Amartya Sen, the son of Bengal, has come up with the best award in the world in economics. Bengali’s talent, philanthropic thinking and outstanding Manisha were once again recognized for excellence. In the court of the world. Only the Bengalis of Bengal and the people of India are proud. With Amartya Sen’s Nobel victory on October 14, 1996, his long and distinguished research on economics has been acclaimed and recognized around the world.
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন (Nobel laureate economist Amartya Sen)
অর্থনীতিতে বিশ্বের সেরা পুরস্কার নিয়ে এসেছেন বাংলার ছেলে অমর্ত্য সেন। বাঙালির মেধা, মানবকল্যাণকর ভাবনাচিন্তা ও অসামান্য মনীষা আর – একবার শ্রেষ্ঠত্বের স্বীকৃতি পেল বিশ্বের দরবারে। এপার বাংলা ওপার বাংলার বাঙালি ও সেই সঙ্গে ভারতবাসীমাত্রই গর্বিত। ১৪ অক্টোবর ১৯৯৮ অমর্ত্য সেনের নােবেল জয়ের মাধ্যমে সারা বিশ্বের কাছে অর্থনীতির উপর তাঁর দীর্ঘ শ্রমলব্ধ গবেষণা হয়েছে প্রশংসিত ও স্বীকৃত। তিনি সম্মানিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে যাদের উন্নয়ন ও কল্যাণের স্বার্থে ওই গবেষণা সেই দরিদ্র ও দুর্ভিক্ষপীড়িত মানুষেরাও হয়েছে সম্মানিত।
অমর্ত্য সেনের জন্ম- পিতৃপরিচয়-শিক্ষা (Amartya Sen’s birth-patriarchy-education)
অমত্য সেনের জন্ম শান্তিনিকেতনের গুরুপল্লিতে ১৯৩৩ সালে। তিনি আচার্য ক্ষিতিমােহন সেনের দৌহিত্র। পিতা প্রয়াত বিখ্যাত কৃষিবিজ্ঞানী আশুতােষ সেন, মাতা অশীতিপর বৃদ্ধা অমিতা সেন। নবজাত শিশুর নাম রেখেছিলেন বাংলার আর – এক নােবেলবিজয়ী বিশ্ববরেণ্য কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। নামকরণের পর অমিতা দেবীকে কবি বলেছিলেন, ‘তাের ছেলের একটা অসাধারণ নাম দিলাম। দেখবি, একদিন ও সত্যিই অসাধারণ হয়ে উঠবে। কবিগুরুর ভবিষ্যদ্বাণী অক্ষরে অক্ষরে সফল হয়েছে।
অমর্ত্য সেন শান্তিনিকেতন থেকে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে বিজ্ঞান শাখায় ইন্টারমিডিয়েটে রেকর্ড নম্বর পেয়ে প্রথম স্থান অধিকার করেন। তারপর গণিত পড়তে আসেন কলকাতায় প্রেসিডেন্সি কলেজে। কয়েকদিন পরেই বিষয়। পালটে অর্থনীতি নিয়ে অধ্যয়ন শুরু করেন। অসাধারণ মেধার দীপ্তিতে তিনি অধ্যাপকদের শুধু সুনজরেই আসেন না, তাঁদের যেমন চমৎকৃত করেন, তেমনি তাঁর সুনাম ছড়িয়ে পড়ে কলেজময়। কলকাতার পাঠ শেষ করে পাড়ি দেন বিলাতে। কেজি বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রিনিটি কলেজে অধ্যয়ন করেন। বিষয় অর্থনীতি।
অমর্ত্য সেনের অধ্যাপনা (Teaching by Amartya Sen)
