মোগল সাম্রাজ্যের প্রসারে শাহজাহানের ভূমিকা | Shah Jahan’s Role in the Expansion of Mughal Empire




Hello Students,


Wellcome to edu.bengaliportal.com চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতির সেরা ঠিকানা,  edu.bengaliportal.com আজ আমরা নিয়ে এসেছি Shah Jahan’s Role in the Expansion of Mughal Empire. প্রতিবছর বিভিন্ন পরীক্ষার যেমন  CTET | WBTET | WBCS । MPTET | ATET| UPTET | Rajasthan PTET | TNTET | Karnataka TET | RTET | HTET| PSTET। BANK EXAM। ইত্যাদি পরীক্ষার বিভিন্ন প্রস্তুতি পত্র আপনাদের বিনামূল্যে দিয়ে এসেছি। তাই Ajjkal.com আজ আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছে মোগল সাম্রাজ্যের প্রসারে শাহজাহানের ভূমিকা | Shah Jahan’s Role in the Expansion of Mughal Empire

Ajjkal



মোগল সাম্রাজ্যের প্রসারে শাহজাহানের ভূমিকা | Shah Jahan’s Role in the Expansion of Mughal Empire

শাহজাহান (১৬২৭-৫৮ খ্রিঃ)

জাহাঙ্গীরের মৃত্যুর পর তাঁর তৃতীয় পুত্র খুরম্ শাহজাহান উপাধি নিয়ে সংহাসনে বসেন। (১৬২৭ খ্রিঃ)। সিংহাসন লাভের কিছু দিনের মধ্যেই শাহজাহান বুন্দেলখণ্ড এবং দাক্ষিণাত্যের বিদ্রোহগুলি কঠোর হাতে দমন করেন। এই সময় বাংলায় অত্যাচারী পোর্তুগিজদের আধিপত্য হ্রাস করে তাদের হুগলি ও চট্টগ্রাম থেকে তাড়িয়ে দেন।



অল্পদিনের জন্য তিনি মধ্যএশিয়ার বলখ ও বদক্শান দখল করতে সমর্থ হন। জাহাঙ্গীরের আমলে দক্ষিণ ভারতের সমগ্র এলাকা মোগল সাম্রাজ্যভুক্ত হয়নি। কিন্তু শাহজাহান প্রথমেই আহম্মদনগর জয় করেন। এরপর বিজাপুর ও গোলকুণ্ডা মোগলদের বশ্যতা স্বীকার করে নেয়। শাহজাহান তাঁর তৃতীয় পুত্র ঔরঙ্গজেবকে দাক্ষিণাত্যের শাসনকর্তা নিযুক্ত করেন।




শাহজাহান শাহজাহানের দীর্ঘ ত্রিশ বছরের রাজত্বকালে মোগল সাম্রাজ্যের রাজনৈতিক শান্তি স্থিতিশীলতা বজায় থাকা ছাড়াও বিভিন্ন দিকে ব্যাপক সমৃদ্ধি লাভ করে। এ সময় একদিকে যেমন কোনো বড়ো বিদ্রোহ দেখা দেয় নি, অন্যদিকে কোনো বৈদেশিক আক্রমণও মোগল সাম্রাজ্যের নিরাপত্তাকে বিঘ্নিত করেনি।

ইটালীয় পর্যটক ‘মানুচি শাহজাহানের রাজত্বকালের রাজনৈতিক পরিস্থিতির অকুণ্ঠ প্রশংসা করেছেন। সাম্রাজ্যের নিরাপত্তা ও স্থায়িত্ব বজায় থাকার ফলে কৃষি, ব্যাবসাবাণিজ্য, সাহিত্য-সংস্কৃতি ও শিল্প স্থাপত্যের চরম উন্নতি ঘটে মোগল আমলের স্বর্ণযুগের সৃষ্টি হয়। সমকালীন দেশীয় ও বৈদেশিক ঐতিহাসিকরা শাহজাহানের শাসনকালের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন যার যথার্থতা খুঁজে পাওয়া যায় ব্রিটিশ ঐতিহাসিক স্মিথের এই মন্তব্যে, — শাহজাহানের রাজত্বকাল মোগল রাজবংশ এবং সাম্রাজ্যের তুঙ্গতা চিহ্নিত করে (Shahjahan’s reign marks the climax of Mughal dynasty and Empire).

