ভারতের রাষ্ট্রপতির ভেটো ক্ষমতা এবং প্রকৃত ক্ষমতা | Veto Power and of Real Power of President of India

ভারতের রাষ্ট্রপতির ভেটো ক্ষমতা এবং প্রকৃত ক্ষমতা | Veto Power and of Real Power of President of India

❏ ভারতের রাষ্ট্রপতির ভেটো ক্ষমতা এবং প্রকৃত ক্ষমতা (Veto Power and of Real Power of President of India):-

■ ভারতের রাষ্ট্রপতির ‘ভেটো’ ক্ষমতা:-

উত্তর:: ভারতের রাষ্ট্রপতির ‘ভিটো’ প্রয়ে গের ক্ষমতাকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়;
(১) পূর্ণাঙ্গ ভিটো, (২) স্থগিতকারী ভিটো এবং (৩) পকেট ভিটো। অর্থবিল ও সংবিধান সংশোধনী বিলের কথা বাদ দিলে পার্লামেন্টে পাস হওয়া যে-কোন বিলে রাষ্ট্রপতি অসম্মতি জানাতে পারেন। রাষ্ট্রপতি অসম্মতি জানালে বিলটি বাতিল হয়ে যাবে। রাষ্ট্রপতির এই ক্ষমতাকে পূর্ণাঙ্গ ভেটো ক্ষমতা বলে। সংসদে পাস হওয়া কোন বিল অনুমোদনের জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে এলে তিনি সরাসরি সম্মতি না জানিয়ে বা অসম্মতি জ্ঞাপন না করে বিলটিকে পুনর্বিবেচনার জন্য সংসদে ফেরৎ পাঠাতে পারেন।

রাষ্ট্রপতির এই ভেটো ক্ষমতাকে স্থগিতকারী ভেটো বলে। পার্লামেন্টে কোন বিল পাস হওয়ার পর রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়। কতদিনের মধ্যে রাষ্ট্রপতিকে সম্মতি জানাতে হবে সংবিধানে সে বিষয়ে কোন উল্লেখ নেই। রাষ্ট্রপতি কোন বিলকে বাতিল না করে বা পার্লামেন্টের কাছে পুনর্বিবেচনার জন্য ফেরত না পাঠিয়ে অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য আটকে রাখতে পারেন। একেই রাষ্ট্রপতির ‘পকেট ভেটো’ বলে। ক্ষমতাসীন মন্ত্রিসভার স্থায়িত্বের ব্যাপারে অনিশ্চয়তা দেখা দিলে রাষ্ট্রপতি এই ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারেন।

■ ভারতের রাষ্ট্রপতির ‘প্রকৃত’ ক্ষমতার বিবরণ:-

উত্তর:: ভারতের রাষ্ট্রপতি হলেন নিয়মতান্ত্রিক বা নামসর্বস্ব শাসক। শাসনব্যবস্থার প্রকৃত কর্ণধার হল প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন মন্ত্রিপরিষদ। রাষ্ট্রপতি হলেন রাষ্ট্রের প্রধান, তিনি সরকারের প্রধান নন। ভারতের রাষ্ট্রপতি এই মন্ত্রিসভার পরামর্শমত কাজ করতে বাধ্য। সংবিধানের ৪২ তম (১৯৭৬) এবং ৪৪ তম (১৯৭৮) সংবিধান সংশোধনী আইন অনুসারে ভারতের রাষ্ট্রপতি সকল ক্ষেত্রে মন্ত্রিসভার পরামর্শ অনুসারে কাজ করতে বাধ্য।

তিনি লোকসভার আস্থাভাজন মন্ত্রিসভাকে উপেক্ষা করতে পারেন ন। করলে তিনি সংবিধান লঙ্ঘনের দায়ে পড়বেন এবং ইম্‌পিচমেন্টের মুখোমুখি হবেন। তাঁর ক্ষমতাসীন থাকাই অসম্ভব হয়ে পড়বে। বর্তমানে রাষ্ট্রপতি মন্ত্রিসভার পরামর্শের দ্বারা আবদ্ধ । তবে কেন্দ্রীয় প্রশাসনে বিশৃঙ্খলা বা অচলাবস্থা সৃষ্টি হলে, বা অবস্থাভেদে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ বা লোকসভা ভেঙে দেওয়ার মতো দু’একটি ক্ষেত্রে সুবিবেচনা প্রয়োগের সুযোগ এখনও রাষ্ট্রপতির আছে।

প্রকৃত ক্ষমতা না থাকলেও সংবিধানে রাষ্ট্রপতিকে প্রভূত ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে। শাসন-বিভাগীয় প্রধান ছাড়া রাষ্ট্রের প্রধান হিসাবে রাষ্ট্রপতি বিভিন্ন ক্ষমতা ভোগ করেন। সর্বোপরি রাষ্ট্রপতি হলেন সংবিধানের রক্ষাকর্তা । যে সকল পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য প্রয়োজনীয় বিধিব্যবস্থার উল্লেখ সংবিধানে নেই বা তেমন উপযুক্ত কোন নজির পাওয়া যায় না, সে রকম ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি ব্যক্তিগত বিচারবুদ্ধি অনুসারে রাজ করতে বাধ্য হন।