আন্তর্জাতিক সম্পর্কের উদারনীতিক দৃষ্টিভঙ্গি | Liberal Approach to International Relations
■ প্রশ্ন:- আন্তর্জাতিক সম্পর্ক পাঠের উদারনীতিক দৃষ্টিভঙ্গি ব্যাখ্যা করো।
■ উত্তর:- উদারনীতিবাদীদের অভিমত অনুযায়ী ক্ষমতার রাজনীতিও এক ধরনের ধারণার ফল। পরিস্থিতি পরিমণ্ডলের পরিপ্রেক্ষিতে ধারণার পরিবর্তন ঘটে। আন্তর্জাতিক রাজনীতিত্বে অদ্যাবধি উদারনীতিবাদ তেমন একটা জায়গা করে নিতে পারেনি,এ কথা ঠিক। এতদ্সত্ত্বেও এ কথা বলা যাবে না যে, আগামী দিনের আন্তর্জাতিক রাজনীতি উদারনীতিক পথে পরিচালিত হবে না।
আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে উদারনীতিক ঐতিহ্য আধুনিক উদারনীতি রাষ্ট্রের অভ্যুত্থানের সঙ্গে গভীরভাবে সম্পর্কযুক্ত। সপ্তদশ শতাব্দীতে জন লক (John Locke) -এর সময় থেকে এই অনুশীলনের সূত্রপাত ঘটেছে। আধুনিক কালের উদারনীতিক রাষ্ট্রে ব্যক্তি স্বাধীনতাকে সুনিশ্চিত করা হয়। এই কারণে নাগরিক সমাজ ও পুঁজিবাদী অর্থনীতি বিকশিত হওয়ার সুযোগ-সম্ভাবনার সৃষ্টি হয়। উদারনীতিক তাত্ত্বিকরা বিশ্বাস করেন যে, মানুষের ভয় ও ক্ষমতার লালসার উপর মানুষের যুক্তিবোধ প্রতিষ্ঠিত হতে পারে।
উদারনীতিবাদীদের আরও বক্তব্য হল যে, সংঘাত-সংঘর্ষ ও যুদ্ধ অনিবার্য নয়। মানুষ তার যুক্তিবোধ প্রয়োগের মাধ্যমে পারস্পরিক সুবিধাজনক সহযোগিতায় উপনীত হতে পারে। এই সহযোগিতা শুধুমাত্র রাষ্ট্রের সীমানার অভ্যন্তরে নয়, রাষ্ট্রের সীমানার বাইরে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও সম্ভব। উদারনীতিবাদীরা সাধারণত মানুষের প্রকৃতি প্রসঙ্গে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করেন। মানুষের যুক্তিবোধের উপর তাঁদের অগাধ আস্থা। তাঁরা বিশ্বাস করেন যে, আন্তর্জাতিক বিষয়াদিতে মানুষের যৌক্তিক নীতিসমূহ প্রয়োগ করা যাবে। মানুষ পারস্পরিক সহযোগিতামূলক সামাজিক ক্রিয়াকর্মের সামিল হতে পারে। এই সহযোগিতা স্বরাষ্ট্রের মত পররাষ্ট্র সংক্রান্ত বিষয়েও সম্ভব।
সকল উদারনীতিবাদী স্বীকার করেন যে চূড়ান্ত বিচারে পারস্পরিক স্বার্থের ভিত্তিতে সহযোগিতাই সফল হবে। কারণ আধুনিকীকরণ সহযোগিতার সুযোগ ও পরিসর প্রসারিত করে। উদারনীতিবাদ হল একটি মতাদর্শ। এই মতাদর্শের মূল কথা হল ব্যক্তিবর্গের স্বাধীনতা। উদারনীতিবিদদের কাছে স্বাধীনতা সংরক্ষণের ক্ষেত্রে ন্যায় ও নিরাপত্তার সংরক্ষণ সুনিশ্চিত হতে পারে না; এরজন্য বাহ্যিক পরিস্থিতিরও পরিমার্জন প্রয়োজন হতে পারে।
প্রাকৃতিক পরিবেশে মানুষজন যেভাবে জীবন যাপন করত, আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে রাষ্ট্রসমূহ পারস্পরিক সম্পর্কের ব্যাপারে অনুরূপভাবে অবস্থান করলে নিরাপত্তা, শান্তি ও প্রগতির প্রসঙ্গে উদারনীতিক পরিকল্পনা চিরকালই অধরা থেকে যাবে। আন্তর্জাতিক রাজনীতির ব্যবহারিক ক্ষেত্রে উদারনীতিবাদের বিশেষ প্রভাব পরিলক্ষিত হয়। অষ্টাদশ শতাব্দী থেকে শুরু করে পরবর্তী কালে যুদ্ধোত্তর কালে। যুদ্ধোত্তর কালেই আন্তর্জাতিক সম্পর্কের আলোচনায় উদারনীতিক চিন্তাভাবনার বিশেষ বিকাশ পরিলক্ষিত হয়।
