মহাত্মা গান্ধীর জীবনী | Mahatma Gandhi Biography in Bengali

মহাত্মা গান্ধীর জীবনী | Mahatma Gandhi Biography in Bengali

মহাত্মা গান্ধী ছিলেন একজন অন্যতম ভারতীয় রাজনীতিবিদ, ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের অগ্রগামী ব্যক্তিবর্গের মধ্যে একজন অন্যতম প্রভাবশালী আধ্যাত্মিক নেতা। এছাড়াও তিনি ছিলেন সত্যাগ্রহ আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা। যার মাধ্যমে স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে জনসাধারণ তাদের অভিমত প্রকাশ করেছিল। এই আন্দোলন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল অহিংস মতবাদ বা দর্শনের উপর ভিত্তি করে এবং এটি ছিল ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম চালিকা শক্তি, সারা বিশ্বে মানুষের স্বাধীনতা এবং অধিকার পাওয়ার আন্দোলনের অন্যতম অনুপ্রেরণা ছিলেন তিনি।




নাম ➤ মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী বা মহাত্মা গান্ধী

জন্ম ➤ ২ অক্টোবর ১৮৬৯

জন্মস্থান ➤ পোরবন্দর, গুজরাট, ব্রিটিশ ভারত

পিতা ➤ করমচাঁদ উত্তমচাঁদ গান্ধী

মাতা ➤ পুতলিবাই গান্ধী

কর্মজীবন ➤ ১৮৯৩–১৯৪৮

মৃত্যু ➤ ৩০ জানুয়ারি ১৯৪৮ (30th January 1948)




মহাত্মা গান্ধীর সংক্ষিপ্ত পরিচিতি

মহাত্মা গান্ধী ছিলেন একজন অন্যতম ভারতীয় রাজনীতিবিদ, ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের অগ্রগামী ব্যক্তিদের একজন এবং প্রভাবশালী আধ্যাত্মিক নেতা। মহাত্মা গান্ধী ছিলেন সত্যাগ্রহ আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা। এর মাধ্যমে স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে জনসাধারণ তাদের অভিমত প্রকাশ করে। এ আন্দোলন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল অহিংস মতবাদ বা দর্শনের উপর ভিত্তি করে এবং এটি ছিল ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম চালিকা শক্তি, সারা বিশ্বে মানুষের স্বাধীনতা এবং অধিকার পাওয়ার আন্দোলনের অন্যতম অনুপ্রেরণা।

মহাত্মা গান্ধীর জন্মপরিচয়

 ভারতের কাথিয়াবাড় প্রদেশের পােরবন্দর নামক স্থানে একপ্রাচীন বেনিয়া পরিবারে ১৮৬৯ খ্রিঃ ২ রা অক্টোবর মােহনদাস করমচাঁদ গান্ধী জন্মগ্রহণ করেছিলেন।

মােহনদাসের পূর্বপুরুষগণ বংশানুক্রমে কাথিয়াবাড় প্রদেশের পােরবন্দর নামক স্থানের দেওয়ান ছিলেন।

মহাত্মা গান্ধীর পিতার পরিচয়

গান্ধীজির বাবার নাম করমচাঁদ। মহাত্মা গান্ধীর ডাকনাম ছিল কাবা গান্ধী। গুজরাটের সামাজিক নিয়ম হল, ছেলের নামকরণের সময় বাবার নামও তার নামের সঙ্গে জুড়ে দিতে হয়। 

এই নিয়ম অনুসারেই করমচাঁদের ছেলে মােহনদাসের নামের সঙ্গে তার বাবার নাম জুড়ে নাম রাখা হয়েছিল মােহনদাস করমচাঁদ গান্ধী। গান্ধীজি ছিলেন তার বাবার সর্বকনিষ্ঠ পুত্র।

