ঠান্ডা যুদ্ধ বা স্নায়ুযুদ্ধ Content of The Cold War 1947-1991 খ্রিষ্টাব্দ, সংজ্ঞা,পটভূমি, কারণ

Cold War : In 1947, the famous American intellectual and journalist Walter Lippmann first used the term “Cold War” At the time, the two largest powers in the world, the United States and Soviet Russia, were reluctant to miss any opportunity to corner each other. In the aftermath of World War II, the United States and Soviet Russia – the long-running war between the two great powers – a kind of uncomfortable conflict between peace and what is called the Cold War.

ঠান্ডা যুদ্ধের সংজ্ঞা (Definition of Cold War):

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় মিত্রশক্তি বা সােভিয়েত রাশিয়া , মার্কিনযুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনের সম্মিলিত জোট নিজেদের মধ্যে সহযােগিতার ভিত্তিতে অক্ষশক্তি অর্থাৎ জার্মানি – ইতালি – জাপানের মিলিত শক্তির বিরুদ্ধে চূড়ান্তভাবে জয়ী হয় । কিন্তু অক্ষশক্তির পতনের আগে থেকেই মিত্রশক্তির বিভিন্ন সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে পারস্পরিক সন্দেহ ও অবিশ্বাস দানা বাধতে থাকে । জার্মানি ও জাপানের চূড়ান্ত পরাজয়ের পর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হলে কালক্রমে এই অবিশ্বাস ও সন্দেহ পারস্পরিক তিক্ততায় পরিণত হয় ।

১৯৪৭ সালে প্রখ্যাত মার্কিন বুদ্ধিজীবী ও সাংবাদিক ওয়াল্টার লিপম্যান ঠাণ্ডা যুদ্ধ বা Cold War ‘ কথাটি প্রথম ব্যবহার করেন । এই সময় বিশ্বের দুই বৃহৎ শক্তি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আর সােভিয়েত রাশিয়া একে অন্যকে কোণঠাসা করার কোনও সুযােগ হাতছাড়া করতে রাজি ছিল না । দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তী সময় পর্বে মার্কিনযুক্তরাষ্ট্র ও সােভিয়েত রাশিয়া – এই দুই বৃহৎ শক্তির মধ্যে বহুদিন ধরে চলতে থাকা যুদ্ধ ও শান্তির মাঝামাঝি এক ধরনের অস্বস্তিকর সংঘাতমূলক পরিবেশকে এককথায় ঠাণ্ডা যুদ্ধ (The Cold War) বলা হয় । ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দের পর প্রায় পঞ্চাশ বছর ধরে সমস্ত পৃথিবীর রাজনীতি ঠাণ্ডা যুদ্ধের জালে জড়িয়ে পড়েছিল ।

লিপম্যান - The Cold War
লিপম্যান – The Cold War

ঠান্ডা যুদ্ধের উৎস প্রকৃতি (The source of the Cold War is nature):

ঠাণ্ডা যুদ্ধের উৎস , প্রকৃতি ও দায়িত্ব নিয়ে তর্কবিতর্কের শেষ নেই । ঐতিহাসিক , চিন্তাবিদ , রাজনীতিবিদ সমস্ত মহলেই ঠাণ্ডা যুদ্ধ (The Cold war) সম্পর্কে আলােচনার ঝড় উঠেছে। এটি আদর্শগত দ্বন্দ্ব ক্ষমতার দ্বন্দ্ব ? ঠাণ্ডা যুদ্ধের জন্য কে দায়ী ? মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র না সােভিয়েট ইউনিয়ন ?

বস্তুতপক্ষে ঠাণ্ডা যুদ্ধ ছিল বিশ্বের দুই মহাশক্তি ( super power ) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও সােভিয়েট ইউনিয়নের মধ্যে এক দীর্ঘস্থায়ী সংঘাত । এই সংঘাতকে দুই শিবিরের লড়াই বলা যেতে পারে , কারণ :

