সংবিধান সংশোধনের প্রয়োজনীয়তা | Need for Constitutional Amendment
■ উত্তর:- কোন সংবিধানের পক্ষেই আবহমানকাল ধরে পরিবর্তিত সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতির মোকাবিলা করা সম্ভব হয় না। তাই সময় ও পরিস্থিতির পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে যে কোন দেশের সংবিধানেরও প্রয়োজনীয় পরিবর্তন সাধন অপরিহার্য হয়ে পড়ে। তা না করলে দেশের সাংবিধানিক ব্যবস্থায় অচলাবস্থা ও সঙ্কটের সৃষ্টি হয়। সংবিধান হল একটি গতিশীল দলিল। আর্থ-সামাজিক বিচারে সংশোধন সংবিধানের গতিশীলতা রক্ষা করে।
সংশোধনের মাধ্যমে সংবিধান পরিবর্তিত পারিপার্শ্বিকতার সঙ্গে সামঞ্জস্য বজায় রাখে। এইভাবে সংবিধান ও দেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থার বৈধতা বজায় থাকে। এই কারণে সময় ও পরিস্থিতি পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে শান্তিপূর্ণ উপায়ে দেশের সাংবিধানিক কাঠামোর পরিবর্তনের জন্য সকল দেশের লিখিত সংবিধানের সঙ্গে সংবিধান সংশোধনের একটি পদ্ধতি সংযুক্ত থাকে। যুক্তরাষ্ট্রে দ্বৈত সরকারী ব্যবস্থা থাকে এবং উভয় ধরনের সরকারের মধ্যে ক্ষমতার বণ্টন থাকে। যুক্তরাষ্ট্রীয় সংবিধানের সংশোধন পদ্ধতির সঙ্গে অঙ্গরাজ্যগুলিকে যুক্ত করতে হয়। এই কারণে যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় সংবিধানের আনুষ্ঠানিক সংশোধন যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি জটিল।
■ টীকা- ভারতীয় সংবিধানের সংশোধন পদ্ধতিগুলি (Procedures for Amending the Indian Constitution)
■ উত্তর:- সংবিধানের ৩৬৮ ধারায় ৩ টি সংবিধান সংশোধনের পদ্ধতি উল্লিখিত হয়েছে। যেমন—
● (ক) প্রথম পদ্ধতিটি হল সরকারী বা বেসরকারী বিলের মাধ্যমে সংবিধান সংশোধনের প্রস্তাব সংসদের যে কোন কক্ষে উত্থাপিত হতে হবে। প্রস্তাবটি উভয় কক্ষে পৃথকভাবে মোট সদস্যের অর্ধেক এবং উপস্থিত ও ভোটদানকারী সদস্যের ২ অংশ দ্বারা অনুমোদিত হওয়া প্রয়োজন। তবে এই অংশকে সংশ্লিষ্ট কক্ষের সদস্যসংখ্যার সংখ্যাগরিষ্ঠের সমান হতে হবে। উভয় কক্ষে প্রস্তাব পাশ হলে রাষ্ট্রপতির সম্মতি লাভ করলেই সংশোধন সম্পূর্ণ হয়।
● (খ) প্রথম পদ্ধতিটির মত উভয় কক্ষে পাশ হওয়ার পর প্রস্তাবটি অন্তত অর্ধেক রাজ্য আইনসভার দ্বারা অনুমোদিত হতে হবে। এক্ষেত্রে রাজ্য আইনসভাগুলি বিলের আকারে প্রস্তাবটি গ্রহণ বা প্রত্যাখ্যান করতে পারে, কিন্তু কোন পরিবর্তন করতে পারে না। অর্ধেক রাজ্য আইনসভা কর্তৃক পাশ হলে তা রাষ্ট্রপতির সম্মতির জন্য পাঠানো হয়।
● (গ) সংবিধান সংশোধনের তৃতীয় পদ্ধতিটি অত্যন্ত সরল। এক্ষেত্রে সাধারণ আইন পাশের পদ্ধতিতে সংসদের উভয়ক্ষে সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠের সমর্থনে সংবিধান সংশোধন করা যায়। তবে প্রথম পদ্ধতিতে যদি দুই কক্ষের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দেয়, তবে সংশ্লিষ্ট বিলটি বাতিল হয়ে যাবে।