দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রত্যক্ষ কারণ | Direct Cause of World War II




Hello Students,


Wellcome to edu.bengaliportal.com চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতির সেরা ঠিকানা,  edu.bengaliportal.com আজ আমরা নিয়ে এসেছি Direct Cause of World War II. প্রতিবছর বিভিন্ন পরীক্ষার যেমন  CTET | WBTET | WBCS । MPTET | ATET| UPTET | Rajasthan PTET | TNTET | Karnataka TET | RTET | HTET| PSTET। BANK EXAM। ইত্যাদি পরীক্ষার বিভিন্ন প্রস্তুতি পত্র আপনাদের বিনামূল্যে দিয়ে এসেছি। তাই Ajjkal.com আজ আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রত্যক্ষ কারণ | Direct Cause of World War II

Ajjkal



দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রত্যক্ষ কারণ | Direct Cause of World War II

❏ ইংল্যান্ড ও ফ্রান্সের তোষণনীতি জার্মানি, ইতালি ও জাপানের শক্তি বাড়ায় ও তারা রাশিয়ার বিরুদ্ধে‘ কমিন্টার্ন বিরোধী চুক্তি ‘ সম্পন্ন করে সমর-সজ্জা শুরু করে। এই চুক্তির সংবাদে এবং ইংল্যান্ড ও ফ্রান্সের দুর্বলতায় আতঙ্কিত হয়ে রাশিয়া জার্মানির সঙ্গে’ অনাক্রমণ চুক্তি তে আবদ্ধ হয় (১৯৩৯ খ্রিস্টাব্দ)।



এর ফলে পূর্ব সীমান্তের দিক থেকে রাশিয়ার আক্রমণের সম্ভাবনা দূর হওয়ায় হিটলার নিশ্চিন্ত হন। তিনি দেখলেন যে ইতালি ও জাপান জার্মানির সঙ্গে মিত্রতায় আবদ্ধ; রাশিয়া নিরপেক্ষ, জাতিসংঘ মৃতপ্রায় এবং ইংল্যান্ড ও ফ্রান্স দুর্বল। এই অবস্থায় তাঁর আক্রমণাত্মক কাজকর্মে বাধা আসার আর কোনও সম্ভাবনা ছিল না। তাঁর দৃষ্টি পড়ল বাল্টিক সাগরের ডানজিগ বন্দর ও পোল্যান্ডের ওপর। তিনি ডানজিগ বন্দর ও পোলিশ করিডোর দাবি করলেন। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী চেম্বারলেন হিটলারের মনোভাব বুঝতে পেরে ঘোষণা করলেন যে, জার্মানি পোল্যান্ড আক্রমণ করলে ব্রিটেন পোল্যান্ডকে সাহায্য করবে। চেম্বারলেনের চেষ্টায় ব্রিটেন, ফ্রান্স ও পোল্যান্ডের মধ্যে এক চুক্তি সম্পন্ন হয়। ব্রিটেন পোল্যান্ড সম্পর্কে জার্মানিকে সতর্ক করে দেয়। কিন্তু হিটলার তা অগ্রাহ্য করে পোল্যান্ড আক্রমণ করেন (১ লা সেপ্টেম্বর ১৯৩৯ খ্রিস্টাব্দ)। এই অবস্থায় দুদিন পর ইংল্যান্ড ও ফ্রান্স জার্মানির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করলে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়ে যায়।




দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের গতিপ্রবাহ :

● (১) দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সূচনার ফলে বিগত দুই দশকের যুদ্ধবিরতি পর্বের অবসান ঘটে। ১৯৩৯ খ্রিস্টাব্দের ১ লা সেপ্টেম্বর জার্মানি পোল্যান্ড আক্রমণ করলে আনুষ্ঠানিকভাবে যুদ্ধের সূত্রপাত হয়। এই যুদ্ধে এক পক্ষ ছিল জার্মানি ও ইতালি। যুদ্ধ শুরু হওয়ার দুবছর পর জাপান জার্মানির পক্ষে যোগ দেয়। অপর পক্ষে ছিল ইংল্যান্ড , ফ্রান্স, আমেরিকার যুক্তরাষ্ট্র ও সোভিয়েট রাশিয়া। মানব ইতিহাসের ভয়ংকরতম এই যুদ্ধ ইউরোপ , এশিয়া ও আফ্রিকা এই তিন মহাদেশেই চলে ছয় বছর ধরে।