পাঠ্যজীবনের কৃতিত্বপূর্ণ সাফল্য নিয়ে দেশে ফেরার পর অমর্ত্য সেন অধ্যাপনা ও অর্থনীতির উপর গবেষণা শুরু করেন। যাদবপুর ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেন। দিল্লি স্কুল অব ইকনমিক্সে কাজ করেন। তারপর বিদেশে লন্ডন স্কুল অব ইকনমিক্স, অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি ও হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে বর্তমানে কেমব্রিজ ট্রিনিটি কলেজে ‘ মাস্টার ’ বা ‘ আচার্য – পদে আসীন, যা এক দুর্লভ সম্মান। দীর্ঘ সাতাশ বছর ধরে একটানা মার্কিন ও ব্রিটিশ মুলুকে অধ্যাপনা ও গবেষণার কাজ করে যাচ্ছেন।
অমর্ত্য সেনের গবেষণা (Amartya Sen’s research):
১৯৭৪ সালে বাংলাদেশে দুর্ভিক্ষের সময় তাঁর বয়স ছিল প্রায় একচল্লিশ। তিনি তখন পরিণতবয়স্ক প্রাজ্ঞ। তাঁর অর্জিত প্রজ্ঞার আলােকে দারিদ্র্য ও দুর্ভিক্ষ বিশ্লেষণের ক্ষমতা তখন তাঁর অধিগত। তা ছাড়া ওই সমসাময়িককালে তৃতীয় বিশ্বের কিছু দেশে যেমন ব্রাজিলে, মধ্য আফ্রিকার বেশ কিছু অঞ্চলে চরম দারিদ্র্য আর দুর্ভিক্ষের করাল ছায়া নেমে আসে সর্বগ্রাসী ক্ষুধা নিয়ে।
এসব ঘটনার কোনােটাই অমতের দৃষ্টির বাইরে থাকে না। সারা বিশ্বের তাবৎ দরিদ্র ও দুর্ভিক্ষপীড়িত মানুষের উন্নয়ন ও কল্যাণমূলক ভাবনাই তাঁর গবেষণা ও তত্ত্বের বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। তাঁর অর্থনীতির সঙ্গে দর্শনের অপূর্ব মেলবন্ধন ঘটে। এসবকে ঘিরে জনকল্যাণমূলক অর্থনীতির উপর তার যে মৌলিক গবেষণা, তাই তাঁকে দিয়েছে বিশ্বের শ্রেষ্ঠ পুরস্কার ও স্বীকৃতি।
বাঙালির হৃদয়ে অমর্ত্য সেন (Amartya Sen in the heart of Bengalis)
অমর্ত্য সেন গবেষণা ও পেশার টানে প্রবাসী হলেও আজও ভারতীয় ও মনেপ্রাণে বাঙালি। বাংলার সঙ্গে তাঁর শিকড়ের যােগ অটুট। প্রতি ডিসেম্বরে শান্তিনিকেতনে পৌষমেলার সময় একবার অবশ্যই আসেন। ধুতি – পাঞ্জাবিতে তিনি তখন নিপাট বাঙালি। রবীন্দ্রনাথের কবিতা, গান ও বাংলা ভাষাসাহিত্য আজও তাঁকে টানে। শান্তিনিকেতনের অতীত আর ঘরােয়ানা ভুলতে পারেন না বলে এখনও শান্তিনিকেতনে এলে সাইকেলে চড়ে বেরিয়ে পড়েন তরুণ। বয়সের মতাে পরিচিতদের সান্নিধ্যলাভের আকাঙ্ক্ষায়।
অমর্ত্য সেনের সম্মান ও পুরস্কারলাভ (Amartya Sen’s honor and award):
নােবেল বিজয়ের আগে অমর্ত্য সেন বহু সম্মান ও পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। আমেরিকান ইকনমিক অ্যাসােসিয়েশনের সভাপতির পদ অলংকৃত করেছেন। কলকাতা তাঁকে দিয়েছে লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড। পেয়েছেন বহু গৌরবের অ্যাডাম স্মিথ পুরস্কার। বিশ্বভারতী দিয়েছে দেশিকোত্তম। পেয়েছেন রেনবেরি স্কলারশিপ এবং স্টিভেন প্রাইজ। সর্বোপরি পেয়েছেন বিশ্বের শ্রেষ্ঠ সম্মান ও স্বীকৃতির স্মারক নােবেল পুরস্কার।
নােবেল বিজয়ের পর তাঁর প্রতিক্রিয়ার প্রথম কথা ‘একই বিষয়ে অবশ্য আরও অনেকে কাজ করেছেন। দুঃখের বিষয়, এই সম্মান তাঁদের সঙ্গে ভাগ করে নিতে পারছি না। তাঁর এই উদারতার তুলনা হয় না। আমরা কামনা করি, তাঁর গবেষণা অব্যাহত থাক। তাঁর গবেষণালব্ধ পথনির্দেশিকা দীন – দুঃখী মানুষের প্রকৃত উন্নয়ন ও কল্যাণে সার্থকভাবে প্রযুক্ত হােক এবং তিনি শতায়ু লাভ করুন।
আরও পড়ুনঃ কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য