মহাত্মা গান্ধীর মাতার পরিচয়

গান্ধীজির মাতার নাম পুত্তলীবাঈ। তিনি ছিলেন পরম নিষ্ঠাবতী একজন মহিলা। পুজো আর সূর্য দর্শন না করে তিনি জল গ্রহণ করতেন না। 

অরও পড়ুনঃ- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুররের জীবনী

মহাত্মা গান্ধীর শৈশবকাল

বাল্য ও শৈশবের শিক্ষা কাথিয়াবাড়ে সমাপ্ত করেন মােহনদাস। এরপর বিলাতে গিয়ে ব্যারিস্টারি অধ্যয়ন করেন। পরে দেশে ফিরে এসে বােম্বাই হাইকোর্টে আইনব্যবসা আরম্ভ করেছিলেন। 




শৈশবকাল থেকেই মহাত্মা গান্ধী মিথ্যা কথা বলা, চুরি করা ইত্যাদিকে তিনি পাপকর্ম বলে মনে করতেন। এই কারণেই মহাত্মা গান্ধী সত্যাশ্রয়ী হয়ে উঠেছিলেন।

মহাত্মা গান্ধীর বিবাহ জীবন


 মাত্র তেরাে বছর পার হতেই মহাত্মা গান্ধীকে বিয়ে দেওয়া হয় কস্তুরি বাঈ নামে এক সমবয়সী কিশােরীর সঙ্গে। ষোলাে বছর বয়সে মহাত্মা গান্ধী প্রথম সন্তানের পিতা হন সেইসাথে তিনি নিজ পিতাকে হারান।

মহাত্মা গান্ধীর শিক্ষাজীবন

 ১৮ বছর বয়সে তিনি ম্যাট্রিক পাস করেন। উচ্চশিক্ষার জন্য বড়ভাই মহাত্মা গান্ধীকে বিলেতে পাঠাতে চাইলেন ব্যারিস্টারী পড়ার জন্য। তখনকার দিনে কুসংস্কারাচ্ছন্ন ভারতীয় হিন্দু সমাজে সমুদ্র পাড়ি দেওয়া ছিলাে ঘােরতর পাপের কাজ। এই জন্য রাজকোটের অনেক সমাজপতি বড়ভাইকে এবং তাদের পরিবারকে সমাজচ্যুত করার হুমকি দিলেন। কিন্তু গান্ধীজী নিজে ব্যারিস্টারী পড়ার জন্য ছিলেন খুবই আগ্রহী। তাই মা পুতলি বাঈ কিছুটা গররাজী হলেও ছেলের মঙ্গল প্রত্যাশায় তাকে বিলেতে যেতে অনুমতি দিলেন।

১৮৯১ সালে মহাত্মা গান্ধী ব্যারিস্টারী পাস করে দেশে ফিরে এলেন এসে শুনলেন মা মারা গেছেন। কিছুদিন পরে মহাত্মা গান্ধী আইন ব্যবসা শুরু করলেন। কিন্তু মহাত্মা গান্ধী কিছুটা লাজুক প্রকৃতির ছিলেন। প্রথম দিকে আইন – ব্যবসায়ে তেমন জুত করতে পারলেন না। 

মহাত্মা গান্ধীর মৃত্যু

১৯৪৮ খ্রিঃ ৩০ শে জানুয়ারী দিল্লিতে এক প্রার্থনা সভায় গান্ধীজি এক আততায়ীর হাতে নিহত হন। 

বিশ্বের শ্রেষ্ঠ নাট্যকার ও বিশ্ববিখ্যাত মনীষী জর্জ বার্নার্ড গান্ধীজীর এই মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডে জন্য শােক প্রকাশ করে মন্তব্য করেছিলেন — “খুব ভালাে মানুষ হওয়াটাও একটা বিপজ্জনক ব্যাপার।” 

গান্ধীজির জীবন দর্শন ও ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে গান্ধীজির উল্লেখযােগ্য অবদানের জন্য মহাত্মা গান্ধী জাতির জনক রূপে স্বীকৃতি লাভ করেছেন।