মোগল সাম্রাজ্যের প্রসারে আকবরের ভূমিকা | Akbar’s Role in Expansion of Mughal Empire




Hello Students,


Wellcome to edu.bengaliportal.com চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতির সেরা ঠিকানা,  edu.bengaliportal.com আজ আমরা নিয়ে এসেছি Akbar’s Role in Expansion of Mughal Empire. প্রতিবছর বিভিন্ন পরীক্ষার যেমন  CTET | WBTET | WBCS । MPTET | ATET| UPTET | Rajasthan PTET | TNTET | Karnataka TET | RTET | HTET| PSTET। BANK EXAM। ইত্যাদি পরীক্ষার বিভিন্ন প্রস্তুতি পত্র আপনাদের বিনামূল্যে দিয়ে এসেছি। তাই Ajjkal.com আজ আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছে মোগল সাম্রাজ্যের প্রসারে আকবরের ভূমিকা | Akbar’s Role in Expansion of Mughal Empire

Ajjkal



মোগল সাম্রাজ্যের প্রসারে আকবরের ভূমিকা | Akbar’s Role in Expansion of Mughal Empire

আকবর (১৫৫৬-১৬০৫ খ্রিঃ) :

১৫৫৬ খ্রিস্টাব্দে হুমায়ুনের মৃত্যুর তাঁর পুত্র আকবর মাত্র চোদ্দ বছর বয়সে দিল্লির সিংহাসনে বসে নিজেকে ভারত সম্রাট বলে ঘোষণা করলে তাঁকে সিংহাসন থেকে বিতাড়িত করার জন্য আফগানরা সচেষ্ট হয়। আফগান নেতা মহম্মদ আদিল শাহের হিন্দু সেনাপতি হিমু দিল্লি ও আগ্রা জয় করেন।



এই অবস্থায় আকবরের ও তাঁর অভিভাবক বৈরাম খাঁ হিমুর বিরুদ্ধে অগ্রসর হলে পানিপথের দ্বিতীয় যুদ্ধে (১৫৫৬ খ্রিঃ) হিমু পরাজিত ও নিহত হন। এই পরাজয়ে ভারতে আফগান সাম্রাজ্য স্থাপনের স্বপ্ন চিরতরে বিলীন হয়ে যায় এবং তিন দশক ব্যাপী মোগল আফগান দ্বন্দ্বের অবসান ঘটে। পানিপথের দ্বিতীয় যুদ্ধে জয়লাভের ফলে মোগল সাম্রাজ্য স্থায়ী ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত হয়। ঐতিহাসিক কালিকিঙ্কর দত্তের মতে, দ্বিতীয় পাণিপথের যুদ্ধ ভারতে মোগল সাম্রাজ্যের প্রকৃত ভিত্তি রচনা করে এবং মোগল সাম্রাজ্যের সম্প্রসারণ শুরু হয়।




আকবরের রাজ্য বিস্তার :

উত্তর ভারত জয় : পানিপথের দ্বিতীয় যুদ্ধের পর আকবর সাম্রাজ্যবাদী নীতি গ্রহণ করেন। তাঁর সাম্রাজ্যবাদের মূল লক্ষ্য ছিল রাষ্ট্রের ঐক্য ও নিরাপত্তা সুনশ্চিত করা। এই উদ্দেশ্যে তিনি বৈরাম খাঁর নেতৃত্বে আজমির, গোয়ালিয়র ও জৌনপুর জয় করেন। এর পর একে একে মধ্যপ্রদেশের মালব ও গন্ডোয়ানা তাঁর দখলে আসে।

রাজপুতানা : গন্ডোয়ানার পর আকবর রাজপুতানা জয়ে মনোনিবেশ করেন। সে সময় ভারতে রাজপুতরাই ছিল শৌর্যেবীর্যে সবচেয়ে শক্তিশালী জাতি। অথচ রাজপুতদের সাহায্য ছাড়া ভারতে মোগল সাম্রাজ্যের ভিত শক্তিশালী করা সম্ভব ছিল না। এই কারণে আকবর রাজপুতদের সঙ্গে যুদ্ধে না গিয়ে বন্ধুত্বের নীতি গ্রহণ করেন। তিনি প্রথমেই জয়পুর ও বিকানীর রাজ্যের রাজ কন্যাদের বিবাহ করে রাজপুতদের সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন করেন; রাজপুত বীর বিহারীমল, মানসিংহ, টোডরমল, ভগবানদাস প্রমুখদের সাম্রাজ্যের উচ্চপদে নিয়োগ করেন এবং রাজপুতদের ওপর থেকে বিভিন্ন কর তুলে নেন। এর ফলে মাড়ওয়ার, বিকানীর, বুঁদি, জয়সলমীর প্রভৃতি রাজপুত রাজ্যগুলি আকবরের সঙ্গে মিত্রতার বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়।