শাহজাহানের সমালোচনা ও মূল্যায়ন : কোনো কোনো ঐতিহাসিক শাহজাহানের রাজত্বকালকে “মোগল সাম্রাজ্যের চরম বিকাশ” বলে বর্ণনা করলেও ইউরোপীয় পর্যটকদের বর্ণনা ও অন্যান্য তথ্য থেকে জানা যায় যে, শাহজাহানের ৩০ বছরের রাজত্বকালেই মুঘল সাম্রাজ্যের পতনের চিহ্নগুলি স্পষ্ট হয়ে উঠেছিল, কারণ :

প্রথমত, মধ্য এশিয়া অভিযানের মাধ্যমে শাহজাহান সাম্রাজ্য বিস্তারে বিশেষ সফল হননি। উপরন্তু খারাপ আবহাওয়া ও তুষারপাতের ফলে এই অভিযানে বহু মোগল সৈন্যের মৃত্যু হয়।

দ্বিতীয়ত, শাহজাহানের রাজত্বকালেই ইংরেজ, ওলন্দাজ, ফরাসি প্রভৃতি ইউরোপীয় বণিকেরা ভারতে তাদের কুঠি নির্মাণ বাড়িয়ে দেয়। এছাড়া তাঁর দুর্বলতার সুযোগে ভারতের রাজনীতিতে মারাঠাদের আবির্ভাব ঘটে।

তৃতীয়ত, শাহজাহানের আড়ম্বর ও জাঁকজমকপ্রিয়তা, যুদ্ধ বিগ্রহে বিপুল ব্যয় প্রভৃতির ফলে মোগল রাজকোষ প্রায় খালি হয়ে যায়, ফলে জনগণের দুর্দশা চরমে ওঠে। গুজরাটসহ সাম্রাজ্যের অন্যান্য স্থান ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের কবলে পড়ে।

চতুর্থত, শাহজাহানের ধর্মান্ধতা শিয়া মুসলমান এবং হিন্দুদের শত্রুতে পরিণত করে।

পঞ্চমত, শাহজাহানের রাজত্বকালে কৃষক, শিল্পী ও সাধারণ মানুষের ওপর প্রাদেশিক শাসন কর্তাদের অত্যাচার ও উৎপীড়ন চরমে ওঠে। শাহজাহানের রাজত্বকালের সামগ্রিক মূল্যায়ন প্রসঙ্গে ঐতিহাসিকদের বাদানুবাদের মধ্যে থেকে এই সিদ্ধান্তে আসা যায় যে, শাহজাহানের রাজত্বকাল ছিল গৌরব ও অগৌরবের এক আশ্চর্য মিশ্রণ। তাই , তাঁর রাজত্বকালেই একদিকে যেমন মোগল সাম্রাজ্যের গৌরব চরম শিখরে ওঠে, অন্যদিকে তাঁর সময় থেকেই মোগল সাম্রাজ্যের পতনের সূচনা হয়।

শাহজাহানের রাজত্বকালে মোগল সাম্রাজ্যের গৌরব চরম শিখরে উঠলেও তাঁর শেষ জীবন ছিল অত্যন্ত দুঃখময়। সম্রাটের জীবিত অবস্থাতেই তাঁর চার পুত্র দারা, সুজা, ঔরঙ্গজেব ও মুরাদ সিংহাসনের জন্য নিজেদের মধ্যে সংগ্রামে লিপ্ত হন। শেষপর্যন্ত ঔরঙ্গজেব অন্য সব ভাইদের পরাজিত করে সিংহাসন দখল করেন। বৃদ্ধ পিতা শাহজাহানকে আগ্রাদুর্গে বন্দি করে রেখে ঔরঙ্গজেব আলমগীর উপাধি ধারণ করে সিংহাসনে বসেন।




Note: পোস্ট টি অবশ্যই আপনার বন্ধুদের সাথে ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ এ শেয়ার করুন।