ভারতে সুলতানি রাজত্বের পতনের কারণ | Causes of Decline of Sultanate in India




Hello Students,


Wellcome to edu.bengaliportal.com চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতির সেরা ঠিকানা,  edu.bengaliportal.com আজ আমরা নিয়ে এসেছি Causes of Decline of Sultanate in India. প্রতিবছর বিভিন্ন পরীক্ষার যেমন  CTET | WBTET | WBCS । MPTET | ATET| UPTET | Rajasthan PTET | TNTET | Karnataka TET | RTET | HTET| PSTET। BANK EXAM। ইত্যাদি পরীক্ষার বিভিন্ন প্রস্তুতি পত্র আপনাদের বিনামূল্যে দিয়ে এসেছি। তাই Ajjkal.com আজ আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছে ভারতে সুলতানি রাজত্বের পতনের কারণ | Causes of Decline of Sultanate in India

Ajjkal



ভারতে সুলতানি রাজত্বের পতনের কারণ | Causes of Decline of Sultanate in India

কুতুবউদ্দিন আইবেক প্রতিষ্ঠিত দিল্লির সুলতানি সাম্রাজ্য শক্তিশালী ভিত্তির ওপর স্থাপিত হয়ে এই উপমহাদেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে আধিপত্য বিস্তারে সমর্থ হয়। প্রায় ৩০০ বছরের বেশি সময় ধরে আপন অস্তিত্ব বজায় রাখার পর পাণিপথের প্রথম যুদ্ধেই (১৫২৬) সুলতানি সাম্রাজ্যের সম্পূর্ণ পতন ঘটে। কী কারণে এই সুবিশাল সাম্রাজ্যের পতন ঘটল তার কারণ অনুসন্ধান করে ঐতিহাসিকরা নিম্নলিখিত বিষয়গুলি উল্লেখ করেছেন।



[১] জনসমর্থনের অভাব : দিল্লির সুলতানি শাসনের পিছনে কোনও জনসমর্থন ছিল না, ছিল না শাসক ও শাসিতের মধ্যে সুসম্পর্ক বা যোগসূত্র। এই শাসনের মূল ভিত্তি ছিল সামরিক শক্তি। কিন্তু শুধুমাত্র সামরিক শক্তির ওপর ভিত্তি করে কোনও সাম্রাজ্যই দীর্ঘস্থায়ী হয়না। সুলতানি শাসনের পতন এই সত্যিকেই প্রমাণ করে।




[২] সাম্রাজ্যের বিশালতা : সুলতান আলাউদ্দিন খলজির আমল থেকেই সুলতানি সাম্রাজ্য বিশাল আকার ধারণ করে। ভৌগোলিক দূরত্ব, ভাষাগত বিচ্ছিন্নতা এবং সর্বোপরি যোগাযোগ ব্যবস্থার অপ্রতুলতার ফলে একজন শাসকের পক্ষে এই বিশাল সাম্রাজ্য পরিচালনা করা এক কথায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। অর্থাৎ, সুলতানি সাম্রাজ্যের বিশালতাই এই সাম্রাজ্যের পতনকে অনিবার্য করে তোলে।

[৩] নেতৃত্বের দুর্বলতা : দিল্লির সুলতানী সাম্রাজ্য ছিল অনেকাংশেই সুলতানের নেতৃত্ব ও ব্যক্তিগত গুণাবলীর ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু পরবর্তী দিনের সুলতানরা ছিলেন বিলাসপ্রিয় এবং অকর্মণ্য। তাঁদের অনাকাঙ্খিত কার্যকলাপই সুলতানি সাম্রাজ্যের ভিত্তি দুর্বল করে তোলে।

[৪] শাসনতান্ত্রিক দুর্বলতা : সুলতানি শাসনের প্রশাসন ব্যবস্থার মূল ভিত্তি ছিল অভিজাত শ্রেণি। প্রথমদিকে যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের অভিজাত পদে উন্নীত করা হত। কিন্তু ফিরোজ তুঘলকের সময় থেকেই অভিজাত পদ বংশানুক্রমিক হয়ে পড়ার ফলে অভিজাত সংগঠনে অকর্মণ্য ও অযোগ্য ব্যক্তিদের সমাবেশ ঘটে এবং তাঁরা সুলতানের ক্ষমতা আত্মসাৎ করেন। এঁদের বিচ্ছিন্নতাবাদী কার্যকলাপে সুলতানি সাম্রাজ্যে রাজনৈতিক অস্থিরতা দেখা দেয়।