প্রথমত , দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বিশ্বের রাজনীতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও সােভিয়েত রাশিয়ার নেতৃত্বে দুটি বিবদমান শিবিরে বিভক্ত হয়ে পড়ে । দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ফলে । জার্মানি, জাপান , ইতালির পতন হয় আর মিত্রপক্ষের ব্রিটেন ও ফ্রান্স দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধের আঘাতে ক্লান্ত ও বিধ্বস্ত হয়ে পড়ে । এর ফলে বিশ্ব রাজনীতিতে দুটি মহাশক্তির অভ্যুদয় হয় — কিন্তু এদের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করা সম্ভব হয় নি । লুই হ্যালে দুটি দেশের সংঘাতকে ‘ scorpion ( কাঁকড়া বিছে ) ও tarantula ‘ ( মাকড়সা ) র সংঘাত বলে মন্তব্য করেছেন ।

দ্বিতীয়ত , ঠাণ্ডা লড়াই (The Cold War) – এর আগমনের মূলে ছিল যুদ্ধকালীন মহাজোটের অবসান । জার্মান আক্রমণ প্রতিহত করার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র , ব্রিটেন ও সােভিয়েট রাশিয়া মহাজোট গঠন করে যৌথভাবে জার্মানি ও জাপানের বিরুদ্ধে লড়াই করে । কিন্তু অক্ষশক্তির পতন ঘটলে মহাজোটের প্রয়ােজনীয়তা ফুরিয়ে যায় এবং মিত্র দেশগুলি তখন শত্রুতে পরিণত হয় । আমেরিকা পক্ষাবলম্বী পাশ্চাত্য ঐতিহাসিকদের মতে , সােভিয়েট রাশিয়ার অনমনীয় দৃষ্টিভঙ্গি ও পূর্ব ইউরােপে তার বিস্তারধর্মী ও সম্প্রসারণবাদী তৎপরতা পাশ্চাত্য দেশগুলির মনে ভীতি সৃষ্টি করেছিল । ব্রিটিশ রাষ্ট্রনীতিবিদ চার্চিল পূর্ব ইউরােপে সােভিয়েট রাশিয়ার একতরফা প্রভাব স্থাপনে গভীর আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন । ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দের মার্চে এক ভাষণে তিনি পূর্ব ইওরােপে রাশিয়ার আগ্রাসী কার্যকলাপকে “ লৌহ যবনিকার আচ্ছাদন ” বলে মন্তব্য করেন ।

তৃতীয়ত , দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সােভিয়েট রাশিয়া নিজের স্বার্থে সংরক্ষণমূলক সংযমী নীতি গ্রহণ করেছিল । কিন্তু মার্কিন রাষ্ট্রপতি রুজভেল্ট – এর আকস্মিক মৃত্যুর পর নতুন রাষ্ট্রপতি হ্যারি টুম্যান – এর অনমনীয় কঠোর মনােভাব রাশিয়াকে আশঙ্কিত করে তুলেছিল । এইভাবেই দুটি দেশের যুদ্ধকালীন উষ্ম সম্পর্কের ছেদ পড়ে — গরম যুদ্ধের পর ঠাণ্ডা যুদ্ধের (The Cold War) হিমশীতল পরিবেশ সৃষ্টি হয।

ঠাণ্ডা যুদ্ধের প্রথম পর্ব (The first episode of the Cold War):

ঠাণ্ডা যুদ্ধের সূচনা ও প্রসারে দুটি সুস্পষ্ট পর্যায় দেখা যায় । ১৯৪৫ থেকে ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ঠাণ্ডা লড়াই – এর স্নায়ুকেন্দ্র ছিল ইউরােপ মহাদেশ । এই সময়ে সােভিয়েত ইউনিয়নকে সংযত ও প্রতিহত করাই ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মূল লক্ষ্য । এই লক্ষ্য পূরণের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র রাজনৈতিক , অর্থনৈতিক ও সামরিক — এই তিন ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করে।

( ১ ) রাজনৈতিক পদক্ষেপ : মার্কিন রাষ্ট্রপতি হ্যারি টুম্যান – এর ঘােষণায় ঠাণ্ডা যুদ্ধের (The Cold War) আনুষ্ঠানিক সূচনা ঘটে । ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ১২ ই মার্চ মার্কিন কংগ্রেসে প্রদত্ত ভাষণে রাষ্ট্রপতি টুম্যান সাম্যবাদকে প্রতিহত করার জন্য যে নীতি ঘােষণা করেন তা টুম্যান তত্ত্ব ( Truman Doctrine ) নামে পরিচিত । টুম্যান বলেছিলেন যে , বিদেশি রাষ্ট্রের প্ররােচনায় অথবা ভেতরের মুষ্টিমেয় গােষ্ঠীর সশস্ত্র হিংসাত্মক কার্যকলাপে বিভিন্ন দেশের স্বাধীনতা আজ বিপন্ন।

