গুপ্ত ও গুপ্তোত্তর যুগের অর্থনৈতিক জীবন | Economic Life of the Gupta and Post-Gupta Periods




Hello Students,


Wellcome to edu.bengaliportal.com চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতির সেরা ঠিকানা,  edu.bengaliportal.com আজ আমরা নিয়ে এসেছি Economic Life of the Gupta and Post-Gupta Periods. প্রতিবছর বিভিন্ন পরীক্ষার যেমন  CTET | WBTET | WBCS । MPTET | ATET| UPTET | Rajasthan PTET | TNTET | Karnataka TET | RTET | HTET| PSTET। BANK EXAM। ইত্যাদি পরীক্ষার বিভিন্ন প্রস্তুতি পত্র আপনাদের বিনামূল্যে দিয়ে এসেছি। তাই Ajjkal.com আজ আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছে গুপ্ত ও গুপ্তোত্তর যুগের অর্থনৈতিক জীবন | Economic Life of the Gupta and Post-Gupta Periods

Ajjkal



গুপ্ত ও গুপ্তোত্তর যুগের অর্থনৈতিক জীবন | Economic Life of the Gupta and Post-Gupta Periods

অর্থনৈতিক জীবন : গুপ্তপূর্ব যুগে ভারতের অর্থনীতিতে যে সমৃদ্ধির জোয়ার এসেছিল, গুপ্তযুগের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিকে তার সমাপ্তি পর্ব বলা যায়। এই সমৃদ্ধির পিছনে গুপ্ত সম্রাটদের সবিশেষ অবদান ছিল। এই প্রসঙ্গে সমুদ্রগুপ্তের নাম বিশেষভাবে স্মরণীয়। পূর্ব ও দক্ষিণ-ভারতে তাঁর সামরিক অভিযানের ফলে ভারতের প্রায় সর্বত্র পণ্য চলাচল সহজতর হয়েছিল। কিন্তু তবুও গুপ্তযুগে ভূমিরাজস্বই ছিল সরকারি রাজস্বের মুখ্য উৎস, বাণিজ্যের স্থান ছিল গৌণ।



(১) কৃষি : সমকালীন সাহিত্য, লেখ এবং প্রত্নতাত্ত্বিক উপাদান থেকে জানা যায় যে, গুপ্তযুগে ধীরে, কিন্তু অনিবার্যভাবে কৃষির উন্নতি ও গুরুত্ব আগের তুলনায় বেড়েছিল। শুধু তাই নয়, কৃষির উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে কৃষিজমির চাহিদাও বেড়ে যাওয়ায় পতিত জমি উদ্ধার করে ও জলাভূমি শুকনো করে নতুন নতুন ভূখণ্ড চাষের আওতায় আনা হয়েছিল। গুপ্তযুগের লেখগুলিতে বারংবার পতিত জমি ক্রয়বিক্রয়ের বিবরণ থাকায় অনুমান করা যায় যে, এই ক্রয়বিক্রয় আর্থিক দিক থেকে লাভজনক হয়ে উঠেছিল এবং এর পিছনে রাষ্ট্রও উৎসাহ দিত। পতিত জমি ছাড়াও সেই যুগের রাজকীয় ও ব্যক্তিগত — এই দুই ধরনের জমি ছিল।




গুপ্তযুগে বঙ্গ, বিহার, আসাম, উড়িষ্যা এবং দক্ষিণভারতের উপকূলবর্তী যেসব অঞ্চলে জলের প্রাচুর্য ছিল সেখানে প্রচুর ধান উৎপন্ন হত। এছাড়া এই যুগের সাহিত্যে গম, তিল প্রভৃতি ফসল উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন ধরনের মাটির কথা বলা হয়েছে। গুপ্তযুগে উৎপন্ন চাল ও গম কেবল দেশের প্রয়োজনই মিটাতো না, তা বিদেশেও রপ্তানি করা হত। দক্ষিণ ভারত গোলমরিচ ও মশলার জন্য সুপরিচিত ছিল। এযুগের মহাকবি কালিদাস পশ্চিমঘাট পর্বতমালার দক্ষিণাংশ এবং মলয় পর্বতকে এলাচ ও চন্দন কাঠের উৎপত্তি স্থল বলেছেন।

(২) শিল্প ব্যবস্থা : গুপ্তযুগের শিল্প ব্যবস্থা সম্পর্কে জানতে হলে আমাদের তৎকালীন সাহিত্য, লেখ ও ভাস্কর্য নিদর্শন ছাড়াও পরবর্তীকালের সাহিত্য, বিশেষ করে হিউয়েন সাঙের বিবরণএবং বাণভট্টের হর্ষচরিতের উপর নির্ভর করতে হয়। সে যুগের ভারতবর্ষের বিভিন্ন শিল্পের মধ্যে বস্ত্রশিল্পের গুরুত্ব ছিল সবচেয়ে বেশি। এইসব বস্ত্রের মধ্যে সুতি, রেশম, মসলিন, লিনেন (ক্ষৌম বস্ত্র) এবং পশম বস্ত্র ছিল প্রধান। মথুরায় পাওয়া দণ্ডায়মান বুদ্ধমূর্তিতে গুপ্তযুগের প্রায় স্বচ্ছ রেশম ও মসলিনের নিদর্শন পাওয়া গিয়েছে। অজন্তার প্রাচীর চিত্রেও চার ধরনের বয়ন পদ্ধতির ছবি দেখা গিয়েছে। এযুগের উল্লেখযোগ্য বস্ত্রশিল্প কেন্দ্র ছিল : বারাণসী (মসলিন), মথুরা (ডোরাকাটা সুতিবস্ত্র), পুণ্ড্ররাজ্য (লিনেন) এবং পশ্চিম ভারতের বিভিন্ন শহর (রেশম)