এই সময় আদর্শবাদীদের অনুশীলনেই উদারনীতিবাদের চর্চা সমৃদ্ধি লাভ করে। এই শ্রেণীর চিন্তাবিদদের অভিমত অনুযায়ী রাষ্ট্রসমূহের মধ্যে বিবাদ-বিসংবাদের মীমাংসার ব্যাপারে যুদ্ধ হল অপ্রয়োজনীয় ও অচল একটি উপায়। দার্শনিকরা ন্যায় ও শান্তি চর্চায় বিবিধ উপায়-পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করছেন। এই আলোচনার মধ্যেই আবছাভাবে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক উদারনীতিক ভাবনাচিত্তার পরিচয় পাওয়া যায়। এই শ্রেণীর চিন্তাবিদদের মতানুসারে রাষ্ট্রসমূহের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে সংঘাত-সংঘর্ষ কোন স্বাভাবিক বিষয় নয়।
উদারনীতিবাদীদের অভিমত অনুযায়ী আধুনিকীকরণ হল একটি প্রক্রিয়া। আধুনিককীকরণের প্রক্রিয়া সহযোগিতার পরিধিকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনের বৃহত্তর ক্ষেত্রে প্রসারিত করে। মানুষ যুক্তিবাদী, তাই আন্তর্জাতিক বিষয়াদিতে মানুষ তার যুক্তিবাদিতাকে প্রয়োগ করলে পরিণামে বৃহত্তর সহযোগিতা সুনিশ্চিত হবে। প্রগতি বলতে উন্নততর জীবন, অন্তত অধিকাংশের জন্য উন্নতর জীবনকে বোঝায়। আধুনিকীকরণের প্রক্রিয়ার ধারায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অভাবনীয় বিকাশ ও বিস্তার ঘটে। উন্নততর উপায়-পদ্ধতির কল্যাণে দ্রব্যসামগ্রীর উৎপাদন পৃদ্ধি পায় এবং প্রকৃতির উপর নিয়ন্ত্রণ বৃদ্ধি পায়। এই প্রক্রিয়া অধিকতর শক্তিশালী হয় উদারনীতক বৌদ্ধিক বিপ্লবের মাধ্যমে। মানুষের যুক্তিবোধের ও ন্যায়পরায়ণতার উপর উদারনীতিক বৌদ্ধিক বিপ্লবের আস্থা ছিল অপরিসীম। এর ভিত্তিতেই উদারনীতিবাদীরা প্রগতির ব্যাপারে বিশ্বাসী। আধুনিক উদারনীতিক রাষ্ট্র বিশেষ ধরনের রাজনীতিক ও অর্থনীতিক ব্যবস্থা গড়ে তোলার পক্ষপাতী। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক সম্পর্কিত উদারনীতিক চিন্তাভাবনা সব সময় একই ধারায় প্রবাহিত হয়নি। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক সংক্রান্ত উদারনীতিবাদের এই তিনটি ভাগ হল:-
● (১) উদারনীতিক আন্তর্জাতিকতাবাদ,
● (২) উদারনীতিক আদর্শবাদ এবং
● (৩) উদারনীতিক প্রাতিষ্ঠানিকতাবাদ।
■ (১) উদারনীতিক আন্তর্জাতিকতাবাদ:- উদারনীতিক আন্তর্জাতিকতাবাদের মূল বক্তব্য হল যে, অগণতান্ত্রিক রাষ্ট্রনেতা এবং ক্ষমতার ভারসাম্য (balance of power) -এর মত অচল নীতিসমূহের দ্বারা প্রাকৃতিক বা স্বাভাবিক শৃঙ্খলা বা ব্যবস্থা বিঘ্নিত হয়েছে। এর প্রতিকারের পথ হিসাবে এই শ্রেণীর উদারনীতিবাদীরা বিশ্বাস করেন যে, বিশ্ববাসীর মধ্যে পারস্পরিক সংযোগ সম্পর্ক বৃদ্ধির মাধ্যমে অধিকতর শান্তিপূর্ণ আন্তর্জাতিক সম্পর্ক গড়ে তোলা সম্ভব। ব্যবসাবাণিজ্য ও পরিভ্রমণের মাধ্যমে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের অধিবাসীদের মধ্যে এ ধরনের সংযোগ সম্পর্কের সৃষ্টি, বিকাশ ও বিস্তার হতে পারে। কান্ট এবং বেন্থাম উভয়েই আন্তর্জাতিক সম্পর্কের নৃশংসতার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন।