তাই বিশ্বের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য প্রয়ােজনীয় সাহায্য দান হল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রধানতম দায়িত্ব । ঐ সময়ে কমিউনিস্টদের কার্যকলাপে গ্রীসও তুরস্ক বেসামাল হয়ে পড়েছিল । তাই গ্রীস ও তুরস্ককে ঢালাও মার্কিন সাহায্য দিয়ে ঐ দুটি দেশে কমিউনিস্টদের প্রতিপত্তি খর্ব করা হয় । আসলে টুম্যান চেয়েছিলেন মধ্যপ্রাচ্য যেন পূর্ব ইউরােপের মতাে রাশিয়ার কুক্ষিগত না হয় । ওখানকার অফুরন্ত তৈলসম্ভার আহরণ করার উদ্দেশ্যেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সক্রিয় হস্তক্ষেপমূলক নীতি গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয় ।

( ২ ) অর্থনৈতিক পদক্ষেপ : সাম্যবাদী প্রসার রােধ করার উদ্দেশ্যে টুম্যানের সক্রিয় হস্তক্ষেপমূলক নীতিকে অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে প্রয়ােগ করা হয় মার্শাল পরিকল্পনায় । ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের জুন মাসে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন মার্শাল অর্থনৈতিক সহায়তা সংক্রান্ত পরিকল্পনার প্রস্তাব দিলে ষােলােটি ইউরােপীয় দেশ সেই প্রস্তাবে সায় দেয় । সােভিয়েত রাশিয়া সমেত সমস্ত ইউরােপীয় দেশকে মার্শাল পরিকল্পনা গ্রহণের জন্য আহ্বান জানানাে হয় , কিন্তু সােভিয়েত রাশিয়া ও তার অনুগামী পূর্ব ইউরােপের দেশগুলি এই পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যান করে । তাদের বক্তব্য ছিল , অর্থনৈতিক সহযােগিতার আবরণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিজের আধিপত্য কায়েম করতে চাইছে ’ তবে ব্রিটেন , ফ্রান্স , ইতালি ও পশ্চিম জার্মানি সমেত মােট সতেরােটি দেশ মার্শাল পরিকল্পনার মাধ্যমে প্রচুর পরিমাণে আর্থিক সহযােগিতা পায় ।

জন মার্শাল
জন মার্শাল

( ৩ ) সামরিক পদক্ষেপ : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মার্শাল পরিকল্পনা ’ ও টুম্যান নীতির যৌথ প্রয়ােগে ইউরােপে সােভিয়েত প্রভাবকে সীমাবদ্ধ রাখা সম্ভব হলেও এই মহাদেশকে ঠাণ্ডা লড়াই – এর হাত থেকে বাঁচানাে সম্ভব হয় নি ।

সােভিয়েট প্রতিক্রিয়া :

ঠাণ্ডা যুদ্ধের (The Cold War) সময়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সক্রিয় প্রতিরােধ নীতির পাল্টা জবাব হিসেবে পূর্ব ইউরােপে সােভিয়েত নিয়ন্ত্রণের মাত্রা বৃদ্ধি পায় । প্রথমত , সাম্যবাদী প্রচার জোরদার করার জন্য এশিয়া কামিনফর্ম নামে একটি সংস্থা গঠন করে । মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে একনাগাড়ে প্রচার চালানাে এবং পূর্ব ইউরােপের ৮ – টি কমিউনিস্ট রাষ্ট্রকে নিজেদের কঠোর নিয়ন্ত্রণে রাখা ছিল এই সংস্থাটি গঠনের মূল উদ্দেশ্য । দ্বিতীয়ত , সােভিয়েত প্রতিক্রিয়ার সবচেয়ে বড়াে পদক্ষেপ ছিল পশ্চিম বার্লিন অবরােধ ।