কিন্তু মেবারের রাণা উদয় সিংহ আকবরের মিত্রতা নীতি ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেন। আকবর মেবারের রাজধানী চিতোর (১৫৬৭ খ্রিঃ) অবরোধ করলে উদয় সিংহ পালিয়ে যান। তাঁর মৃত্যুর পর পুত্র রাণাপ্রতাপ সিংহ মোগলদের বিরুদ্ধে অস্ত্রধারণ করেন। অবশেষে হলদিঘাটের যুদ্ধে (১৫৭৬ খ্রিঃ) রাণাপ্রতাপ বীরত্বের সঙ্গে যুদ্ধ করে পরাজিত হন। চিতোরের পতন ঘটলেও রাণাপ্রতাপ মোঘলদের (তিনি কিন্তু আকবরের) বশ্যতা স্বীকার করেন নি। বনজঙ্গল থেকেই দীর্ঘ কুড়ি বছর মোঘলদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যান এবং মৃত্যুর পূর্বে চিতোর ছাড়া মেবারের অধিকাংশ এলাকাই তিনি পুনরুদ্ধার করেন। তাঁর পুত্র অমর সিংহকেও আকবর পরাজিত করতে ব্যর্থ হন। কিন্তু রণথম্বোর, কালিঞ্জর, জয়সলমীর, মাড়োয়ার প্রভৃতি রাজ্যগুলি আকবরের অধীনতা স্বীকার করে নেন।

গুজরাট : এরপর আকবর গুজরাট এবং সুরাট জয় করেন। এই জয়ের ফলে মোগল সাম্রাজ্য পশ্চিমে আরব সাগর পর্যন্ত বিস্তৃত হয় এবং গুজরাটের বিখ্যাত সমুদ্র-বন্দরগুলি মোগল সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হয়।

বাংলা ও উড়িষ্যা : ইতিমধ্যে বাংলার আফগান শাসক দাউদ নিজেকে স্বাধীন বলে ঘোষণা করলে ১৫৭৬ খ্রিস্টাব্দে আকবর বাংলা দখল করেন। পরবর্তী সময়ে উড়িষ্যাও মোগল রাজ্যভুক্ত হয়।

কাবুল কান্দাহার-সিন্ধু-কাশ্মীর : বাংলার পর তিনি উত্তর-পশ্চিম সীমান্তে কাবুল আক্রমণ করেন। ফলস্বরূপ কাবুল, কান্দাহার, কাশ্মীর ও সিন্ধু প্রদেশ তাঁর অধিকারে আসে।




দক্ষিণ ভারত জয় : সমগ্র উত্তর ভারত জয়ের পর আকবর দক্ষিণ ভারত জয়ের এই উদ্দেশ্যে ১৬০০ খ্রিস্টাব্দে তিনি আহম্মদ নগর দখল করেন। পরবর্তীকালে খান্দেশ ও বেরার জয় করেন। কার্যত খান্দেশের আসিরগড় দুর্গ দখল (১৬০১ খ্রিঃ) ছিল আকবরের জীবনের শেষ অভিযান।

এইভাবে আকবর উত্তরে হিমালয় থেকে দক্ষিণ গোদাবরী এবং পশ্চিম পারস্য থেকে পূর্বে বাংলাদেশ পর্যন্ত বিস্তৃত এলাকায় এক বিশাল সাম্রাজ্য গড়ে তোলেন। সাম্রাজ্য গড়ে তোলার সঙ্গে সঙ্গে তিনি এই সাম্রাজ্যকে স্থায়ী ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত করার উদ্দেশ্যে এক কেন্দ্রীভূত শাসনব্যবস্থার প্রচলন করেছিলেন। জাতিধর্মনির্বিশেষে প্রজাদের কল্যাণসাধন করাই ছিল এই শাসন রীতির প্রধান লক্ষ্য।




Note: পোস্ট টি অবশ্যই আপনার বন্ধুদের সাথে ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ এ শেয়ার করুন।