The great Constitution of India-1949 খ্রি. ভারতের সংবিধান রচনা বৈশিষ্ট্য মৌলিক অধিকার

Constitution of India: The Constituent Assembly was the first to publicize the draft constitution. 635 amendment proposals were submitted on the draft constitution. Finally, after a lo ng trial, the new constitution of independent India was adopted by the Constituent Assembly of India on 26 November 1949. The 274 members present signed the constitution.India’s constitution is a great Constitution of India.

ভারতের সংবিধান রচনা ও প্রবর্তন (Composition and introduction of the Constitution of India):

দীর্ঘ প্রায় দুশো বছর পরাধীন থাকার পর ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ১৫ ই আগস্ট ভারতবর্ষ স্বাধীনতা লাভ করে।

গণপরিষদঃ

১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ১৮ ই জুলাই ভারতীয় স্বাধীনতা আইনে ‘ নতুন রাষ্ট্রের গণপরিষদের হাতে সংবিধান রচনার ভার দেওয়া হয়েছিল । ভারতীয় গণপরিষদের প্রথম সভাপতি হন । ড . রাজেন্দ্রপ্রসাদ । তিনি গণপরিষদের সদস্যদের দ্বারা স্থায়ী সভাপতিরূপে নির্বাচিত হয়েছিলেন।

ভারতের সংবিধান খসড়া প্রস্তুত কমিটি (Committee for Drafting the Constitution of India) :

ড . ভীমরাও রামজী আম্বেদকরের ( Dr. B.R. Ambedkar ) নেতৃত্বে পাঁচজন সদস্যকে নিয়ে একটি সংবিধান খসড়া প্রস্তুত কমিটি গঠন করা হয় । মাত্র ছয় মাসের মধ্যে এই কমিটি অত্যন্ত কৃতিত্বের সঙ্গে খসড়া সংবিধানটি রচনা করে গণপরিষদের কাছে পেশ করে।

ভারতের সংবিধান গৃহীত (Introduced the Constitution of India):

গণপরিষদ খসড়া সংবিধানটিকে সর্বপ্রথম জনসাধারণের মধ্যে প্রচার করে। খসড়া সংবিধানের ওপর ৭৬৩৫ টি সংশােধনী প্রস্তাব জমা পড়েছিল। অবশেষে দীর্ঘ বিচার বিবেচনার পর ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দের ২৬ শে নভেম্বর ভারতীয় গণপরিষদে স্বাধীন ভারতের নতুন সংবিধানটি গৃহীত হয়।উপস্থিত ২৮৪ জন সদস্য সংবিধানে স্বাক্ষর করেন।

ভারতের সংবিধান প্রবর্তিত (Introduced the Constitution of India):

১৯৫০ খ্রিস্টাব্দের ২৬ শে জানুয়ারি থেকে এই নতুন সংবিধান প্রবর্তিত হয়।

ভারতের সংবিধানের প্রস্তাবনাঃ

ভারতীয় সংবিধানের প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে — ‘আমরা, ভারতের জনগণ, ভারতকে সার্বভৌম , সমাজতান্ত্রিক , ধর্মনিরপেক্ষ , গণতান্ত্রিক , সাধারণতন্ত্ররূপে গড়ে তুলতে এবং তার সকল নাগরিকই যাতে সামাজিক , অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ন্যায়বিচার , চিন্তা , মতপ্রকাশ , বিশ্বাস , ধর্ম এবং উপাসনার স্বাধীনতা , সামাজিক প্রতিষ্ঠা অর্জন ও সুযােগের সমতা প্রতিষ্ঠা এবং তাদের সকলের মধ্যে ব্যক্তির মর্যাদা এবং জাতীয় ঐক্য ও সংহতি সুনিশ্চিতকরণের মাধ্যমে তাদের মধ্যে যাতে ভ্রাতৃত্বের ভাব গড়ে ওঠে তার জন্য সত্যনিষ্ঠার সঙ্গে শপথ গ্রহণ করে , আমাদের গণপরিষদে আজ ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দের ২৬ শে নভেম্বর , এতদ্বারা এই সংবিধান গ্রহণ , বিধিবদ্ধ ও নিজেদের অর্পণ করছি । ‘ ( The basic philosophy of the constitution of India is to be found in essence , in the preamble itsell . )

১৯৭৬ খ্রিস্টাব্দের ৪২ তম সংবিধান সংশােধনের মাধ্যমে সমাজতান্ত্রিক’ ও ‘ ধর্মনিরপেক্ষ ’ শব্দদুটি সংযােজন করা হয়েছে।

