সংক্ষিপ্ত টীকা- আনন্দমঠ উপন্যাস, কপালকুণ্ডলা উপন্যাস | Anandamath Novel and Kapalkundala Novel

Hello Students,


Wellcome to edu.bengaliportal.com চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতির সেরা ঠিকানা,  edu.bengaliportal.com আজ নিয়ে এসেছি Anandamath Novel and Kapalkundala novel. প্রতিবছর বিভিন্ন পরীক্ষার যেমন  CTET | WBTET | WBCS । MPTET | ATET| UPTET | Rajasthan PTET | TNTET | Karnataka TET | RTET | HTET| PSTET। BANK EXAM। ইত্যাদি পরীক্ষার বিভিন্ন প্রস্তুতি পত্র আপনাদের বিনামূল্যে দিয়ে এসেছি। তাই Ajjkal.com আজ আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছে গুপ্ত ও গুপ্তোত্তর যুগের অর্থনৈতিক জীবন | Economic Life of the Gupta and Post-Gupta Periods

Ajjkal

আনন্দমঠ উপন্যাস, কপালকুণ্ডলা উপন্যাস | Anandamath Novel and Kapalkundala Novel

■ আনন্দমঠ উপন্যাস:-

উত্তর:: ‘আনন্দমঠ’ উপন্যাস বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের লেখা ঐতিহাসিক উপন্যাস। ১৮৮৪ খ্রীষ্টাব্দে এই উপন্যাস প্রকাশিত হয়। এই উপন্যাসে উত্তরবঙ্গের সন্ন্যাসীবিদ্রোহের পটভূমিকায় বাঙালীর দেশাত্মবোধের উদ্বোধন ঘটিয়েছেন। এই উপন্যাসের মধ্যে ‘বন্দেমাতরম্’ সঙ্গীত ভারতবাসীর জাতীয়তাবোধের প্রথম মন্ত্র। এই উপন্যাসের বিশিষ্ট চরিত্র হল : সত্যানন্দ, মহেন্দ্র, জীবানন্দ, শান্তি, কল্যাণী প্রমুখ। ‘আনন্দমঠ’ রচিত হয়েছে উত্তরবঙ্গের সন্ন্যাসী বিদ্রোহকে ছিয়াত্তরের মন্বন্তরের পটভূমিকায় স্থাপন করে। এই গ্রন্থ এককালে এদেশের স্বদেশপ্রেমিদের কাছে গীতাতুল্য মর্যাদা লাভ করেছিল। এই গ্রন্থের জন্যই রচিত হয়েছিল ‘বন্দেমাতরম্’ মহাসংগীত।

“স্বাদেশিকতা, আত্মত্যাগ ও আদর্শবাদের দিক থেকে এ উপন্যাস একটি ক্রান্তিকারী পথনির্দেশক হলেও উপন্যাসের কলালক্ষণ বিচারে এর মধ্যে অনেক ত্রুটি লক্ষ্য করা যাবে। এর কাহিনীগ্রন্থন সর্বদা সংযত হতে পারেনি, চরিত্রের দিক থেকেও একমাত্র শান্তি ও ভবানন্দ ভিন্ন অন্য কোন চরিত্র সুপরিস্ফুট হতে পারেনি।” ‘আনন্দমঠ’ উপন্যাসে রাত্রির রহস্যময়তায় ভিন্ন রকম এক পরিবেশ বর্ণিত— “একে এই বিস্তৃত অতিনিবিড় অন্ধতমোময় অরণ্য, তাহাতে রাত্রিকাল। রাত্রি দ্বিতীয় প্রহর। রাত্রি অতিশয় অন্ধকার; কাননের বাহিরেও অন্ধকার; কিছু দেখা যায় না। কাননের ভিতরে তমোরাশি ভূগর্ভস্থ অন্ধকারের ন্যায়। পশুপক্ষী একেবারে নিস্তব্ধ। কত লক্ষ লক্ষ কোটি কোটি পশু পক্ষী, কীট, পতঙ্গ সেই অরণ্য মধ্যে বাস করে। কেহ কোন শব্দ করিতেছে না। বরং সে অন্ধকার অনুভব করা যায়— শব্দময়ী পৃথিবীর সে নিস্তব্ধ ভাব অনুভব করা যাইতে পারে না। সেই অন্তশূন্য অরণ্যমধ্যে, সেই সূচীভেদ্য অন্ধকারময় নিশীথে, সেই অননুভবনীয় নিস্তব্ধতা মধ্যে শব্দ হইল, “আমার মনস্কাম কি সিদ্ধ হইবে না?”

