারের সহায়ক, মেয়েদের গর্ভস্থ সন্তানের পুষ্টির জন্য ‘E’ ভিটামিন বিশেষ প্রয়োজনীয়।

■ ভিটামিন ‘K’ ­

উৎস:- নানা রকমের শাকে ‘K’ ভিটামিন থাকে।

উপকারিতা : এই জাতীয় ভিটামিন রক্ত জমাট বাঁধতে সহায়তা করে। অধিক রক্তপাত বন্ধ করাতে সাহায্য করে।

■ ৬) জল

শোথ, উদরী প্রভৃতি ব্যতীত প্রায় অধিকাংশ রোগেই জল অপরিহার্য। শরীরের অপরাপর ক্রিয়ায় সহায়ক হয়। কোষ্ঠকাঠিন্য ও প্রস্রাব পরিষ্কার রাখতে জল সহায়তা করে।