সংবিধানের প্রধান প্রধান বৈশিষ্ট্যঃ

ভারতীয় সংবিধানের প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলি হলঃ

( ১ ) ভারতীয় সংবিধান বিশাল ও জটিল।

( 2 ) এটি যুক্তরাষ্ট্রীয় কিন্তু কেন্দ্রমুখী বা আধা – যুক্তরাষ্ট্রীয়।

( ৩ ) একই সঙ্গে নমনীয়তা ও কঠোরতার সমন্বয়।

( ৪ ) পার্লামেন্টারি শাসনব্যবস্থার প্রবর্তন।

( ৫ ) মৌলিক অধিকারের স্বীকৃতি।

( ৬ ) রাষ্ট্র পরিচালনার নির্দেশাত্মক নীতির প্রবর্তন।

( ৭ ) ধর্মনিরপেক্ষতা।

( ৮ ) এক নাগরিকতা।

( ৯ ) মৌলিক কর্তব্য পালনের নির্দেশ।

( ১০ ) সুপ্রিম কোর্টের গঠন।

সংবিধানের বিশালতা ও জটিলতাঃ ভারতীয় সংবিধানের সর্বাপেক্ষা উল্লেখযােগ্য বৈশিষ্ট্য হল এর বিশালতা ও জটিলতা। বিশ্বের লিখিত সংবিধানগুলির মধ্যে ভারতের সংবিধান সর্বাপেক্ষা বিশাল , জটিল ও বিষয় তথা তথ্যবহুল । ভারতীয় সংবিধান প্রবর্তনের সময় এতে মােট ৩৯৫ টি ধারা এবং ৮ টি তপশিল ( Schedule ) ছিল। তারপর থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত সংবিধান বহুবার ( ৯৬ বার ) সংশােধিত হয়েছে। এই সংশােধনের ফলে কিছু অংশ যেমন সংযােজিত হয়েছে , আবার কিছু অংশ বিয়ােজিত হয়েছে। এভাবে সংবিধানের হ্রাস – বৃদ্ধি করার ফলে এর আকার আরও বিশাল হয়ে গেছে। তপশিলের সংখ্যা ৮ থেকে বেড়ে ১২ হয়েছে এবং ধারার সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ৪০৫ টি। এভাবে আকৃতিতে বৃহৎ ও তথ্যবহুল হওয়ায় প্রকৃতিগতভাবে সংবিধানটি জটিল হয়ে পড়েছে।

নাগরিকদের মৌলিক অধিকারঃ ভারতীয় সংবিধানে ভারতীয় নাগরিকদের জন্য ছয়টি মৌলিক অধিকার আছে। মৌলিক অধিকারগুলি হল-

( ১ ) সাম্যের অধিকার।

( 2 ) স্বাধীনতার অধিকার।

( ৩ ) শােষণের বিরুদ্ধ অধিকার।

( ৪ ) ধর্মীয় স্বাধীনতার অধিকার।

( ৫ ) শিক্ষা – সংস্কৃতির অধিকার।

( ৬ ) শাসনতন্ত্রিক প্রতিবিধানের অধিকার।

এছাড়া সম্পত্তির অধিকার পূর্বে মৌলিক অধিকার থাকলেও ১৯৭৮ খ্রিস্টাব্দে সংবিধানের ৪৪ তম সংশােধনের মাধ্যমে তা মৌলিক অধিকার থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।

মৌলিক অধিকারগুলির বৈশিষ্ট্যঃঃ

ভারতীয় সংবিধানের অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য হল ভারতীয় নাগরিকদের মৌলিক অধিকার প্রদান করা। ভারতীয় সংবিধানর ১৪ থেকে ৩৫ ধারার মধ্যে এই মৌলিক অধিকারগুলির কথা উল্লেখ আছে। আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান অনুসারে ভারতীয় সংবিধানেও এই মৌলিক অধিকারগুলি সংযুক্ত করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে হ্যারল্ড জন ল্যাস্কি মন্তব্য করেছেন— A State is known by the systems of rights it maintain.

( ১ ) কেন্দ্রীয় বা রাজ্য সরকার কর্তৃক প্রণীত কোনো আইন মৌলিক আধিকারগুলি ক্ষুন্ন করতে পারে না।

( ২ ) মৌলিক অধিকার লঙ্ন করা হলে যে – কোনাে নাগরিক তার প্রতিকারের জন্য আদালতের শরণাপন্ন হতে পারে।

( ৩ ) কিন্তু এই সকল অধিকার নিরঙ্কুশ নয় ; রাষ্ট্রের প্রয়ােজনে এগুলিকে হ্রাস বা স্থগিত করা যাবে।

( ৪ ) এছাড়া জরুরি অবস্থার সময় মৌলিক অধিকারগুলি আইনে বলবৎযােগ্য হবে না।

আরও পড়ুনঃ ভারতের বিভিন্ন আদিবাসী বিদ্রোহ

Leave a comment