এইসব বস্ত্রের দেশে ও বিদেশে প্রচুর চাহিদা ছিল। গুপ্তযুগের শেষের দিকে ভারতে রেশম উৎপাদন হ্রাস পায়। চিনের উন্নতমানের রেশমের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় ভারতীয় রেশম বস্ত্রের পিছু হঠা এবং রোমান সাম্রাজ্যের পতনের যুগে ইউরোপের পণ্য চাহিদা হ্রাস ছিল এর সম্ভাব্য প্রধান কারণ। গুপ্তযুগের অমরকোষ ও অন্যান্য সাহিত্য এবং বিভিন্ন ভাস্কর্য ও চিত্র থেকে জানা যায় যে এযুগের উল্লেখযোগ্য শিল্পের চর্মশিল্প মধ্যে চমশিল্প (চামড়ার পাখা, বোতল, জুতো), হাতির দাঁতের শিল্প, মৃৎশিল্প, ধাতুশিল্প এবং কারুশিল্প (পাথরকাটা ও খোদাই শিল্প) ছিল প্রধান। বিভিন্ন ধাতুশিল্পের উপাদান হিসেবে লোহা, তামা এবং সীসার ব্যবহার আগের মতোই ছিল। এযুগে ব্রোঞ্জের ব্যবহার আগের তুলনায় বেড়েছিল। গুপ্ত যুগে পশ্চিমভারত উৎকৃষ্ট মুক্তো উৎপাদন করে বিশেষ সমৃদ্ধি লাভ করেছিল্। গুপ্তযুগের অলংকার শিল্পও আগের যুগের চেয়ে উন্নত পর্যায়ে ছিল।

(৩) ব্যবসাবাণিজ্য : গুপ্তযুগের অভ্যন্তরীণ বাণিজ্যে সুতিবস্ত্রের বিশেষ প্রাধান্য ছিল। অভ্যন্তরীণ বাণিজ্যে পরিচিত স্থলপথগুলো ছাড়াও গঙ্গা, যমুনা, নর্মদা, গৈাদাবরী, কৃষ্ণা এবং কাবেরী নদী প্রধান বাণিজ্য জলপথ হিসেবে ব্যবহৃত হত।

(৪) গুপ্তযুগের বৈদেশিক বাণিজ্য : গুপ্তযুগে ভারতের রপ্তানি বাণিজ্যে বিশেষ কোনো পরিবর্তন হয়নি। পূর্ববর্তী যুগের মতো এই যুগেও ভারত থেকে তিল, গোলমরিচ প্রভৃতি মশলা, চন্দন কাঠ, মুক্তা ও মূল্যবান পাথর, মৃগনাভি প্রভৃতি সুগন্ধি দ্রব্য, নীল, সুতিবস্ত্র, তামা এবং নানারকম ওষুধ রপ্তানি করা হত। এযুগের রপ্তানি বাণিজ্যে ভারতের প্রধান প্রতিযোগী ছিল চিন। রোম সাম্রাজ্যের পতনের ফলে রোমের সঙ্গে বাণিজ্যের ঘাটতি পূরণ করতে গুপ্তযুগের ভারতীয় বণিকরা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার থাইল্যান্ড, জাভা, কম্বোডিয়া, সুমাত্রা প্রভৃতি অঞ্চলের দিকে নজর দেয়। এরই পরিণতি হিসেবে ধীরে ধীরে এইসব অঞ্চলে ভারতীয় উপনিবেশ গড়ে ওঠে এবং ভারতীয় সংস্কৃতির বিস্তার ঘটে।

গুপ্তযুগে আমদানি বাণিজ্যে পরিবর্তন দেখা দিয়েছিল। এই সময় চিন থেকে রেশম, পশ্চিম ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চল থেকে তামা, সিংহল থেকে নীলকান্তমণি এবং আফ্রিকার ইথিওপিয়া থেকে হাতির দাঁত এবং আরব, ইরাণ অথবা ব্যাকট্রিয়া থেকে হয় স্থলপথে না হয় জলপথে ঘোড়া আমদানি করা হত। এই যুগে পূর্ব ভারতের তাম্রলিপ্তি, পশ্চিম ভারতের কল্যাণ, দক্ষিণ ভারতের কাবেরীপত্তনম এবং পশ্চিম ভারতের সিন্ধু বহির্বাণিজ্যের গুরুত্বপূর্ণ বন্দর ছিল।







Note: পোস্ট টি অবশ্যই আপনার বন্ধুদের সাথে ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ এ শেয়ার করুন।