● (২) দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রথম দিকে সামরিক সংগঠনের ও রণনীতির দিক থেকে জার্মানি সুবিধাজনক অবস্থায় ছিল। জার্মানির পোল্যান্ড আক্রমণের সময় ব্রিটেন ও ফ্রান্স মোটেই প্রস্তুত ছিল না এবং ঠিক সেই সময় সোভিয়েট ইউনিয়ন জার্মানির সঙ্গে অনাক্রমণ চুক্তি বন্ধনে আবদ্ধ। ব্রিটেন ও ফ্রান্সের তুলনায় জার্মানির সেনা সংখ্যা কম হলেও, সমরোপকরণ ও রণনীতির দিক থেকে জার্মানি অনেক উন্নত ছিল। সেই সময় জার্মানির বিমানের সংখ্যা ছিল ১২,০০০ এবং প্রতিমাসে ১২০০ বিমান তৈরি করার ক্ষমতা জার্মানির ছিল। অন্যদিকে, মিত্রপক্ষের বিমানের সংখ্যা ছিল ৮,০০০ এবং প্রতিমাসে ৭০০ -র বেশি তৈরি করার ক্ষমতা মিত্রপক্ষের ছিল না। জার্মানির জঙ্গি-বিমানের সঙ্গে জল ও স্থল বাহিনীর ঘনিষ্ঠ যোগ ছিল। আধুনিক সমরাস্ত্রের সঙ্গে সেনাবাহিনীর ঘনিষ্ঠ পরিচয় থাকার জন্য সুদক্ষ শিল্প-পরিকল্পনাও থাকা প্রয়োজন। যুদ্ধের সূচনায় শিল্পোন্নয়নের দিক থেকে জার্মানির স্থান ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ঠিক পরেই । কিন্তু পশ্চিমী গণতন্ত্রী রাষ্ট্রগুলির যুদ্ধের কোনো পরিকল্পনা বা প্রস্তুতি ছিল না।




● (৩) দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সূচনার এক বছরের মধ্যেই প্রায় সমগ্র ইউরোপে জার্মানির একচ্ছত্র প্রাধান্য স্থাপিত হয়। কিন্তু ১৯৪১ খ্রিস্টাব্দে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ইতিহাসে দুটি আলোড়নকারী ঘটনা এই যুদ্ধের চরিত্রের গুণগত পরিবর্তন ঘটায়। প্রথমত, ১৯৪১ সালের ২২ শে জুন জার্মান সৈন্যবাহিনী রাশিয়া আক্রমণ করলে রুশ-জার্মান অনাক্রমণ চুক্তির অবসান ঘটে এবং ইংল্যান্ড, ফ্রান্স এবং রাশিয়া একসঙ্গে অক্ষশক্তির বিরুদ্ধে মহাজোটে আবদ্ধ হয়। অন্যদিকে, ১৯৪১ সালের ৭ ই ডিসেম্বর জাপান প্রশান্ত মহাসাগরে পার্ল হারবারে মার্কিন ঘাঁটির ওপর বোমাবর্ষণ করলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও জার্মানি ও জাপানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে।

● (৪) ১৯৪৩ সাল থেকে যুদ্ধের গতিধারা অক্ষশক্তির বিপক্ষে চলে যায়। স্ট্যালিনগ্রাডের যুদ্ধে জার্মান বাহিনী রাশিয়ার কাছে চূড়ান্তভাবে পরাজিত হয়। অন্যদিকে ইতালি আত্মসমর্পণে বাধ্য হয়। ১৯৪৪ সালের জুন মাসে দ্বিতীয় রণাঙ্গন খোলা হয় এবং মিত্রপক্ষ জার্মানীর বিরুদ্ধে প্রবল আঘাত হানে। ১৯৪৫ সালের ৭ ই মে জার্মানি আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মসমর্পণ করে। এরপর জাপানের উপর পরমাণু বোমা ফেলা হয় (আগস্ট, ১৯৪৫ খ্রিঃ)। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরমাণু বোমায় জাপানের হিরোসিমা এবং নাগাসাকি নামে দুই সমৃদ্ধ জনপদ সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়। এর কিছুদিনের মধ্যেই জাপান আত্মসমর্পণ করে।

● (৫) দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপের কৃষি ও খনিজ পণ্যসামগ্রী আহরণ করে হিটলার জার্মান অর্থনীতিকে এমনভাবে পরিপুষ্ট করতে চেয়েছিলেন যে, ‘যুদ্ধ বাধলেও তা হবে এক ক্ষণস্থায়ী, আঞ্চলিক ও একপেশে যুদ্ধ’। কিন্তু জার্মানি পোল্যান্ড আক্রমণ করার সঙ্গে সঙ্গে ব্রিটেন ও ফ্রান্স পোল্যান্ডের পাশে এসে দাঁড়াল। পোল্যান্ডকে কেন্দ্র করে যে যুদ্ধ বাধল, তা বিদ্যুৎ গতিতে সারা ইউরোপ মহাদেশে ছড়িয়ে পড়ল। পরিশেষে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার বিশাল সহায়সম্পদ নিয়ে মিত্রপক্ষে যোগ দিলে (১৯৩৯-১৯৪৫ খ্রিঃ) এক সার্বিক বিশ্বযুদ্ধ শুরু হল। ছয় বছর ধরে বিস্তীর্ণ অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়া এই বিশাল যুদ্ধের বোঝা সামলানো জার্মানির পক্ষে সম্ভব ছিল না। যুদ্ধের হুংকার দিয়ে হিটলার নিজেই সর্বনাশা মহাযুদ্ধের জালে আবদ্ধ হয়ে নিজের দেশের শোচনীয় পরিণতি ডেকে আনলেন। এই যুদ্ধে জার্মানি পরাজিত হল আর হিটলার স্বয়ং লোকচক্ষুর আড়ালে আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে বাধ্য হয়েছিলেন।




Note: পোস্ট টি অবশ্যই আপনার বন্ধুদের সাথে ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ এ শেয়ার করুন।