এই সময় জার্মানি , পশ্চিম জার্মানি ও পূর্ব জার্মানি এই দুই রাষ্ট্রে বিভক্ত ছিল । পূর্ব জার্মানি ছিল সােভিয়েত রাশিয়ার অনুগামী । বার্লিন শহরটি পূর্ব জার্মানির মধ্যে অবস্থিত হওয়ায় পশ্চিম বার্লিন শহরটি পশ্চিম জার্মানির এক্তিয়ারভুক্ত হলেও ভৌগােলিক দিক থেকে বিচ্ছিন্ন ছিল । রাশিয়া পশ্চিম জার্মানির সঙ্গে পশ্চিম বার্লিনের সংযােগ পথ অবরুদ্ধ করে দেয় এবং প্রায় এক বছর ধরে এই অবরােধ চলে ( ১৯৪৮ ১৯৪৯ ) । কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিমানযােগে খাদ্য ও ত্রাণ সরবরাহ করে পশ্চিম বার্লিনের জনগণের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা অব্যাহত রাখে।

মার্কিন প্রতিক্রিয়া :

বার্লিন অবরােধ – এর অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে পশ্চিম ইউরােপের নিরাপত্তা রক্ষার উদ্দেশ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উদ্যোগে একটি সামরিক জোট গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় (এপ্রিল , ১৯৪৯ ) । এই সামরিক জোট উত্তর আটলান্টিক চুক্তি সংস্থা বা ন্যাটো ( NATO ) নামে পরিচিত।

[ ২ ] ঠাণ্ডা যুদ্ধের দ্বিতীয় পর্ব (The second episode of the Cold War):

১৯৫০ খ্রিস্টাব্দের পর ঠাণ্ডা লড়াই আর ইউরােপে সীমাবদ্ধ থাকে নি , কারণ :

( i ) ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দের অক্টোবর মাসে চিনে কমিউনিস্ট সরকার ক্ষমতাসীন হয় ।

( ii ) ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দের পর সুদূর প্রাচ্য , দক্ষিণ – পূর্ব এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের আঞ্চলিক সংঘাতকে কেন্দ্র করে ঠাণ্ডা লড়াই (The Cold War) বিশ্বব্যাপী চরিত্র ধারণ করে।

( iii ) সুদূর প্রাচ্যে কমিউনিস্ট শাসিত উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে মার্কিন অনুগত দক্ষিণ কোরিয়ার প্রকাশ্য সংঘর্ষশুরু হয় । মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ কোরিয়ার পক্ষ সমর্থন করে।

( iv ) দক্ষিণ – পূর্ব এশিয়ায় ভিয়েতনামে কমিউনিস্ট পরিচালনাধীন । উত্তর ভিয়েতনামের সঙ্গে দক্ষিণ ভিয়েতনামের মার্কিন মদতপুষ্ট সরকারের দীর্ঘদিন ধরে যুদ্ধ চলে । মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কমিউনিস্ট প্রভাব ঠেকিয়ে রাখার জন্য দক্ষিণ ভিয়েতনামের হয়ে যুদ্ধে জড়িয়ে পরেন । শেষ পর্যন্ত ১৯৭৫ খ্রিস্টাব্দে দক্ষিণ ভিয়েতনাম মার্কিন নিয়ন্ত্রণ মুক্ত হয় এবং সমগ্র ভিয়েতনামে সাম্যবাদী সরকার ক্ষমতায় আসে।

( v ) এই সময় মধ্যপ্রাচ্যেও ঠাণ্ডা লড়াইয়ের প্রভাব পড়েছিল। মধ্যপ্রাচ্যের প্যালেসটাইন অঞ্চলের দখল নিয়ে সদ্য প্রতিষ্ঠিত । ইসরায়েলরাষ্ট্রের সঙ্গে আরব দেশগুলির ঘােরতর সংঘাত বেধে গেলে এই অঞ্চলকে সােভিয়েত প্রভাবমুক্ত রাখার জন্য পাশ্চাত্য দেশগুলি ইসরায়েলকে মদত দিতে শুরু করে । এদিকে আরব জগতের নেতা মিশরের রাষ্ট্রপতি নাসের , সুয়েজ খাল জাতীয়করণ করার সিদ্ধান্ত নেন । এরপর মিশরের বিরুদ্ধে ব্রিটেন , ফ্রান্স ও ইসরায়েল যৌথভাবে আক্রমণ চালালে সােভিয়েত রাশিয়া আরব দেশগুলিকে সমর্থন জানায় । এরপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্যে হস্তক্ষেপ নীতি গ্রহণ করে । মার্কিন । রাষ্ট্রপতি আইসেনহাওয়ার এই সম্পর্কে সুস্পষ্ট মার্কিন নীতি ঘােষণা করেন । আজও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই অঞ্চলে সক্রিয় হস্তক্ষেপ নীতি চালিয়ে যাচ্ছে।

