স্বাধীন ভারতের জোট নিরপেক্ষতার নীতি | Independent India’s Policy of Non-Alignment




Hello Students,


Wellcome to edu.bengaliportal.com চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতির সেরা ঠিকানা,  edu.bengaliportal.com আজ আমরা নিয়ে এসেছি Independent India’s Policy of Non-Alignment. প্রতিবছর বিভিন্ন পরীক্ষার যেমন  CTET | WBTET | WBCS । MPTET | ATET| UPTET | Rajasthan PTET | TNTET | Karnataka TET | RTET | HTET| PSTET। BANK EXAM। ইত্যাদি পরীক্ষার বিভিন্ন প্রস্তুতি পত্র আপনাদের বিনামূল্যে দিয়ে এসেছি। তাই Ajjkal.com আজ আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছে স্বাধীন ভারতের জোট নিরপেক্ষতার নীতি | Independent India’s Policy of Non-Alignment

Ajjkal



স্বাধীন ভারতের জোট নিরপেক্ষতার নীতি | Independent India’s Policy of Non-Alignment

■ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তী সময়ে মার্কিনযুক্তরাষ্ট্রও সোভিয়েট রাশিয়ার নেতৃত্বে গোটা বিশ্ব দুটি বিবাদমান ‘জোট’বা শিবিরে বিভক্ত হয়ে পড়ায় ঠাণ্ডা যুদ্ধের সূচনা হয়। কিন্তু স্বাধীনতার পর ভারত এই দুইটি বিবাদমান জোটের কোনোটিতেই যোগ না দিয়ে সব দেশের সঙ্গেই বন্ধুত্ব বা সমদূরত্ব বজায় রেখে সম্পূর্ণ স্বাধীন ও নিরপেক্ষভাবে বৈদেশিক সম্পর্ক পরিচালনার যে পররাষ্ট্র নীতি গ্রহণ করে তাকে জোট নিরপেক্ষ নীতি বলা হয়।



■ জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনে ভারতের ভূমিকা :

(১) ভারত স্বাধীনতা লাভ করার আগেই অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান জওহরলাল নেহেরুর উদ্যোগে ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের মার্চে এশীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এই সম্মেলনে ঔপনিবেশিক শাসনের অবসানের স্বপক্ষে এশিয়ার দেশগুলির পক্ষ থেকে বলিষ্ঠ অঙ্গীকার ব্যক্ত করা হয় এবং শান্তিরক্ষার জন্য পারস্পরিক সহযোগিতার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

(২) ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দে দিল্লিতে অনুষ্ঠিত আর একটি সম্মেলনে এশিয়ার সদ্য স্বাধীনতাপ্রাপ্ত দেশগুলিকে নিয়ে সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের ভেতর থেকেই একটি মঞ্চ গঠনের প্রস্তাব নেওয়া হয়।

(৩) এরপর জওহরলাল নেহেরু এশিয়া ও আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের সঙ্গে মিলিতভাবে একটি জোট-নিরপেক্ষ কূটনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে অগ্রসর হন।

(৪) জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনের লক্ষ্যে অবিচল থেকে ১৯৫১ সালে জাতীয় কংগ্রেসের বার্ষিক অধিবেশনে জওহরলাল নেহেরু পররাষ্ট্র ক্ষেত্রে জোটবদ্ধ রাজনীতি থেকে ভারতকে দূরে রাখার নীতি ঘোষণা করেন।

(৫) ১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দের এপ্রিলে চিনের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী চৌ-এন-লাই -এর ভারত ভ্রমণকে কেন্দ্র করে ভারত ও চিনের মধ্যে সম্পর্কের উন্নতি হয়। ১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দের ২৯ শে এপ্রিল ভারত ও চিন পারস্পরিক সম্পর্ক নির্ধারণের জন্য পাঁচটি সূত্র নির্ধারণ করে, যেমন : (i) প্রত্যেকের আঞ্চলিক অখণ্ডতা এবং সার্বভৌমত্বের প্রতি মর্যাদাবোধ, (ii) পরস্পরের বিরুদ্ধে আগ্রাসন থেকে বিরত থাকা, (iii) অন্যের অভ্যন্তরীণ ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ থেকে বিরত থাকা, (iv) সমমর্যাদা এবং (v) শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান। চিন ও ভারত উভয়ের রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থার পার্থক্য থাকা সত্ত্বেও সহযোগিতা ও সম্প্রীতির নিদর্শন স্থাপন করেছিল। ১৯৫৪ সালে চিনের প্রধান মন্ত্রী চৌ-এন-লাই এবং ভারতের প্রধান মন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু তাঁদের যৌথ বিবৃতিতে জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনকে সমর্থন জানান।