■ (২) উদারনীতিক আদর্শবাদ:- উদারনীতিক আন্তর্জাতিকতাবাদ ও আদর্শবাদের মধ্যে অল্পবিস্তর সাদৃশ্য আছে। উভয় মতবাদই বিভিন্ন রাষ্ট্রের স্বার্থসমূহকে নির্বীষ করার জন্য বিশ্বজনমতের ক্ষমতার উপর গুরুত্ব আরোপের পক্ষপাতী। সীমাবদ্ধ সাদৃশ্য সত্ত্বেও আন্তর্জাতিক সম্পর্কের আলোচনায় আদর্শবাদ হল একটি স্বতন্ত্র মতবাদ। আদর্শবাদের স্বাতন্ত্রের বড় পরিচয় হল যে, এই মতবাদ একটি আন্তর্জাতিক শৃঙ্খলা গড়ে তোলার উপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করে। আদর্শবাদীদের অভিমত অনুযায়ী আন্তর্জাতিক সম্পর্ক সংক্রান্ত সমস্যার অন্যতম কারণ হল রাষ্ট্রসমূহের স্বাধীনতা; রাষ্ট্রের স্বাধীনতা এক্ষেত্রে সমস্যার সমাধান নয়। এ বিষয়ে আন্তর্জাতিকতাবাদীদের সঙ্গে আদর্শবাদীদের পার্থক্য বর্তমান।
আন্তর্জাতিক সমস্যার সমাধানের ব্যাপারে আদর্শবাদীরা দুটি বিষয়ের উপর জোর দেন। (ক) সুস্পষ্ট নীতিমানমূলক (normative) চিন্তাভাবনা আবশ্যক। এর উদ্দেশ্য হবে শান্তি স্থাপন এবং উন্নততর বিশ্বব্যবস্থা গড়ে তোলা। (ঘ) রাষ্ট্রসমূহ একটি আন্তর্জাতিক সংগঠনের অংশ হিসাবে অবস্থান করবে। আন্তর্জাতিক সংগঠনের নিয়মনীতির ভিত্তিতে রাষ্ট্রসমূহ পরিচালিত হবে। উদারনীতিক আন্তর্জাতিকতাবাদীদের মত আদর্শবাদীরাও যুদ্ধের অবসানের ব্যাপারে আগ্রহী ও উদ্যোগী ছিলেন।
■ (৩) উদারনীতিক-প্রাতিষ্ঠানিকতাবাদ:- বিংশ শতাব্দীর উদারনীতিকরা আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানসমূহের ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেন। রাষ্ট্র সম্পাদনে সক্ষম নয়, এ রকম বিবিধ কাজকর্ম এই সমস্ত প্রতিষ্ঠান সম্পাদন করবে। এই বিষয়টি ইউরোপের সংহতিতত্ত্ব এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বহুত্ববাদের ক্ষেত্রে অনুঘটক হিসাবে কাজ করে। বিংশ শতাব্দীর সত্তরের দশকের গোড়ার দিকে বহুত্ববাদ বাস্তববাদের বিরুদ্ধে তাৎপর্যপূর্ণ চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করে। উদারনীতিক প্রাতিষ্ঠানিকতাবাদ বহুজাতিক করপোরেশনসমূহ, বেসরকারী সংগঠনসমূহ এবং নতুন ধরনের মিথষ্ক্রিয়ার উপর গুরুত্ব আরোপ করে। নতুন ধরনের মিথস্ক্রিয়া বলতে পারস্পরিক নির্ভরশীলতা, সংহতি প্রভৃতিকে বোঝায়। যুদ্ধোত্তর কালে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক নিয়ে উদারনীতিবাদীদের চিন্তাভাবনা প্রধানত চারটি শ্রেণীতে বিভক্ত। উদারনীতিবাদের এই চারটি ধারা হল:-
● (১) সমাজতাত্ত্বিক উদারনীতিবাদ,
●( ২ ) পারস্পরিক নির্ভরশীলতার উদারনীতিবাদ,
● (৩) প্রাতিষ্ঠানিক উদানীতিবাদ এবং
● (৪) সাধারণতান্ত্রিক উদারনীতিবাদ।