( vi ) ঠাণ্ডা যুদ্ধের (The Cold War) সময় বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে সংকটজনক পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আঞ্চলিক স্তরে সামরিক জোট গঠনের তৎপরতা দেখা দেয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ – পূর্ব এশিয়ায় সিয়াটো (SEATO ) ও মধ্যপ্রাচ্যে সেনটো (CENTO ) – এই দুটি সামরিক জোট গড়ে তুললে তার জবাবে সােভিয়েত ইউনিয়নও ওয়ারশ চুক্তি ( Warsaw Pact) নামে সামরিক জোট গঠন করে।

প্রায় পঞ্চাশ বছর ধরে চলতে থাকা ঠাণ্ডা যুদ্ধকে(The Cold War) রিচার্ড ক্ৰকেট ‘ The Fifty years war নামে অভিহিত করেছেন । ইতিমধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী সােভিয়েত ইউনিয়নে সাম্যবাদী রাষ্ট্রব্যবস্থার অবলুপ্তি ঘটায় ( ১৯৯১ খ্রিস্টাব্দে ) বিশ্বের প্রধান দুই শিবিরের অস্বস্তিকর সংঘাতের অবসান হয় । এই দুই শিবিরের সংঘাত থেকেই ঠাণ্ডা লড়াই শুরু হয়েছিল ।

ঠান্ডা লড়াইয়ের কারণ (The cause of the cold war):

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তির সময় থেকেই ঠাণ্ডা যুদ্ধের সূচনা হয় । এই যুদ্ধের কারণ সম্পর্কে ঐতিহাসিকদের মধ্যে মতভেদ আছে । অনেকের মতে মার্কিন গণতন্ত্রবাদ ও রুশ সমাজতন্ত্রবাদের মধ্যে আদর্শগত লড়াই ঠাণ্ডা যুদ্ধের (The Cold War) সূচনা করে । অধ্যাপক হার্টম্যানের মতে , এই দুই বৃহৎশক্তির দৃষ্টিভঙ্গি ও তত্ত্বগত প্রভেদের কারণেই ঠাণ্ডা যুদ্ধের সূচনা হয়।

আর . কে . গারথপের 160 , the conflict between the communist powers and the rest of the world waged by means short of overt major war . অনেকের মতে , দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর আমেরিকা অর্থনৈতিক দিক দিয়ে সব থেকে শক্তিশালী হওয়ায় সে বিশ্বে তার বাজার তৈরির চেষ্টা করে । এর ফলে রাশিয়ার সঙ্গে তার বিরােধ বাধে । প্রকৃতপক্ষে , ঠাণ্ডা যুদ্ধের পিছনে এই দুই বৃহৎ শক্তির পারস্পরিক রাজনৈতিক , অর্থনৈতিক ও সামরিক স্বার্থই দায়ী ছিল । এভাবে দুই শক্তি বিশ্বযুদ্ধোত্তর পরিস্থিতিতে বিশ্বে নিজ নিজ ক্ষমতা ও প্রভাব বৃদ্ধির স্বার্থেই ঠাণ্ডা যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়।

( ১ ) অবিশ্বাসের সূচনা

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জার্মানি রাশিয়াকে আক্রমণ করলে রাশিয়ার অবস্থা খুবই সঙ্গীন হয়ে ওঠে । এই পরিস্থিতিতে রাশিয়া তার ওপর জার্মান আক্রমণের চাপ কমানাের উদ্দেশ্যে ইঙ্গ – মার্কিন নেতৃত্বের কাছে পশ্চিম ইউরােপে একটি দ্বিতীয় রণাঙ্গন খােলার আবেদন জানায় । কিন্তু ইঙ্গ – মার্কিন শক্তি তা ঝুলিয়ে রাখে । কিন্তু রাশিয়ার পালটা আক্রমণে যখন জার্মানবাহিনী বিধ্বস্ত হয়ে গেল তখন ইঙ্গ – মার্কিন শক্তি ফ্রান্সে দ্বিতীয় রণাঙ্গন খােলে । এর ফলে মিত্রপক্ষের উদ্দেশ্য সম্পর্কে রাশিয়ার মনে গভীর সন্দেহ ও অবিশ্বাস দেখা দেয়।