(৬) ১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দের ২২ শে ডিসেম্বর জওহরলাল নেহেরু ও যুগোশ্লাভিয়ার রাষ্ট্রপ্রধান মার্শাল টিটো দিল্লিতে এক যৌথ বিবৃতিতে জোট-নিরপেক্ষ নীতির প্রতি আস্থা ব্যক্ত করেন।

(৭) ১৯৫৫ খ্রিস্টাব্দের এপ্রিল মাসে এশিয়ার চোদ্দটি রাষ্ট্র নতুন দিল্লিতে মিলিত হয়ে পারস্পরিক ঐক্য শক্তিশালী করা, সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসন প্রতিহত করা এবং ঔপনিবেশিক শাসন ও বর্ণবৈষম্যের বিরুদ্ধে সংগ্রামে সংহতি জ্ঞাপনের অঙ্গীকার করে।

(৮) এরপর ১৯৫৫ খ্রিস্টাব্দের ১৮-২৬শে এপ্রিল ইন্দোনেশিয়ার বান্দুং -এ এশিয়া ও আফ্রিকার ২৬ টি দেশ মিলিত হয়। ভারত ঐ সম্মেলনের অন্যতম প্রধান উদ্যোক্তা ছিল এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু ছিলেন এই সম্মেলনের মধ্যমণি। বান্দুং সম্মেলনের গৃহীত সিদ্ধান্ত বিশ্বে আনুষ্ঠানিকভাবে জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনের সূচনা করে।

(৯) ১৯৬১ সালের জুন মাসে মিশরের কায়রোয় জোট নিরপেক্ষ দেশগুলোর সম্মেলনে এশিয়া, ইউরোপ ও লাতিন আমেরিকার ২১ টি রাষ্ট্র যোগদান করে।

(১০) কায়রো সম্মেলনের সিদ্ধান্ত অনুসারে ১৯৬১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে যুগোশ্লাভিয়ার রাজধানী বেলগ্রেডে অনুষ্ঠিত জোট নিরপেক্ষ দেশগুলির প্রথম শীর্ষ সম্মেলনে বিশ্বের ২৫ টি দেশ যোগদান করে।

(১১) জোট নিরপেক্ষ দেশগুলোর বেলগ্রেড শীর্ষ সম্মেলনের পর ১৯৬৪ সালে কায়রো (২৫ টি দেশ), ১৯৭০ সালে লুসাকা (৪৬ টি দেশ), ১৯৭৩ সালে আলজিয়ার্স (৫৪ টি দেশ), ১৯৭৬ সালে কলম্বো (৮৪ টি দেশ), ১৯৭৯ সালের হাভানা (৮৯ টি দেশ), ১৯৮৩ সালে দিল্লি (৯৭ টি দেশ), ১৯৮৬ সালে হারারে (১০১ টি দেশ), ১৯৮৯ সালে বেলগ্রেড (১০২ টি দেশ) এবং ১৯৯২ সালে জাকার্তায় (১০৮ টি দেশ) জোট নিরপেক্ষ দেশগুলির শীর্ষ সম্মেলন বসে।

■ উপরের আলোচনা থেকে দেখতে পাওয়া যাচ্ছে যে, ১৯৬৪ সালে জওহরলাল নেহেরুর মৃত্যুর পর জোট নিরপেক্ষ আন্দোলন কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়লেও এই আন্দোলনকে সমর্থনকারী দেশের সংখ্যা ক্রমশ বাড়তে থাকে।




Note: পোস্ট টি অবশ্যই আপনার বন্ধুদের সাথে ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ এ শেয়ার করুন।