■ (১) সমাজতাত্ত্বিক উদারনীতিবাদ:- সমাজতাত্ত্বিক উদারনীতিবাদের মূল বক্তব্য হল। আন্তর্জাতিক সম্পর্কের আলোচনা শুধুমাত্র বিভিন্ন জাতীয় সরকারের মধ্যেকার সম্পর্কের আলোচনার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। অন্যান্য সম্পর্কের আলোচনাও আন্তর্জাতিক সম্পর্কের আওতায় আসে। এ ক্ষেত্রে অন্যান্য সম্পর্ক বলতে সাধারণ মানুষের, গোষ্ঠীসমূহের এবং বিভিন্ন সমাজের সম্পর্কের কথা বলা যায়। সরকারসমূহের মধ্যে সম্পর্কের থেকে জনসাধারণের মধ্যে সম্পর্ক অনেক বেশী সহযোগিতামূলক। বিশ্বব্যাপী ব্যাপক সংখ্যায় আন্তর্জাতিক সংযোগ সম্পর্কের বন্ধন-জাল গড়ে তোলা সম্ভব হলে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে শান্তি অধিকতর সুদৃঢ় হবে।
■ (২) পারস্পরিক নির্ভরশীলতার উদারনীতিবাদ:- আধুনিকীকরণ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে রাষ্ট্রসমূহের মধ্যে পারস্পরিক নির্ভরশীলতার পরিধি ও মান-মাত্রা বৃদ্ধি পায়। জটিল পারস্পরিক নির্ভরশীলতার পরিপ্রেক্ষিতে বহুজাতিক ক্রিয়াকারী (transnational actors) -দের ভূমিকার গুরুত্ব বৃদ্ধি পায়; সামরিক শক্তির গুরুত্ব হ্রাস পায়; এবং নিরাপত্তার পরিবর্তে কল্যাণ সাধন রাষ্ট্রসমূহের প্রাথমিক লক্ষ্য হয়ে দাঁড়ায়। জটিল পারস্পরিক নির্ভরশীলতার মাধ্যমে অধিকতর সহযোগিতামূলক আন্তর্জাতিক সম্পর্কের এক দুনিয়া বিশেষ তাৎপর্য লাভ করে।
■ (৩) প্রাতিষ্ঠানিক উদারনীতিবাদঃ প্রাতিষ্ঠানিক উদারনীতিবাদী বক্তব্য অনুযায়ী আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানসমূহ বিভিন্ন রাষ্ট্রের মধ্যে সহযোগিতার সম্পর্ক গড়ে তুলতে সাহায্য করে। এইভাবে আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান রাষ্ট্রসমূহের মধ্যে অবিশ্বাসের আবহাওয়া দূর করতে সাহায্য করে। আবার রাষ্ট্রসমূহের পারস্পরিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভয়ভীতির আশঙ্কা-আতঙ্ক থাকে। এ ধরনের আশঙ্কা আতঙ্ক আন্তর্জাতিক নৈরাজ্যবাদের সঙ্গে সংযুক্ত সাবেকি সমস্যা হিসাবে পরিগণিত হয়। আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানসমূহ এ রকম আশঙ্কা-আতঙ্ক দূরীকরণের ব্যাপারেও সাহায্য করে। তবে রাষ্ট্রসমূহের মধ্যে সহযোগিতা সৃষ্টির ব্যাপারে আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানসমূহের সার্থক ভূমিকাকে বাস্তববাদীরা স্বীকার করেন না।
■ (৪) সাধারণতান্ত্রিক উদারনীতিবাদঃ সাধারণতান্ত্রিক উদারনীতিবাদীদের অভিমত অনুযায়ী গণতান্ত্রিক রাজনীতিক ব্যবস্থাসমূহ পরস্পরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে। কারণ হিসাবে কতগুলি বিষয়ের কথা বলা হয়। এই বিষয়গুলি হল শান্তিপূর্ণ পথে বিবাদ-বিসংবাদের মীমাংসার অভ্যন্তরীণ নির্ভরশীলতার সুবাদে তাদের পারস্পরিক সুযোগ-সুবিধার বন্ধন। এই সমস্ত কিছুর ভিত্তিতে। নীতি, তাদের সাধারণ নৈতিক মূল্যবোধ; এবং আর্থনীতিক সহযোগিতা ও পারস্পরিক।