There are many types of poetry in Sanskrit literature, such as – epic poems, prose poems, historical poems, lyric poems, centenary poems, etc. Gitagovinda is a best lyric poem.The poem which can be sung with musical instruments like harp etc., the poem which arouses emotion in the heart of the reader when it is recited, the melody and sound of which touches the inner ground of the heart is called lyric poetry. Lyric poetry is generally of three types: erotic, devotional and ethical.
The best example of devotional lyric poetry is Gitagovinda. “Gitagovinda” is written by the great poet Joydev.Joydev was born in the village of Kendrabindra in Birbhum. His parents’ names are Srivajadev and Bamadevi. His wife’s name is Padmavati. They were absolute devotees of Radhakrishna. He got a dream order in Puridham to write Radhakrishna’s love story. So. Joydev wrote the lyric Gitagovinda in the poet Kantkomal Padavali, which is rare not only in Sanskrit literature, but also in the whole world literature.
গীতগোবিন্দ কাব্য
সংস্কৃত সাহিত্যে অনেক প্রকার কাব্য আছে , যেমন — মহাকাব্য , গদ্যকাব্য , ঐতিহাসিক কাব্য , গীতিকাব্য , শতককাব্য ইত্যাদি । যে কাব্য বীণা প্রভৃতি বাদ্যযন্ত্রসহ গীত হওয়ার যােগ্য , যে কাব্য পাঠ করলে পাঠকের অন্তরে আবেগ জেগে ওঠে , যার সুর ও ধ্বনি অন্তরের অন্তঃ স্থলকে মথিত করে সেই কাব্যকেই বলে গীতিকাব্য । গীতিকাব্য সাধারণতঃ তিন প্রকার শৃঙ্গারাত্মক , ভক্তিমূলক ও নীতিমূলক । ভক্তিমূলক গীতিকাব্যের শ্রেষ্ঠ উদাহরণ হল গীতগােবিন্দ । “ গীতগােবিন্দ ’ মহাকবি জয়দেবের লেখা ।
“গীতগোবিন্দ” লেখক কবি জয়দেবর পরিচয় (“Gitagovinda” is the identity of the poet Joydev)
বীরভূমের কেন্দ্রবিন্দ্র গ্রামে জয়দেবের জন্ম হয় । তার পিতা – মাতার নাম শ্রীভােজদেব ও বামাদেবী । তার স্ত্রীর নাম পদ্মাবতী । তারা রাধাকৃষ্মের পরম ভক্ত ছিলেন । পুরীধামে স্বপ্নাদেশ পেয়েছিলেন রাধাকৃষ্ণের প্রণয়লীলা লিখবার জন্য। তাই জয়দেব কবি কান্তকোমল পদাবলীতে লিখলেন গীতগােবিন্দ , যা শুধু সংস্কৃত সাহিত্যেই নয় , সমগ্র বিশ্বসাহিত্যেও দুর্লভ । ভাবের বিচিত্রতা , পদের লালিত্য , ছন্দের ঝঙ্কার , অলংকারের -মাধুর্য , যমক ও অনুপ্রাসের ললিত লহরী শ্রোতার কর্ণকুহরে এক অভূতপূর্ব আনন্দলহরী সৃষ্টি করে । গায়ত্রীর চব্বিশ অক্ষরের অনুকরণে অষ্টাপদীতে দ্বাদশ সর্গে কবি লিখলেন রাধাকৃষ্ণের শাশ্বত প্রেমলীলা , যেখানে নায়ক হলেন সর্বসাশ্রয় ভঘবান দিব্যপ্রেমময় শ্রীকৃষা আর নায়িকা হলেন দিব্যপ্রেমময়ী শ্রীরাধা । কবি গ্রন্থারম্ভে কাব্যের উৎকর্ষতা সম্পর্কে বলেছেন।
“ যদি হরিস্মরণে সরসং মনাে যদি বিলাসকলাসু কুতূহল । মধুরকোমল কান্তপদাবলীং শৃণু তদা জয়দেবসরস্বতীম্ ॥ ”
অর্থাৎ “ হে ভক্তজন ! যদি শ্রীকৃয়া স্মরণে মনকে সরস করতে চাও , যদি বিলাসকলা শিক্ষায় । কৌতূহল জেগে থাকে , তাহলে মধুর , কোমল ও রমণীয় পদাবলীতে গ্রথিত জয়দেবের বাণী শ্রবণ কর । ” কবির জীবনসঙ্গিনী পদ্মাবতীর প্রগাঢ় প্রেমই তাকে এরূপ অপূর্ব গ্রন্থ রচনায় উৎসাহ দিয়েছিল । এই গ্রন্থে ১২ টি সর্গ , ৮০ টি শ্লোক এবং ২৪ টি গীত আছে । প্রথম সর্গে আছে শ্রীরাধার কৃষ্ণবিরহের স্মৃতিচ্ছবি । দ্বিতীয় সর্গে আছে শ্রীরাধার ও শ্রীকৃ ৷ উভয়েরই বিরহবেদনা ও মিলনের ব্যাকুলতা ।
