ভারতের নির্বাচনী সংস্কারসমূহ | Electoral Reforms in India
■ ভারতের নির্বাচনী সংস্কারসমূহ (Electoral Reforms in India):-
উত্তর:: বিদ্যমান সামাজিক-রাজনীতিক ব্যবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে সমগ্র নির্বাচনী প্রক্রিয়াটির পূর্ণাঙ্গ পর্যালোচনা ও প্রয়োজনীয় সংস্কার সাধন প্রয়োজন। তারকুণ্ডে-কমিটি ১৯৭৫ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন পেশ করে। ১৯৮৩ সালের মার্চ মাসের ২৭ তারিখে তদানীন্তন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার আর.কে.ত্রিবেদী নির্বাচনী সংস্কারের উপর একটি ভাষণ দেন। এই ভাষণে তিনি নির্বাচনী সংস্কারের ব্যাপারে কতকগুলি সুপারিশ করেন। ১৯৯০ সালে দীনেশ গোস্বামী কমিটি নির্বাচন সম্পর্কিত সমস্যাদি সুরাহার স্বার্থে বেশ কিছু সমাধানমূলক সুপারিশ করে। নির্বাচনী সংস্কার সম্পর্কে সুপ্রীম কোর্ট ২০০২ সালের মে মাসে একটি ঐতিহাসিক রায় দেয়।
সুপ্রীম কোর্টের সিদ্ধান্ত অনুসারে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের সম্পর্কে সম্যকভাবে অবহিত হওয়ার অধিকার প্রত্যেক নাগরিকের আছে। সুপ্রীম কোর্টের নির্দেশে বলা হয় যে, নির্বাচন প্রার্থীদের মনোনয়নপত্রের সঙ্গে যাবতীয় তথ্যাদি দাখিল করতে হবে। এই সমস্ত তথ্যাদির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল শিক্ষাগত যোগ্যতা, সম্পত্তির হিসাব, দুর্নীতি বা অপরাধ সম্পর্কিত মামলা-মোকদ্দমা প্রভৃতি। নির্বাচন প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় কতকগুলি তথ্য রিটানিং অফিসারের কাছে পেশ করতে হবে।
❏ সংশ্লিষ্ট তথ্যগুলি হল : শিক্ষাগত যোগ্যতা, সম্পত্তির হিসাব, প্রার্থীর বিরুদ্ধে অতীতে কোন মামলা দায়ের হয়ে থাকলে, সংশ্লিষ্ট তথ্যাদি, প্রার্থীর বিরুদ্ধে দু’ বছরের অধিককাল চলা মামলা সম্পর্কিত তথ্যাদি, কোন দায়বদ্ধতা থাকলে সেবিষয়ে তথ্যাদি প্রভৃতি। কোন প্রার্থী উল্লিখিত তথ্যাদি পেশ করতে অস্বীকার করলে বা অসমর্থ হলে সংশ্লিষ্ট প্রার্থীর মনোনয়নপত্র রিটার্নিং অফিসার বাতিল করে দেবেন। ২০০২ সালের ডিসেম্বর মাসে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা সংসদে জনপ্রতিনিধিত্ব সংশোধিত আইন পাশ করে। জনপ্রতিনিধিত্ব সংশোধিত আইনে সুপ্রীমকোর্টের ২০০২ সালের ২ রা মে তারিখের ঐতিহাসিক রায়কে এবং নির্বাচন কমিশনের সংশ্লিষ্ট নির্দেশিকাকে বাতিল করে দেওয়া হয়। সম্পত্তি ও দায় দায়িত্বের খুঁটিনাটি বিবরণ দিতে হবে। কিন্তু শিক্ষাগত যোগ্যতা সম্পর্কিত তথ্যাদি প্রদান প্রসঙ্গে কিছু বলা হয়নি।