প্রবন্ধ রচনা- বাংলার পশুপাখি | Animals of Bengal Essay Writing in Bengali

বাংলার পশুপাখি | Animals of Bengal Essay Writing in Bengali

[প্রবন্ধ সংকেত :: ভূমিকা | বিভিন্ন প্রকার পশু | বিভিন্ন পাখ-পাখালি | উপসংহার]

ভূমিকা:- বাংলাদেশ বড়ো বিচিত্র। এখানে নদ-নদী, খাল-বিল-পুকুর, শহর গ্রাম, অরণ্য-পর্বত কোনো কিছুর অভাব নেই। বিচিত্র এই ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্যের জন্য বহু বিচিত্র প্রাণীর সমারোহও এখানে। মাঠে-ঘাটে, ঝোপে-ঝাড়ে সর্বত্র হাজার হাজার পশু-পাখির যেন বিচরণ ক্ষেত্র। তাছাড়া, কেবল গৃহপালিত পশুর কথা ধরলেও অনেক বলতে হয়।

■ বিভিন্ন প্রকার পশু:- পশুর কথা বললে প্রধানত দু’ধরনের পশুর কথা মনে আসে। গৃহপালিত পশু ও বন্য পশু। গৃহপালিত পশু বলতে প্রধানত গোরু, মহিষ, বিড়াল, কুকুর প্রভৃতিকে বুঝায়। গোরু, মহিষ তো পরম উপকারী প্রাণী। চাষাবাদের কথা বাদ দিলে গোরু-মহিষের দুধ অত্যন্ত উপাদেয় বস্তু। বিড়ালের উপকারিতা আছে নিশ্চয়ই, কিন্তু কুকুরের মতো বিশ্বাসী প্রাণী আর কে আছে। বন্য পশুদের প্রসঙ্গে প্রথমেই ধরা যেতে পারে বাঘ, শৃগাল, সিংহ প্রভৃতির কথা। শৃগাল ধূর্ততার জন্য প্রসিদ্ধ। বাংলার ‘রয়েল বেঙ্গল টাইগারের’ কথা সকলের জনা। সুন্দরবনের নদী নালায় কুমিরের উপদ্রবও অজানা নয়। সরীসৃপ জাতীয় প্রাণীর মধ্যে সাপ, টিকটিকি, গিরগিটি প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। বাংলা বিচিত্র ধরনের সাপে পরিপূর্ণ। কিছু কিছু বিষধর সর্পের কথা শুনলে শিউরে উঠতে হয়।

■ বিভিন্ন পাখ-পাখালি:- পাখির কাকলিতে ভোরের ঘুম ভাঙাতে আর কেউ আছে বলে মনে হয় না। কতরকমের পাখ-পাখালিতে পরিপূর্ণ বাংলাদেশ। রং বেরঙের বিচিত্র পক্ষীকুল বাংলাদেশের শোভা। শালিকের গান, চড়ুই -এর নাচ, টিয়া কাকাতুয়ার বোল কত না মধুর। বকশ্রেণি যখন আকাশ দিয়ে উড়ে যায় তখন সেই দৃশ্যের দিকে না তাকিয়ে পারা যায় না। ভরদুপুরে চিলের চিৎকার কবিদের কাব্যেও স্থান পেয়েছে। হাঁস, মুরগিতো সকলেরই চেনা, “বউ-কথা-কও’ গৃহস্থের প্রিয় পাখি। বুলবুলিতে মিষ্টি শিস্ কান পেতে শুনতে হয়। কাঠঠোকরা, বসন্তবৌরী প্রভৃতি কতরকমের পাখিই না আছে।

■ উপসংহার:- গ্রাম-বাংলার মানুষের জীবনযাত্রার সঙ্গে পশুজগৎ ও পক্ষীজগৎ মিশে একাকার হয়ে গেছে। সাহিত্যে, কাব্যে এরা নিজেদের স্থান করে নিয়েছে। বাংলার লোক সাহিত্যে বিভিন্ন পশু-পক্ষীর বিশেষ উল্লেখ আছে। কিন্তু কালক্রমে এই প্রাণীজগতের বিলুপ্তি ঘটছে। এই প্রাণীকুলকে রক্ষা করতে না পারলে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যাবে। সরকার এই প্রাণীজগৎকে রক্ষা করার জন্য নানা রকম পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন। এর মধ্যে ব্যাঘ্র প্রকল্প, কুমির প্রকল্প প্রভৃতির উল্লেখ করা যায়। আর এই সব প্রাণীকুলকে রক্ষার জন্য জনসৃজন ও বনসংরক্ষণেরও ব্যবস্থা হয়েছে।