■ কপালকুণ্ডলা উপন্যাস:-

উত্তর:: ‘কপালকুণ্ডলা’ বঙ্কিমচন্দ্রের লেখা বিখ্যাত ঐতিহাসিক উপন্যাস। ১৮৬৬ খ্রীষ্টাব্দে এটি প্রকাশিত হয়। সমাজ থেকে দূরে অরণ্যের মধ্যে কাপালিকের আশ্রমে পালিতা নারী সমাজে এলে তার কি পরিণতি হয়, তা এই উপন্যাসে বর্ণিত। কপালকুণ্ডলা, নবকুমার, মতিবিবি, কাপালিক প্রমুখ এই উপন্যাসের বিশিষ্ট চরিত্র। কপালকুণ্ডলা উপন্যাসে বঙ্কিমচন্দ্রের পরিণত প্রতিভার পরিচয় প্রকাশিত হয়েছে। নির্জন এক সমুদ্রতীরে একমাত্র কাপালিক সঙ্গীর সঙ্গে ধর্মীয় পরিমণ্ডলে সমাজের বাইরে পালিতা কিশোরী বিবাহের পর গার্হস্থ্যধর্মের সঙ্গে সমাজের কতখানি সামঞ্জস্য বিধান করতে পারে, তার উত্তরদানের জন্য এ উপন্যাস লেখা হয়েছে। এখানে কপালকুণ্ডলা, নবকুমার, মতিবিবি, কাপালিক — প্রতিটি চরিত্রই সুগ্রথিত ও মনস্তত্ত্বসম্মত। গঠনকৌশল, চরিত্রচিত্রণ, সংলাপ, মনস্তত্ত্ববিশ্লেষণ প্রভৃতি সকল দিক দিয়েই কপালকুণ্ডলা রসোত্তীর্ণ উপন্যাস ।

‘কপালকুন্ডলা’ উপন্যাসে নবকুমার ও কপালকুন্ডলার প্রথম সাক্ষাৎকার এক অসাধারণ কাব্যময়তায় বর্ণিত “নবকুমার গাত্রোখান করিয়া সমুদ্রের দিকে পশ্চাৎ ফিরিলেন। ফিরিবামাত্র দেখিলেন, অপূর্ব্ব মূর্ত্তি। সেই গম্ভীরনাদী বারিধিতীরে, সৈকতভূমে অস্পষ্ট সন্ধ্যালোকে দাঁড়াইয়া অপূৰ্ব্ব রমণীমূর্ত্তি। কেশভার অবেণীসম্বন্ধ, সংসর্পিত, রাশীকৃত অপুলকলম্বিত কেশভার; তদগ্নে দেহরত্ন, যেন চিত্রপটের উপর চিত্র দেখা যাইতেছে। নবকুমার এইরূপ দুর্গমমধ্যে দৈবীমূৰ্ত্তি দেখিয়া নিসপন্দশরীর হইয়া দাঁড়াইলেন। তাহার বাকশক্তি রহিত হইল — স্তব্ধ হইয়া চাহিয়া কহিলেন।

রমণীও স্পন্দনহীন, অনিমেষলোচনে বিশাল চক্ষুর স্থির দৃষ্টি নবকুমারের মুখে ন্যস্ত করিয়া রাখিলেন। … অনন্তর সমুদ্রের জনহীন তীরে, এইরূপে বহুক্ষণ – দুইজনে চাহিয়া রহিলেন। অনেকক্ষণ পর তরুণীর কন্ঠস্বর শুনা গেল। তিনি অতি মৃদুস্বরে কহিলেন, “পথিক, তুমি পথ হারাইয়াছ ?” কপালকুন্ডলার সঙ্গে নবকুমারের হৃদয়বৃত্তির অবসানের বর্ণনায় বঙ্কিমচন্দ্র অসামান্য শিল্পজ্ঞানের পরিচয় দিয়েছেন— “কপালকুন্ডলা কহিলেন, যাহা জিজ্ঞাসা করিলে বলিব। আজি যাহাকে দেখিয়াছ, সে পদ্মাবতী। আমি অবিশ্বাসিনী নহি। একথা স্বরূপ বলিলাম। কিন্তু আর গৃহে যাইব না। ভবানীর চরণে দেহ বিসর্জন করিতে আসিয়াছি – নিশ্চিত তাহা করিব। তুমি গৃহে যাও। আমি মরিব আমার জন্য রোদন করিও না।”

Note: পোস্ট টি অবশ্যই আপনার বন্ধুদের সাথে ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ এ শেয়ার করুন।