( ২ ) পােল্যান্ডের নির্বাচন

এই অবস্থায় ইয়াল্টা বৈঠকে তিন প্রধান মিলিত হয়ে মােটামুটি কাজ চালানাের মতাে একটি সমাধানে পৌঁছালেও তা দীর্ঘদিন স্থায়ী হল না । ইয়াল্টা বৈঠকে স্টালিন ঘােষণা করেন রাশিয়ার নিরাপত্তার স্বার্থে পােল্যান্ড , রুমানিয়া প্রভৃতি তার প্রতিবেশী দেশে রাশিয়ার মিত্রভাবাপন্ন সরকার ছাড়া অন্য সরকারকে রাশিয়া মেনে নেবে না । নির্বাচনে কমিউনিস্ট সরকার নির্বাচিত হলে উভয়ের মধ্যে অবিশ্বাস ও সন্দেহ দৃঢ় হতে থাকে কেননা মার্কিন রাষ্ট্রপতি হ্যারি ট্রুম্যান এই অঞলে । রুশদের আধিপত্য মানতে রাজি ছিলেন না।

( ৩ ) আণবিক বােমার ব্যবহার

এই পরিস্থিতিতে পটল্ডাম সম্মেলন চলাকালীন টুম্যানের কাছে সংবাদ আসে যে আমেরিকান বিজ্ঞানীরা সফলভাবে আণবিক বােমার পরীক্ষা করেছেন । এই সংবাদে তিনি আরও বেশি করে রাশিয়াবিরােধী মনােভাব দেখান । ইয়াল্টা চুক্তি অনুযায়ী জাপানের বিরুদ্ধে রাশিয়ার যুদ্ধে অগ্রসর হওয়ার কথা থাকলেও আমেরিকার সামরিক নেতারা আণবিক বােমা ব্যবহার করে জাপানকে আত্মসমর্পণ করাতে টুম্যানকে প্রভাবিত করে । আণবিক বােমা ব্যবহার করে জাপানকে আত্মসমর্পণের পাশাপাশি আমেরিকা পরােক্ষভাবে রাশিয়াকেও শাসিয়ে দিল।

( ৪ ) পররাষ্ট্রমন্ত্রী সম্মেলনে বিরােধ

অক্ষশক্তিভুক্ত বিভিন্ন দেশের সঙ্গে শান্তিচুক্তির খসড়া তৈরি করার জন্য আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র , সােভিয়েত রাশিয়া , ইংল্যান্ড , ফ্রান্স ও চিন এই পাঁচটি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের নিয়ে একটি কাউন্সিল গঠিত হয় । কিন্তু এই কাউন্সিলের প্রতিটি অধিবেশনেই রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মলােটোভ – এর সঙ্গে অন্য চার দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বিভিন্ন বিষয়ে মতবিরােধ দেখা দেয়।

( ৫ ) ফুলটন বক্তৃতা

এই সময়ে পূর্ব ইউরােপে কমিউনিস্টদের প্রভাব ও আধিপত্য বৃদ্ধি পেতে থাকে , যা পশ্চিমী দেশগুলিকে সন্ত্রস্ত করে তােলে । এই পরিস্থিতিতে ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দের ৫ ই মার্চ ইংল্যান্ডের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিল আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের ফুলটন শহরের ওয়েস্টমিনিস্টার কলেজে এক বক্তৃতায় পূর্ব ইউরােপে রাশিয়ার অগ্রগতি সম্পর্কে সকলকে সতর্ক করে দিয়ে এর বিরুদ্ধে প্রতিরােধ গড়ে তােলার পরামর্শ দেন । তার এই বক্তৃতা ফুলটন বক্তৃতা ’ ( Fulton Speech ) নামে পরিচিত । তিনি আমেরিকাকে সতর্ক করে দিয়ে বলেন যে , উত্তরে বাল্টিকের স্টেটিন থেকে আড্রিয়াটিকের ট্রিয়েস্ট পর্যন্ত সম্পূর্ণ এলাকা সােভিয়েত ও লৌহ যবনিকার অন্তরালে চলে গেছে ।

এখনও যদি আমেরিকা সতর্ক হয় তাহলে রাশিয়া পুরাে ইউরােপকেই গ্রাস করবে । চার্চিলের এই বক্তৃতা আমেরিকায় তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে যা আমেরিকাকে রুশবিরােধী নীতি গ্রহণে চাপ সৃষ্টি করে । অনেক ঐতিহাসিকের মতে এই বক্তৃতাই ঠাণ্ডা যুদ্ধের (The Cold War) সূচনা করেছিল ।

