মনসবদারি প্রথা ও জায়গিরদারি প্রথা | Mansabdari System and Jagirdari System




Hello Students,


Wellcome to edu.bengaliportal.com চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতির সেরা ঠিকানা,  edu.bengaliportal.com আজ আমরা নিয়ে এসেছি Mansabdari System and Jagirdari System. প্রতিবছর বিভিন্ন পরীক্ষার যেমন  CTET | WBTET | WBCS । MPTET | ATET| UPTET | Rajasthan PTET | TNTET | Karnataka TET | RTET | HTET| PSTET। BANK EXAM। ইত্যাদি পরীক্ষার বিভিন্ন প্রস্তুতি পত্র আপনাদের বিনামূল্যে দিয়ে এসেছি। তাই Ajjkal.com আজ আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছে মনসবদারি প্রথা ও জায়গিরদারি প্রথা | Mansabdari System and Jagirdari System

Ajjkal



মনসবদারি প্রথা ও জায়গিরদারি প্রথা | Mansabdari System and Jagirdari System

মনসবদারি প্রথা : মোগল আমলের এককেন্দ্রীভূত শাসন ক্ষমতার অন্যতম মাধ্যম ছিল মনসবদারি ও জায়গিরদারি প্রথা। শাসনব্যবস্থাকে সুদৃঢ় করার উদ্দেশ্যে আকবরের আমল থেকে প্রভাবশালী অভিজাতদের বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে সংহতি আনার জন্য মনসবদারি প্রথার প্রবর্তন করা হয়। মনসবদারি কথার অর্থ পদ মর্যাদা। মনসবদাররা সাম্রাজ্যের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ও অসামরিক বিষয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থাকতেন। মনসবদারি প্রথার প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলি ছিল এই যে :



(১) প্রতিটি মনসবদারকে নির্দিষ্ট সংখ্যক সেনা রাখতে হত।

(২) মনসবদাররা যোগ্যতার ভিত্তিতে নিযুক্ত হতেন এবং এই প্রথা জমিদারি প্রথার মতো বংশানুক্রমিক ছিল না।

(৩) মনসবদারদের এক স্থান থেকে অন্যস্থানে বদলি করার রীতি প্রচলিত ছিল।

(৪) মনসবদারদের নিয়োগ, পদোন্নতি ও পদচ্যুতি — সমস্তই ছিল সম্রাটের ইচ্ছাধীন।




(৫) মনসবদারদের বেতন ও পদমর্যাদা তাঁদের অধীনস্থ সেনাবাহিনীর সংখ্যার উপর নির্ভর করতো। মনসবদারদের পদমর্যাদার ৩৩ টি স্তর ছিল এবং ক্রমানুসারে এঁরা ১০ থেকে ১০,০০০ পর্যন্ত সৈন্য রাখার অধিকার পেতেন। মসবদারি প্রথা মোগল সাম্রাজ্যের স্থায়িত্বকে দীর্ঘায়িত করেছিল এবং মোগল সম্রাজ্যের শক্তি ও সংহতি এই প্রথার উপর নির্ভরশীল ছিল। এই বক্তব্য স্পষ্ট হয়ে ওঠে অধ্যাপক সতীশচন্দ্রের এই মন্তব্যে, “দেশে সার্ধশত বর্ষাধিক অভাবনীয় ঐক্য ও সুশাসন স্থাপনের কাজে এটি বিশেষভাবে সহায়ক হয়েছিল সন্দেহ নাই।”

জায়গিরদারি প্রথা : মোগল আমলে যেসব মনসবদারকে নগদ টাকায় বেতনের পরিবর্তে নির্দিষ্ট পরিমাণ জর্মি বা মহল দেওয়া হত, তাঁরা জায়গিরদার নামে পরিচিত ছিলেন। বেতনের পরিবর্তে নির্ধারিত রাজত্ব সংগ্রহের মধ্যেই জায়গিরদারদের অধিকার সীমিত থাকত। জায়গিরদার হিসাবে রাজকীয় আইন-কানুন উপেক্ষা করার কোনো অধিকার জায়গিরদারকে দেওয়া হত না। এমনকি জায়গিরদারদের নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য সংবাদনবীশ (সংওয়ার্নিগির) নামে একটি দপ্তর ছিল। এই দপ্তরের কর্মচারীরা জায়গিরদারের কার্যকলাপের বিবরণ নিয়মিতভাবে সম্রাট তথা কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে পেশ করতেন। এইভাবে জায়গিরদারদের ওপর সম্রাট তথা কেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখা হত।

জায়গিরদারি সংকট : অভিজাতদের স্বার্থপরতা ও গোষ্ঠী গঠনের মূলে ছিল জায়গিরের স্বল্পতা। মূল্যবান ও অতিরিক্ত জায়গির লাভের আকাঙ্ক্ষা মোগল অভিজাতদের মধ্যে গোষ্ঠীগত প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও সংঘর্ষের সৃষ্টি করে। শাহজাহানের সময় থেকে জায়গির সংকটের সূচনা হয়েছিল এবং ঔরঙ্গজেবের আমলে তা গভীর হয়ে দেখা দেয়। এখানে মনে রাখা দরকার যে, অভিজাতরা ছিলেন রাজকর্মচারী এবং মনসবদাররাও এই শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। এঁরা সকলেই নগদেও জায়গিরে এই দুভাগে বেতন পেতেন। জায়গির থেকে তাঁরা বেতন হিসাবে রাজস্ব সংগ্রহ করতেন এবং নির্দিষ্ট পরিমাণ রাজস্ব সরকারকে দিয়ে অবশিষ্ট রাজস্ব তাঁরা ভোগ করতেন। উৎকৃষ্ট মানের জায়গির পাওয়া গেলে তা থেকে বেশি পরিমাণে অর্থ সংগ্রহ করার সম্ভাবনা থাকা ছাড়াও জায়গির লাভের সঙ্গে অভিজাতদের সামাজিক মানমর্যাদার প্রশ্নও জড়িয়ে থাকত।

ঔরঙ্গজেবের আমল থেকে রাজকর্মচারী তথা অভিজাতদের সংখ্যা ও তাঁদের বিলাসব্যসনজনিত খরচ – খরচা বেড়েই চলতে থাকে। কিন্তু জায়গিরদারের অনুপাতে জায়গিরের পরিমাণ ও তা থেকে আয়ের পরিমাণও জায়গিরদারদের মধ্যে ভাগ হতে হতে ক্রমশ কমে যায়। এরফলে অতিরিক্ত জায়গির পাওয়ার জন্য একদিকে রাজপুরুষদের মধ্যে পারস্পরিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা শুরু হয় এবং অন্যদিকে জায়গিরের স্বল্পতার জন্য অভিজাতরা কৃষকদের উপর অত্যাচার ও উৎপীড়ন শুরু করেন। অনেক সময় তাঁরা খালিসা বা সরকারের খাস জমি অন্যায়ভাবে দখল করে রাখতেন কিন্তু প্রায় সব সম্রাটরাই এই ব্যাপারে নিশ্চুপ থাকতেন। ফলে রাষ্ট্রের আয়ের পথ ক্রমেই সঙ্কুচিত হয়ে পড়ে এবং সাম্রাজ্যের বিপর্যয়ের পথ প্রশস্ত হয়।




Note: পোস্ট টি অবশ্যই আপনার বন্ধুদের সাথে ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ এ শেয়ার করুন।