রাশিয়ার সংবিধানের মূল বৈশিষ্ট্য | Basic Features of Russian Constitution
■ প্রশ্ন:- রাশিয়ার সংবিধানের মূল বৈশিষ্ট্য আলোচনা করো। (Basic Features of Russian Constitution)
■ রাশিয়ার সংবিধানের মূল বৈশিষ্ট্য:-
■ উত্তর:- ১৯৯৩ সালে প্রবর্তিত রুশ যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের মুখ্য বৈশিষ্ট্যসমূহ হল:-
■ (১) রাশিয়ার নতুন সংবিধানের শুরুতে একটি প্রস্তাবনা রয়েছে। বর্তমান রাশিয়ার আগামী দিনের শাসনতান্ত্রিক ও রাজনীতিক উন্নয়নের একটি রূপরেখা নতুন সংবিধানের প্রস্তাবনায় প্রতিফলিত হয়েছে।
■ (২) রাশিয়ার সংবিধান লিখিত। এই সংবিধানে বিধিবদ্ধভাবে ১৩৭ টি অনুচ্ছেদ বর্তমান। এসব লিখিত ধারার মাধ্যমে শাসনের মৌল নিয়মাবলী, নাগরিক অধিকার ও কর্তব্য ইত্যাদির কথা বলা হয়েছে।
■ (৩) রাশিয়ার নতুন শাসনতান্ত্রিক ব্যবস্থায় সংবিধানের প্রাধান্যের কথা বলা হয়েছে। সমগ্র দেশে যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের আইনগত প্রাধান্যের উপর জোর দেওয়া হয়েছে।
■ (৪) রাশিয়ার নতুন শাসনব্যবস্থায় উদারনীতিক দর্শনের বিশেষ প্রভাব পরিলক্ষিত হয়। পৃথিবীর অন্যান্য উদারনীতিক গণতান্ত্রিক দেশের শাসনব্যবস্থার পন্থা-পদ্ধতি অনুসরণ করে রুশ যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান সংবিধানে একটি জনপ্রিয় শাসনতান্ত্রিক ব্যবস্থা গড়ে তোলার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
■ (৫) রুশ যুক্তরাষ্ট্রের শাসনতান্ত্রিক ব্যবস্থার মূল ভিত্তি হিসাবে কতকগুলি মৌলিক নীতির কথা বলা হয়েছে। এই নীতিগুলির সংখ্যা ১৬টি। সংবিধানের প্রথম অধ্যায়েই এই সমস্ত ষোলটি মৌলিক নীতির উল্লেখ পরিলক্ষিত হয়। যেমন, ব্যক্তি-স্বাধীনতা ও মানবাধিকারের প্রসার, ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতির প্রয়োগ ইত্যাদি।
■ রাশিয়ার যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় রাষ্ট্রপতি ভূমিকা (Role of the President in Russia’s Federal System):-
■ রুশ যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতির ভূমিকাকে এভাবে দেখানো যায়:- রাশিয়ার নতুন সংবিধানের চতুর্থ অধ্যায়ে রুশ যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। নতুন সংবিধান অনুসারে রাশিয়ার শাসনব্যবস্থা হল রাষ্ট্রপতি-শাসিত। রাশিয়ার রাষ্ট্রপ্রধান হলেন রাষ্ট্রপতি। মন্ত্রীপরিষদ-শাসিত সরকারের প্রধানমন্ত্রী অপেক্ষা রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি অধিক ক্ষমতা ও পদমর্যাদার অধিকারী। এ ক্ষেত্রে রুশ সংবিধান ফরাসী সংবিধানকে অনুসরণ করেছে। সংবিধান অনুসারে রাষ্ট্রপতি যুক্তরাষ্ট্রের সরকারের সভাপতি বা প্রধানমন্ত্রীর নাম প্রস্তাব করেন। এই প্রস্তাব যুক্তরাষ্ট্রীয় সভা (Federal Assembly) -র একটি কক্ষ রাষ্ট্রীয় ডুমা (State Duma) -র দ্বারা অনুমোদিত হওয়া দরকার। ডুমা যদি এ বিষয়ে রাষ্ট্রপতির প্রস্তাব অনুমোদন না করে এবং তিনবার প্রত্যাখ্যান করে, তা হলে রাষ্ট্রপতি রাষ্ট্রীয় ডুমাকে ভেঙ্গে দেবেন এবং নিজের পছন্দমত একজনকে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে নিযুক্ত করবেন। রাষ্ট্রীয় ডুমার কাছে সরকার বা মন্ত্রিসভার দায়িত্বশীলতার বিষয়টি হল নেহাতই নিয়মতান্ত্রিক; রাষ্ট্রপতির কাছে সরকারের দায়িত্বশীলতাই হল মুখ্য বা বাস্তব। মন্ত্রিসভার বৈঠকে রাষ্ট্রপতি সভাপতিত্ব করেন এবং স্বভাবতই সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রেও তাঁর প্রভাবকে অস্বীকার করা যায় না।