( ৬ ) টুম্যান নীতি

এদিকে গ্রিস , তুরস্ক ও ইরানে রুশ অনুপ্রবেশের আশঙ্কা দেখা দিলে ওই দেশগুলিকে রুশ প্রভাব থেকে মুক্ত করার উদ্দেশ্যে ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ১২ ই মার্চ প্রেসিডেন্ট ট্রুম্যান তুরস্ক , গ্রিসসহ বিশ্বের যে কোনাে দেশে রুশ আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সামরিক ও আর্থিক সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দেন । এই ঘােষণা পরিচিত ‘ টুম্যান নীতি ’ নামে । এই নীতি দ্বারা আমেরিকা বিশ্বের অ – কমিউনিস্ট সরকারগুলিকে কমিউনিস্ট আক্রমণের মােকাবিলায় স্বেচ্ছায় পুলিশি দায়িত্ব গ্রহণ করে । আইজ্যাক ওয়েসচারের মতে , টুম্যান নীতি ’ ছিল ঠাণ্ডা লড়াইয়ের ( The Cold War) আনুষ্ঠানিক ঘােষণা।

প্রেসিডেন্ট ট্রুম্যান
প্রেসিডেন্ট ট্রুম্যান

( ৭ ) মার্শাল পরিকল্পনা

এরপর ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ৫ ই জুন আমেরিকা যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউরােপের আর্থিক পুনরুজ্জীবনের জন্য মার্শাল পরিকল্পনা পেশ করে । এই পরিকল্পনা অনুসারে আমেরিকা মােট ১২ হাজার মিলিয়ন ডলার ব্যয় করে । রাশিয়া ও তার প্রভাবাধীন পূর্ব ইউরােপের দেশগুলিকে এই সাহায্য থেকে দূরে রাখা হল।

( ৮ ) রাশিয়ার প্রতিক্রিয়া

রাশিয়া মার্শাল পরিকল্পনায় ক্ষুব্ধ হয়ে ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের সেপ্টেম্বর মাসে তার মিত্রদেশগুলিকে নিয়ে গড়ে তােলে কমিনফর্ম (COMINFORM বা Communist Information Bureau )।এভাবে ঠাণ্ডা যুদ্ধ ক্রমে তার উত্তাপ ছড়াতে থাকে। এরপর রাশিয়া ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দের ২৪ শে জুলাই পশ্চিম বার্লিন অবরােধ করে । কিন্তু মিত্রপক্ষের তৎপরতায় রাশিয়া অবরােধ তুলে নিলেও এই ঘটনায় উভয়পক্ষের মধ্যে বিদ্বেষ বৃদ্ধি পায় । ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দের সেপ্টেম্বর মাসে রাশিয়া আণবিক বােমার পরীক্ষা চালালে পশ্চিমী দুনিয়া চমকে ওঠে।

( ৯ ) বিভিন্ন জোট গঠন

উভয়পক্ষই পরমাণু শক্তিতে বলীয়ান হলে উভয়েই তাদের প্রভাব বৃদ্ধিতে সচেষ্ট হয় । ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দের ৪ ঠা এপ্রিল কানাডাসহ ইউরােপের ১২ টি দেশকে নিয়ে আমেরিকা । গড়ে তােলে ‘ উত্তর আটলান্টিক চুক্তি সংস্থা বা NATO । মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলি নিয়ে গঠিত হয় Central Treaty Organisation বা CENTO ৷ দক্ষিণ – পূর্ব এশিয়ার দেশগুলি নিয়ে গড়ে ওঠে South – East Asia Treaty Organisation বা SEATO I একই লক্ষ্যে রাশিয়া ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দে গঠন করে কমিকন ’ ( COMECON – Council for Mututal Economic Assistance ) । ১৯৫৫ খ্রিস্টাব্দে রাশিয়া পূর্ব ইউরােপের দেশগুলিকে নিয়ে গঠন করে ‘ ওয়ারশ চুক্তি জোট ’ (Warsaw Pact )।