[৫] অর্থনৈতিক কারণ : সুলতানি সাম্রাজ্যের রাজস্ব নীতি ছিল ত্রুটিপূর্ণ। বিশাল সেনাবাহিনীর ভরণ পোষণ এবং মহম্মদ বিন তুঘলকের অদূরদর্শী কার্যকলাপ রাজকোষের উপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করে। এই অবস্থা সামলাতে জনগণের উপর অতিরিক্ত করের বোঝা চাপানো হয়। এরফলে জনসাধারণের আর্থিক দুর্দশা বৃদ্ধি পায়।

[৬] হিন্দুদের আনুগত্যের অভাব : সুলতানি শাসনের প্রতি হিন্দু সম্প্রদায়ের অসহযোগিতাও এই সাম্রাজ্যের শক্তিহানি ঘটায়। দিল্লির সুলতানরা কোনও ধর্মীয় সহিষ্ণুতার আদর্শ গ্রহণ করেননি— এমনকি তাঁরা হিন্দুদের ওপর জিজিয়াকর সহ নানাধরনের দমনমূলক কর চাপিয়ে দেন। কার্যত গিয়াসউদ্দিন বলবন, ফিরোজশাহ তুঘলক প্রমুখ সুলতানদের দমনমূলক কার্যকলাপ হিন্দুদের বিরাগ ভাজন করে তোলে।

[৭] ক্রীতদাস শাসন : দিল্লির সুলতানি সাম্রাজ্যের অন্যতম বৈশিষ্ট্য ছিল রাজ্য শাসনে ক্রীতদাসদের গুরুত্ব দান। প্রথমদিকে যোগ্য শাসকের আবির্ভাব ঘটলেও পরবর্তী দিনের ক্রীতদাস শাসকরা ছিলেন অলস ও কর্মবিমুখ। ক্রীতদাস প্রথার জন্য যেমন সুযোগ্য রাজকর্মচারী সৃষ্টি হয়নি, তেমনি তাদের সংখ্যা বৃদ্ধি শাসনক্ষেত্রে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করেছিল।




[৮] মহম্মদ বিন তুঘলকের দায়িত্ব : মহম্মদ বিন তুঘলকের বিভিন্ন পরিকল্পনার ব্যর্থতা সুলতানি সাম্রাজ্যের পতনকে তরান্বিত করে। তাঁর এই পরিকল্পনার ফলে প্রজাদের দুর্দশা, অভিজাতদের অসন্তোষ ও দেশের আর্থিক সংকট বৃদ্ধি পায়। এর পরিণতি স্বরূপ সুলতানি সাম্রাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চলে কৃষকবিদ্রোহ সংঘটিত হয় ও স্বাধীন রাজ্য গড়ে ওঠে।

[৯] ফিরোজ তুঘলকের কার্যকলাপ : মহম্মদ বিন তুঘলকের মতোই ফিরোজ তুঘলক জায়গির প্রথার পুনঃপ্রবর্তন, জিজিয়া কর প্রতিষ্ঠা এবং অভিজাত ও উলেমাদের ক্ষমতা বৃদ্ধি করেন। এছাড়াও তাঁর ধর্মীয় অনুদার নীতি সুলতানি শাসনব্যবস্থার ভিত্তিকে সামগ্রিকভাবে দুর্বল করে তোলে।

[১০] বৈদেশিক আক্রমণ : অভ্যন্তরীণ দিক থেকে সাম্রাজ্য যখন দুর্বল হয়ে পড়েছিল ঠিক সেই সময় বৈদেশিক আক্রমণের আঘাত সুলতানি সাম্রাজ্যের পক্ষে বিপদ ডেকে আনে। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায় যে, তৈমুরলঙ ভারতে প্রবেশ করে পাঞ্জাব ও দিল্লি অঞ্চলে বিভীষিকা সৃষ্টি করেছিলেন। তাঁর ধ্বংসযজ্ঞ সুলতানি সাম্রাজ্যের শক্তি ও মর্যাদা বিনষ্ট করে। অর্থ সম্পদ লুণ্ঠনের ফলে সাম্রাজ্যের অর্থনৈতিক কাঠামোও বিধ্বস্ত হয়ে পড়ে। পরবর্তী কালে বাবরের আক্রমণের ফলে সুলতানি সাম্রাজ্যের চির অবসান ঘটে।




Note: পোস্ট টি অবশ্যই আপনার বন্ধুদের সাথে ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ এ শেয়ার করুন।