তুড়িৎ পদার্থের সংজ্ঞা ও প্রকারভেদ | Definition and Types of Iron
■ তুড়িৎ পদার্থের সংজ্ঞা ও প্রকারভেদ (Definition and Types of Iron) :
■ তড়িৎ-পরিবাহী:- যেসব পদার্থের মধ্য দিয়ে তড়িৎ প্রবাহিত করলে তা তড়িৎ পরিবহনে সক্ষম হয়, তাদের তড়িৎ-পরিবাহী পদার্থ বলে; যেমন — সোনা, রুপো, তামা, গভৃতি ধাতু, গ্রাফাইট, সোডিয়াম ক্লোরাইড দ্রবণ ইত্যাদি। তড়িৎ পরিবহনে সক্ষম এমন পদার্থগুলিকে দুটি শ্রেণিতে ভাগ করা যায়;
● (i) ধাতব পরিবাহী,
● (ii) তড়িৎ-বিশ্লেষ্য পদার্থ।
■ (i) ধাতব পরিবাহী:- যেসব পদার্থ তড়িৎ পরিবহন করে কিন্তু তড়িৎ পরিবহন করলে শুধু উষ্মতার পরিবর্তন ঘটে কিন্তু কোনো স্থায়ী রাসায়নিক পরিবর্তন হয় না, সেই পদার্থগুলিকে ধাতব পরিবাহী বলে। যেমন— Cu, Fe, Ag ইত্যাদি ধাতু। গ্রাফাইট এবং গ্যাস কার্বন অধাতু হলেও তড়িৎ পরিবহনে সক্ষম। এই জাতীয় পরিবাহীর মধ্য দিয়ে তড়িৎ প্রবাহের সময় ইলেকট্রন কণা তড়িৎ পরিবহন করে।
■ (ii) তড়িৎ-বিশ্লেষ্য পদার্থ:- যে সব পদার্থ গলিত অবস্থায় বা জলে দ্রবীভূত অবস্থায় তড়িৎ পরিবহন করে এবং তড়িৎ পরিবহনের সময় যে সব পদার্থের রাসায়নিক পরিবর্তন ঘটে ভিন্ন ধর্মবিশিষ্ট নতুন পদার্থ উৎপন্ন করে, সেই সব পদার্থকে তড়িৎ-বিশ্লেষ্য পদার্থ বলে। অ্যাসিড, ক্ষার, লবণ জাতীয় পদার্থগুলি হল এই শ্রেণির পরিবাহী। H2SO4, HCl, NaOH, NaCl প্রভৃতি এই জাতীয় পদার্থগুলি আয়নে বিশ্লিষ্ট হয়ে তড়িৎ পরিবহন করে।
■ তড়িৎ-অপরিবাহী বা অন্তরক:- যেসব পদার্থের মধ্য দিয়ে সহজে তড়িৎ প্রবাহ হয় না, সেগুলিকে অন্তরক পদার্থ বলে। যেমন — কাঠ, রবার, কাচ, পলিথিন ইত্যাদি।
■ তুড়িৎ-বিশ্লেষ্য পদার্থ (Electrolytes):-
❏ সংজ্ঞা:- যে সব পদার্থ জলে দ্রবীভূত বা গলিত অবস্থায় আয়নে বিশ্লিষ্ট হয়ে তড়িৎ পরিবহন করে এবং তড়িৎ পরিবহনের ফলে নিজেরা রাসায়নিক ভাবে বিশ্লিষ্ট হয়ে নতুন ধর্মবিশিষ্ট পদার্থ উৎপন্ন হয়, সেই সব পদার্থকে তড়িৎ-বিশ্লেষ্য পদার্থ বলে।
● (i) অ্যাসিড (সালফিউরিক, নাইট্রিক, হাইড্রোক্লোরিক প্রভৃতি),
● (ii) ক্ষার (কস্টিক সোডা, কস্টিক পটাশ ইত্যাদি),
● (iii) লবণ (সোডিয়াম ক্লোরাইড, জিঙ্ক সালফেট, ম্যাগনেসিয়াম ক্লোরাইড ইত্যাদি)।
এই জাতীয় পদার্থগুলি গলিত অবস্থায় বা জলে দ্রবীভূত অবস্থায় তড়িৎ পরিবহন করে এবং তড়িৎ পরিবহন করার সঙ্গে সঙ্গে পদার্থগুলির রাসায়নিক পরিবর্তন ঘটে নতুন পদার্থ উৎপন্ন হয় —এইগুলি সব তড়িৎ-বিশ্লেষ্য পদার্থ।
■ তড়িৎ-বিশ্লেষণ (Electrolysis):-
যে পদ্ধতিতে উপযুক্ত দ্রাবকে দ্রবীভূত অবস্থায় কিংবা বিগলিত অবস্থায় তড়িৎ বিশ্লেষ্য পদার্থের মধ্য দিয়ে তড়িৎপ্রবাহ চালনা করলে ওই পদার্থের রাসায়নিক বিয়োজন ঘটে নতুন ধর্মবিশিষ্ট পদার্থ উৎপন্ন হয়, সেই পদ্ধতিকে তড়িৎ-বিশ্লেষণ বলে।