তৃতীয় স্বর্গে আছে শ্রীকৃষ্ণের চিন্তা রাধার জন্য । চতুর্থ সর্গে আছে রাধার সখীর আগমন ও রাধার মনের অবস্থা জ্ঞাপন শ্রীকৃষাকে । পঞ্চমসর্গে আছেঃঅভিসারিণী শ্রীরাধার জন্য শ্রীকৃষ্ণের প্রতীক্ষা । ষষ্ঠসর্গে আছে শ্রীকৃষ্ণের অকুণ্ঠিত চিত্তের বর্ণনা । সপ্তম সর্গে আছে শ্রীকৃষ্ণের অদর্শনে রাধার দুঃখ । অষ্টম সর্গে আছে শ্রীকৃষ্ণের প্রতি শ্রীরাধার অভিমান । নবম সর্গে আছে মানভঞ্জনের জন্য শ্রীকৃষের চিন্তা । দশম সর্গে আছে শ্রীকৃষ্ণ কর্তৃক শ্রীরাধার মানভঞ্জন । একাদশ সর্গে আছে উভয়ের মিলন সম্ভাবনার আনন্দ উৎসব ।
দ্বাদশ সর্গে আছে রাধা ও কৃষ্ণের মধুর মিলন । কবি জয়দেবের কোমলকান্ত পদের ললিতমাধুরী নিজস্ব রচনাশৈলীর পরিচয় বহন করে । জয়দেবের দশাবতারস্তোত্র একদিকে যেমন সুরসংযােগে মধুরসংগীত সৃষ্টি করে পাঠকের কর্ণকুহরে অমৃত ধারা বর্ষণ করে অন্যদিকে তেমনি হরিভক্তিতে মন সরস হয়ে ওঠেঃ
“ প্রলয় – পয়ােধিজলে ধৃতবানসি বেদং বিহিতবহিত্র – বিচিত্রমখেদম্ । কেশব ! ধৃতমীনশরীর জয় জগদীশ হরে ॥ ”
এছাড়া বসন্তলীলার বর্ণনা , শ্রীরাধার অভিসার বর্ণনা প্রভৃতিতে অনুভূয়মান এক অনবদ্য সুর ও আবেগ হৃদয়কে স্পর্শ করে । কথিত আছে , একদিন কবি একটি শ্লোকের অর্ধাংশ লিখে চিস্তান্বিত হয়ে পড়েছিলেন , শ্লোকটি শেষ করতে আর পারছিলেন না । তিনি চিন্তা করতে করতে নদীতে স্নান করতে যান । এমন সময় ভগবান শ্রীকৃষা স্বয়ং জয়দেবের রূপ ধারন করে পদ্মাবতীর হাতের রান্না খেয়ে বিশ্রাম কক্ষে শয়ন করার সময় শ্লোকটি সম্পূর্ণ করে দিয়ে যান । পদ্মাবতী স্বহস্তে শ্রীকৃষ্ঠের পদসেবা করার সুযােগ পেয়েছিলেন , তাই তিনি অধিক ভগ্যবতী ! সেই শ্লোকটি হল
“ স্মর – গরল – খণ্ডনং মম শিরসি মঙনম্ । দেহি পদবল্লবমুদারম্ ॥ ”
এখানে ভক্তিরস প্রস্ফুটিত হয়েছে । সাধক বলেছেন— “ প্রভু , তােমার চরণ যুগল আমায় দাও । ” বৈষাবদের এটিই হল মুক্তির পথ । শ্রীকৃষ্ণ হলেন পরম ব্রহ্ । তার নির্দেশেই সমগ্র জগৎ চলমান । শ্রীকৃষ্ণের অমৃত কথায় মনের সন্তাপ দূর হয় । জীবন শান্ত ও স্নিগ্ধ হয়ে ওঠে । তাই এই কাব্যের আধ্যাত্মিক আবেদন সত্যসৌন্দর্য্যে সমুজ্জ্বল । এই কাব্যটি সমালােচকদের কাছে অত্যন্ত আদরনীয় , শিল্পগুণ – মণ্ডিত ও হৃদয়গ্রাহী । ভাষার মাধুৰ্য্য , শব্দের ঝঙ্কার , অর্থের ব্যঞ্জনা পাঠকের মনকে আনন্দঘন করে তােলে । তাই গীতগােবিন্দ ধর্ম ও সাহিত্য উভয়েরই উৎকৃষ্ট নিদর্শন । কবির অনুপ্রাস মিশ্রিত একটি অনবদ্য রচনা হল—
“ ধীর – সমীরে যমুনাতীরে বসতি বনে বনমালী । ”
কবি সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের এই উক্তি যথার্থ হয়েছে
“ বাংলার রবি জয়দেব কবি কান্ত কোমল পদে । করেছে সুরভি সংস্কৃতের কাঞ্চন – কোকনদে ॥ ”
ভাবের গভীরতায় , পদের লালিত্যে এবং রূপ বর্ণনায় জয়দেব কবিমহলে অদ্বিতীয় হয়ে আছেন । এই কাব্যপাঠে মনে জাগে আকুলতা , হৃদয়ে জাগে ভক্তি সুধারস । রাধাকৃষের মিলন মনে হয় যেন জীবাত্মার সাথে পরমাত্মার পরম মিলন । তাই এটি ভক্তিমূলক গীতিকাব্য হিসাবে আজও অমূর হুয়ে আছে ।
আরো পড়ুন: রামায়ণ মহাকাব্য