অবশেষে বলা যায়, ঠান্ডা লড়াই আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ একটি ঘটনাপর্ব; মূলত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে সমগ্র বিশ্ব দুইটি শিবিরে ভাগ হয়ে যায়। যথা: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে পুঁজিবাদী ধনতান্ত্রিক রাষ্ট্রজোট এবং সোভিয়েত নেতৃত্বাধীন সমাজতান্ত্রিক শিবির। বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী পর্বে মার্কিন আধিপত্যবাদ-এর সূচনা হয় এবং হিরোশিমা ও নাগাসাকি আণবিক বিস্ফোরণ এর মধ্যে দিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার পারমানবিক শ্রেষ্ঠত্ব প্রদর্শন করে ফলে মার্কিন এই ঔদ্ধত্য রুশ শিবিরকে ঠান্ডা যুদ্ধে ( The Cold War) সামিল করে।

বিশ্ব অর্থনৈতিক দিকে থেকে শক্তিশালী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বযুদ্ধের অব্যবহিত পরেই রুশ আধিপত্যবাদের বিনাশ সাধনে অগ্রসর হয় এবং উইনস্টন চার্চিল এর ফালটন বক্তৃতা ও ১৯৪৭ এর মার্শাল পরিকল্পনার মধ্যে দিয়ে এই চেতনার বহিঃপ্রকাশ ঘটে। যাই হোক এভাবে ঠান্ডা লড়াই বা স্নায়ুযুদ্ধ (The Cold War) শুধুমাত্র ইউরোপীয় রাজনীতিকেই নয় বরং সমগ্র বিশ্ব রাজনীতিকে প্রভাবিত করেছিল এবং পরবর্তী সংকটসমূহ যেমন কিউবা, কোরিয়া এবং নানা সংঘাত ও ছোটো খাটো যুদ্ধসমূহ আন্তর্জাতিক আঙিনায় এক জটিলাবস্থা ও প্রবল রেষারেষির উদ্ভব ঘটায়।

এশিয়ার মাটিতে এই রেষারেষি বেশি প্রবল হয়ে ওঠে এবং পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্রসমূহের এই প্রতিদ্বন্দ্বিতা ব্যাপক অনিশ্চয়তা ও রুদ্ধশ্বাস টানাপোড়েন এর জন্ম দেয় ফলে বিশ্বশান্তি বিনষ্ট হয়। ন্যাটো, সিয়াটোর পাশাপাশি রুশশক্তির গঠিত ওয়ারশ চুক্তি এই স্নায়ুযুদ্ধকে এক অন্য মাত্রায় নিয়ে যায়। জার্মানির বিভক্তিকরণ এবং ইউরোপীয় নিরাপত্তার সন্ধান এই সময়কালে অন্যতম বিষয় ছিল যা ঠান্ডাযুদ্ধ কর্তৃক প্রভাবিত হয় ফলে দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে অবর্ণনীয় জটিলতার প্রসার ঘটায়। চিরায়ত, বাস্তববাদী এবং সংশোধনবাদী ঐতিহাসিক ব্যাখ্যায় এই ঠান্ডা লড়াইয়ের বিশ্লেষণ উঠে এসেছে।

লিপম্যান এর বক্তব্য এপ্রসঙ্গে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ কেননা তিনি তার “The Cold war” গ্রন্থে বিশ্বযুদ্ধত্তোর পর্বের স্নায়ুযুদ্ধের চরিত্র ও কাঠামো ব্যাখ্যা করেছেন। ঐতিহাসিক ফ্লেমিং মার্কিন রাজনৈতিক নীতিগত দিকে থেকে বিশ্লেষণ করেছেন। গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় হলো যে, কোরিয়া যুদ্ধের সূত্র ধরে ঠান্ডা লড়াই ( The Cold War) রাজনীতিতে ইউরোপকেন্দ্রিকতার সীমানা অতিক্রম করে এশিয়া ভূখণ্ডেও মার্কিন বেষ্টনী নীতি জমাট হয়। এভাবেই দীর্ঘ সময় ধরে ঠান্ডা লড়াই এক নতুন ধরনের লড়াই বিশ্বকে উপহার দেয় যাকে আটকানো সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের নিকট সম্ভবপর ছিলো না এবং ভারতবর্ষের মতো তৃতীয় বিশ্বের কিছু দেশ জোট নিরপেক্ষতাকে হাতিয়ার করে নিজেদের দূর অবস্থান বজায় রাখে।

আরো পড়ুনঃ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ সম্পর্ক

Leave a comment