ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্রের বৈশিষ্ট্য | Characteristics of United States of India
❏ ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্রের বৈশিষ্ট্য (Characteristics of United States of India):-
■ ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্রের বৈশিষ্ট্য:-
উত্তর:: ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার বৈশিষ্ট্যগুলি নিম্নরূপ: (১) ভারতে একটি কেন্দ্রীয় সরকার এবং কতকগুলি আঞ্চলিক সরকার বর্তমান।
(২) ভারতে একটি মাত্র লিখিত সংবিধান আছে। তবে আঞ্চলিক সরকারগুলি পৃথক সংবিধান দ্বারা পরিচালিত হয় না।
(৩) ভারতের সংবিধান দেশের সর্বোচ্চ আইন। একটি সংবিধানের মধ্যে থেকে উভয় ধরনের সরকার নিজ নিজ এক্তিয়ারের মধ্যে ক্ষমতা ভোগ করে।
(৪) ভারতীয় সংবিধানে কেন্দ্র, রাজ্য ও যুগ্ম তালিকার মাধ্যমে বিস্তারিত ক্ষমতা কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে বন্টন করা হয়।
(৫) ভারতের সংবিধান অংশত দুষ্পরিবর্তনীয় এবং অংশত সুপরিবর্তনীয়।
(৬) ভারতের সংবিধানে প্রশাসনিক ও রাজস্ব সংক্রান্ত ক্ষমতাও বন্টন করা হয়েছে।
(৭) ভারতে একটি যুক্তরাষ্ট্রীয় আদালত বৰ্তমান।
■ ভারতের নাগরিকদের মৌলিক অধিকারের সাংবিধানিক সীমাবদ্ধতাসমূহ:-
উত্তর:: মৌলিক অধিকারগুলি অবাধ বা অনিয়ন্ত্রিত নয়। কোন রাষ্ট্রই তার নাগরিকদের অবাধে সীমাহীন অধিকার ভোগের সুযোগ দেয় না। কারণ অবাধ ও অনিয়ন্ত্রিত অধিকার স্বৈরাচারের নামান্তর। ভারতেও প্রয়োজনবোধে রাষ্ট্র অধিকারগুলির উপর সমাজ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে যুক্তিসঙ্গত বাধানিষেধ আরোপ করতে পারে। পার্লামেন্ট এই উদ্দেশ্যে আইন প্রণয়ন করতে পারে।
তা ছাড়া সংবিধানেই কতকগুলি অধিকার প্রদান করার সঙ্গে সঙ্গে তাদের উপর কতকগুলি নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয়েছে। উদাহরণ হিসাবে ১৯ ধারার স্বাধীনতার অধিকারের উল্লেখ করা যায়। অনেকে এই কারণে ভারতীয় সংবিধানের মৌলিক অধিকারকে ‘সীমিত মৌলিক অধিকার’ (Limited Fundamental Rights) বলে থাকেন। তবে আরোপিত বাধানিষেধের বৈধতা ও যৌক্তিকতা আদালত বিচার করে দেখতে পারে। এবং অযৌক্তিক ও অসাংবিধানিক বাধানিষেধকে অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করতে পারে। এ ক্ষেত্রে একটি মত হল যে অধিকারগুলিই হল মৌলিক, বাধানিষেধগুলি নয়। ভারতের পার্লামেন্ট বিভিন্ন সময়ে আইন প্রণয়নের মাধ্যমে মৌলিক অধিকারের উপর বাধানিষেধ আরোপ করেছে। তার ফলে স্বীকৃত অধিকার অনেক ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধ অধিকারে রূপান্তরিত হয়েছে।
■ মৌলিক অধিকার বলবৎকরণের পাঁচটি লেখ।
উত্তর:: ভারতের সংবিধানের ৩২ নং ধারা অনুসারে সুপ্রীমকোর্ট কেবলমাত্র মৌলিক অধিকার লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে পাঁচ প্রকার লেখ জারী করতে পারে। হাইকোর্টগুলিও ২২৬ ধারা অনুসারে লেখ জারি করতে পারে। পাঁচ ধরনের লেখ হল:
(১) বন্দী-প্রত্যক্ষীকরণ: কোন ব্যক্তিকে কেন আটক করা হয়েছে তা জানার জন্য আদালত আটককারীর উপর এই লেখ জারী করে এবং আটক ব্যক্তিকে সত্বর স্ব-শরীরে আদালতের সামনে হাজির করার আদেশ দেয়। এই লেখ জারীর মাধ্যমে আদালত বে-আইনীভাবে আটক ব্যক্তিকে মুক্তি দেয় বা তার দ্রুত বিচারের ব্যবস্থা করে।
(২) পরমাদেশ: পরমাদেশ কথার অর্থ আমরা আদেশ করি। এরদ্বারা আদালত কোন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান, অধস্তন আদালতকে নিজ পদের আইনানুগ কর্তব্য পালনের জন্য নির্দেশ দেয়।
(৩) প্রতিষেধ : ‘প্রতিষেধ’ -এর অর্থ নিষেধ করা। এর দ্বারা ঊর্ধ্বতন আদালত নিম্নতন আদালতকে নিজ সীমার মধ্যে থেকে কাজ করতে নির্দেশ দেয়। উচ্চ আদালতের ‘প্রতিষেধ’ অমান্য করলে অমান্যকারী ব্যক্তিকে আদালত অবমাননার দায়ে অভিযুক্ত করা যায়। প্রতিষেধ কেবলমাত্র বিচার বা বিচারের অনুরূপ কাজের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, আইন বা শাসনসংক্রান্ত কাজের ক্ষেত্রে নয়।
(৪) অধিকার পৃচ্ছা: এর অর্থ হল ‘কোন্ অধিকারে’। কোন ব্যক্তি যদি এমন কোন অধিকার বা পদ দাবি করেন যা আইনসঙ্গতভাবে তিনি করতে পারেন না, তাহলে আদালত উক্ত দাবির বৈধতা বিচারের জন্য এই লেখ প্রয়োগ করতে পারে এবং দাবি বৈধ প্রমাণিত না হলে উক্ত ব্যক্তিকে পদচ্যুত করা হয়।
(৫) উৎপ্রেষণ: এ কথার অর্থ “আরও বিশদভাবে অবহিত হওয়া”। এই লেখটির সাহায্যে নিম্নতর আদালত বা বিচার করার ক্ষমতা আছে এমন প্রতিষ্ঠান নিজের এক্তিয়ারের বাইরে গেলে মামলাকে উচ্চতর আদালতে স্থানান্তরিত করা হয় এবং এক্তিয়ার বহির্ভূত সিদ্ধান্তকে বাতিল করা হয়।